অর্থনীতি

ফোর্স সেল আতঙ্ক, পুঁজি কমল আরও ৪শ’ কোটি টাকা

‘পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশার’ সপ্তাহে দেশের দুই বাজারে কমেছে সূচক ও বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। তাতে নতুন করে বিদায়ী সপ্তাহে (১৫-১৯ সেপ্টেম্বর) বিনিয়োগকারীদের বাজার মূলধন অর্থাৎ পুঁজি কমেছে ৪৪১ কোটি ৪৫ লাখ ৫৫ হাজার ৯৫১ টাকার।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত সোমবার অর্থমন্ত্রীর আশ্বাসের পর পুঁজিবাজার ঘুরে না দাঁড়ানোর ফলে সর্বশেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে ব্যাপক হারে ‘ফোর্স সেল’ হয়েছে। আর তাতে নতুন করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। ইউসিবি ক্যাপিটালসহ বেশ কিছু বড় বড় ব্রোকারেজ হাউজ ‘ফোর্স সেল’ করেছে। এর মধ্যে ইউসিবি ক্যাপিটালের শেয়ার ফোর্স সেল হয়েছে ফরচুন সুজসহ বেশ কিছু কোম্পানির শেয়ার।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দেশের দুই পুঁজিবাজারে ২৫ লাখ ৬০ হাজারের বেশি বিও হিসাবধারী বিনিয়োগকারী রয়েছেন। তার মধ্যে বৃহস্পতিবার গ্রামীণফোনের বিনিয়োগকারীদের প্রতি শেয়ারে ২০ টাকারও বেশি লাভ হয়েছে। এটাও হয়েছে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বিটিআরসি চেয়ারম্যান এবং গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষের জরুরি বৈঠকের পর। সরকার ও গ্রামীণফোনের মধ্যে সমোঝতা হচ্ছে এমন খবরে বৃহস্পতিবার কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ে। তাতে বড় দরপতন থেকে রক্ষা পেয়েছে দেশের দুই পুঁজিবাজার।

বিনিয়োগকারীরা বলছেন, অর্থমন্ত্রী পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বাজার পরিস্থিতি নিয়ে টানা পাঁচ ঘণ্টা বৈঠক করেন। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, পুঁজিবাজারের সমস্যা চিহ্নিত করেছি, আমরা সুশাসন ও সকল ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করব। পুঁজিবাজারে কেউ কারসাজি কিংবা দুর্নীতি করে পার পাবে না। বাজার ভালো হবে।

আমরা ভেবেছিলাম অর্থমন্ত্রীর বৈঠকের পর বাজার ভালো হবে। কিন্তু হলো উল্টোটা, বাজারে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। ‘মার্কেট আরও পড়বে, এখন বিনিয়োগ করলেই ক্ষতি’—এমন আতঙ্কে বিনিয়োগকারী শূন্য হয়ে পড়েছে ব্রোকারেজ হাউজ। ফলে ব্রোকারেজ হাউজ, স্টক এক্সচেঞ্জগুলোতে এখন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শুধু পুঁজি হারানোর আর্তনাদ বলে জানিয়েছে ব্রোকারেজ হাউজ সংশ্লিষ্টরা।

ডিএসইর তথ্য মতে, বিদায়ী সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। তিন কার্যদিবস উত্থান আর দু’দিন দরপতন হয়েছে। তাতে ডিএসইর প্রধান সূচক ৭৭ পয়েন্ট কমে তিন বছর পেছনে অবস্থান করছে পুঁজিবাজার। অর্থাৎ ৪ হাজার ৮৫৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ২০১৬ সালের ৫ ডিসেম্বর সূচক ছিল ৪ হাজার ৮৩৬ পয়েন্ট। বিদায়ী সপ্তাহে প্রধান সূচকের পাশাপাশি কমেছে ডিএসইর অন্য দুই সূচকও।

আলোচিত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৩টির, কমেছে ২৩৯টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। এর আগের সপ্তাহে দাম বেড়েছিল ৬৬টির, কমেছিল ২৭৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।

দেশের অপর পুঁজিবাজার সিএসইর প্রধান সূচক ২২২ পয়েন্ট কমে ১৪ হাজার ৭৬০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ৭৯টির কমেছে ২০৩টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম। ফলে বিনিয়োগকারীরা সিএসইতে ১৪৫ কোটি ৯০ লাখ ৫৭ হাজার ৫৪৫ টাকা লেনদেন করেছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button