রংপুর বিভাগসারাদেশ

সৈয়দপুর নামী দামী ব্রান্ডের নকল মোড়কে ক্ষতিকর এনার্জি বাল্বে সয়লাব

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ বেশি আলো আর বিদ্যুৎ খরচও কম হওয়ায় সাধারণ বাল্বের পরিবর্তে লোকজন ঝুকছে এনার্জি বাল্বের দিকে। তবে সাধারণ বাল্ববের তুলনায় দাম বেশি হওয়ায় অনেকের ইচ্ছে থাকলেও কিনতে পারছেনা এনার্জি বাল্ব।
আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েছে নীলফামারীর সৈয়দপুরের  কিছু অসাধু সিন্ডিকেট। অটোরিকশা নিয়ে রীতিমত মাইকিং করে নামে বেনামে বিক্রি করছে স্বল্পমূল্যের নিম্নমানের এনার্জি বাল্ব। এছাড়া বেশ কিছু ইলেকট্রনিক দোকানে নষ্ট হওয়া বাল্ব স্থানীয়ভাবে মেরামত করে করে নামী দামী ব্রান্ডের নকল মোড়কে বাজারজাত করছে। এতে একদিকে যেমন  বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের উদ্দেশ্য ব্যহত হচ্ছে অন্যদিকে প্রতারিত হওয়ার পাশাপাশি মানহীন এসব বাতিতে থাকা ক্ষতিকর ভারী ধাতুর কারনে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে  ব্যবহারকারীরা।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, সাশ্রয়ী  বৈদ্যুতিক বাতি (এনার্জি ইফিশিয়েন্ট বাল্ব) উৎপাদন ও বিপণনের অনুমোদন রয়েছে মাত্র  ১০ টি প্রতিষ্ঠানর। কিন্তু এ বাল্ব বাজারজাত করছে প্রায় অর্ধশতাধিক নামে বেনামী কোম্পানি। এসব বাল্বের প্যাকেটে যে পরিমানা আলো দেয়ার কথা লেখা থাকে পাওয়া যায় না সে পরিমান আলো। সরেজমিনে শহরের বিভিন্ন এলাকা ও হাটবাজারে  গিয়ে দেখা যায়,  লোকজনকে প্রলোবন দিয়ে ৩’শ টাকা দামের এনার্জি বাল্ব বিক্রি করছে মাত্র ১শ টাকায়। সাথে ৬ মাসের গেরান্টি কার্ডও থাকছে। সস্তা পেয়ে অনেকে এই নিম্ন মানের এনার্জি বাল্ব ক্রয় করছে।  এসব বাল্ব ক’দিন যেতে না যেতেই আলো কমে যায়, টিউব কালো হয়ে যায় এবং নষ্ট হয়ে যায়। আর গ্যরান্টি কার্ড দেওয়া সেই ভ্রাম্যমান এনার্জি বাল্ব বিক্রিতাকেও পাওয়া যায়ন না। যার ফলে বাল্ব নষ্ট হয়ে গেলেও আর ওই গ্যারান্টি কার্ড আর কাজে লাগেনা। এছাড়া ওসব গেরান্টি কার্ডনিয়েও লোকমুখে নানা কথা রয়েছে। তারা বলছে ওই কার্ডগুলো কম্পিউটার থেকে ছাপানো হয়েছে। এছাড়া শহরের অনেক অসাধু ব্যবসায়ী শহরে তাদের ইলেকট্রনিক দোকানে  ভ্রাম্যমান বিক্রেতার কাছ থেকে কমদামী বাল্ব কিনে দামী বাল্বের সাথে চালিয়ে দিচ্ছে। তারা এসব নিম্নমানের বাল্ব ওয়াটভেদে ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছে। দুই একদিন পর বাল্ব নষ্ট হলে  গ্যারান্টি কার্ড  নিয়ে গেলে ক্রেতাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। দোকান থেকে কেনা এই বাল্বগুলোর ফলাফলও  খুবই খারাপ বলে জানান ভুক্তভূগীরা। শহরের  ইসলামবাগ এলাকার মতিউর রহমান  নামে এক যুবক জানান, শেরা বাংলা সড়কের সৈয়দপুর প্লাজার সামনে ইলেক্ট্রনিক মালামাল বিক্রির এক প্রতিষ্ঠান থেকে ৯০০ টাকায় দুটি এনার্জি বাল্ব কিনেছি।  মাত্র ৪ দিনের মাথায় একটি বাল্ব নষ্ট হয়ে গেছে। যে দোকান থেকে কিনেছি গেরান্টিকার্ডসহ সেখানে গেলে দোকানদার বলছে এ বাল্ব আমাদের এখানকার নয়। দোকানদার আমার সাথে খারাপ ব্যবহারও করেছে।
এই নিম্ন মানের বাল্ব কোথা থেকে আসে এমন প্রশ্নে এনার্জি বাল্বের একটি কোম্পানীর এরিয়া ম্যানেজান মোঃ আলমগীর হোসেন  জানান, এসব বাল্ব আসে চায়না থেকে। তারা ভাল বাল্বের  জন্য ভাল দামে এবং নিম্নমানের বাল্বের জন্য নিম্ন দামে বিক্রি করছে। তাছাড়া এই নিম্ন মানের বাল্ব আসে দালালদের মাধ্যমে সরকারের কর ফাঁকি দিয়ে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর নীলফামারীর সহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দীন জানান,যদি কেউ অভিযোগ করে অবশ্যই সেই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button