জাতীয়

রেড জোনে থাকবে সাধারণ ছুটি

করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) অধিক সংক্রমিত এলাকাকে রেড জোন ঘোষণা করে লকডাউন করে দেয়া হবে। সেই এলাকায় সাধারণ ছুটি থাকবে। সাধারণ ছুটিতে ‘রেড জোন’ অঞ্চলের সরকারি-বেসরকারি কোনো চাকরিজীবীকেই অফিস করতে হবে না। এছাড়া অন্যান্য স্থানে আগের মতোই স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফিস খোলা থাকবে, চলবে গণপরিবহনও।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন শনিবার দুপুরে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

করোনা মোকাবিলায় ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি শেষে গত ৩১ থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত শর্ত সাপেক্ষে সীমিত পরিসরে অফিস খুলে দেয়া হয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু হয় গণপরিবহনও। এই পরিস্থিতিতে করোনা সংক্রমণের মাত্রা বেড়ে যেতে থাকলে সরকার ফের সাধারণ ছুটির ঘোষণার কথা বললেও এখন সেদিকে যাচ্ছে না। জোনভিত্তিক লকডাউনের মাধ্যমে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে চাইছে সরকার।

বেশি আক্রান্ত এলাকাকে রেড, অপেক্ষাকৃত কম আক্রান্ত এলাকাকে ইয়েলো ও একেবারে কম আক্রান্ত বা করোনামুক্ত এলাকাকে গ্রিন জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। রেড জোনকে লকডাউন করা হবে, ইয়েলো জোনে যেন আর সংক্রমণ না বাড়ে সেই পদক্ষেপ নেয়া হবে। সতর্কতা থাকবে গ্রিন জোনেও। লকডাউনের মেয়াদ হবে ১৪ থেকে ২১ দিন পর্যন্ত।

গত ৯ জুন দিবাগত রাত ১২টা থেকে রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজার এলাকাকে পরীক্ষামূলকভাবে ‘রেড জোন’ হিসাবে লকডাউন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ১৪ দিনের জন্য এই লকডাউন কার্যকর করা হবে সেখানে।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমারা এখন জোনিংয়ে চলে যাচ্ছি। ঢাকাসহ যে জায়গাগুলো সিভিয়ারলি ইনফেক্টেড (মারাত্মক আক্রান্ত) হয়েছে সেই জায়গাগুলোতে রেড জোন ঘোষণা করে সেগুলোতে বিশেষ ট্রিটমেন্টে আমরা চলে যাব।’

তিনি বলেন, ‘তাই বর্তমানে যে অবস্থায় চলছে সবকিছু সেভাবেই চলবে। নতুন করে ছুটি ঘোষণা করা হবে না। যে এলাকা রেড জোন থাকবে, সেখানে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হবে। পরীক্ষামূলকভাবে পূর্ব রাজাবাজারের লকডাউন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সেখানে কিছু ভুলত্রুটি বের হয়ে এসেছে। লোকজন এখানে টপকাচ্ছে ওখানে টপকাচ্ছে। যাবতীয় সবকিছু স্বয়ংসম্পূর্ণ করে আমরা কোনো স্থান লকডাউন করব।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘জোনিং করে লকডাউন, এটা খুবই একটা কার্যকর ব্যবস্থা বলে মনে করছি আমরা। একই সঙ্গে চার পাঁচটি স্থান রেড জোন ঘোষণা করে লকডাউন বাস্তবায়ন করা হতে পারে।’

বেশি সংক্রমিত এলাকাগুলো সিলেকশন করা আছে জানিয়ে ফরহাদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সেই স্থানগুলোকে আমরা রেড জোন ঘোষণা করতে পারি। আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঘোষণা দেব, কোন এলাকায় লকডাউন করা হবে। আগে থেকে বলা হলে তো লোকজন এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলে যাবে। রেড জোনে জনসাধারণের চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে। যাদের খাবার প্রয়োজন পৌঁছে দেয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৫ তারিখের (জুন) পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগের মতো অফিস এবং গণপরিবহন খোলা থাকবে, সেজন্য একটি অর্ডার জারি করা হবে। সেটা হয়তো রোববারই (১৪ জুন) জারি করা হবে।’

এলাকাভিত্তিক লকডাউন বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনায় গতকাল শুক্রবার অনলাইনে বৈঠক করেছেন সরকারের তিন মন্ত্রী, দুই প্রতিমন্ত্রী ও তিন মেয়র। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ জাহিদ মালেকের সভাপতিত্বে অনলাইন বৈঠকে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button