দুর্যোগসারাদেশ

অর্ধকোটি টাকাসহ তক্ষক চোরাচালান চক্রের দুই সদস্য আটক

সরকারি স্টিকার লাগানো একটি মাইক্রোবাসে তল্লাশি চালিয়ে সাড়ে ৫৪ লাখ টাকাসহ তক্ষক চোরাচালান চক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছে যশোর ডিবি পুলিশ।

বুধবার (৬ নভেম্বর) বিকালে যশোর-বেনাপোল সড়কের পুলেরহাট মোড় থেকে তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলো- নওগাঁর বদলগাছি উপজেলার বলরামপুর গ্রামের কাজী মোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে কাজী মাসুদ পারভেজ এবং গোপালগঞ্জের মকছুদপুর উপজেলার আইকাদিয়া গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে রেজাউল ইসলাম। একই সঙ্গে আটক করা হয়েছে গাড়ি চালক আবুল খায়েরকেও। তার বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বারপুর উপজেলার বড়ুরা গ্রামে।

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বুধবার সন্ধ্যার দিকে ডিবি কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং জানান, সরকারি স্টিকার লাগানো একটি গাড়িতে মাদক বহন করা হচ্ছে বলে খবর পেয়ে পুলেরহাট এলাকায় অবস্থান নেয় ডিবি পুলিশের একটি টিম। পরে মাইক্রোবাসটি থামিয়ে আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা জানায় কোনো মাদক না, বেশ কিছু পরিমাণ টাকা আছে তাদের সঙ্গে। পরে তাদের ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়। সেখানে সংবাদকর্মীদের সামনে চারটি ব্যাগ থেকে সাড়ে ৫৪ লাখ টাকা জব্দ করা হয়।

প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় ডিবির ওসি মারুফ আহম্মদ, কোতায়ালি থানার ওসি মনিরুজ্জামান, ডিবির এসআই শামীম আহমেদ, এসআই মফিজুর রহমানসহ অন্যান্য অফিসার উপস্থিত ছিলেন।

মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম আরও জানান, এই ধরনের অপরাধীদের বলা হয় আরটিসি (রিয়েল চিটিং ডিপার্টমেন্ট)। আবার হোয়াইট কালার ক্রিমিনালও বলা হয়ে থাকে। দেখতে বেশ স্মার্ট, কথা বার্তায় পারদর্শী, সমাজের উঁচু শ্রেণির মানুষদের সঙ্গে এদের চলাফেরা বেশি। দামি গাড়িতে চলাফেরা করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যাতে সহজে সন্দেহ করতে না পারে সে জন্য সরকারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের স্টিকার লাগিয়ে থাকে। তারা যে সিলভার রঙের মাইক্রোবাসটি ব্যবহার করছিল সেটিতে সরকারি স্টিকার লাগানো ছিল। সেখানে লেখা ছিল ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার’।

আটককৃত রেজাউল ইসলাম ও মাসুদ পারভেজ জানিয়েছেন, ‘আমরা বন্যপ্রাণী তক্ষক কেনাবেচার মধ্যস্থতাকারী। ঢাকা থেকে মাইক্রোবাসটি ৮ হাজার টাকায় ভাড়া নিয়ে যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া বাজারের পাশের একটি বাড়িতে যায়। সেখানে তক্ষকের একটি ছোট হাড় কেনাবেচা হয় এক কোটি টাকায়। তারা সেকেন্ড পার্টি। প্রথম পার্টি সাড়ে ৪৪ লাখ টাকা নেই। আর আমরা নেই সাড়ে ৫৪ লাখ টাকা। এই টাকা নিয়ে ঢাকায় যাওয়া হচ্ছিল।’

তারা আরও জানান, এই টাকার তিন ভাগের এক ভাগ তারা দুইজনে পাবেন। বাকি দুই ভাগ দেওয়া হবে অন্য পার্টিকে। অন্য পার্টি কারা এই বিষয়ে তারা কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন।

আটককৃতদের মধ্যে মাসুদ পারভেজ আইটির ব্যবসা করেন। ঢাকার শ্যামলীতে স্মার্ট আইটি নামে একটি প্রতিষ্ঠান আছে তার। আর রেজাউল ইসলাম হাউজ বিল্ডিং ঠিকাদার। তিনিও ঢাকায় থাকেন।

ডিবির ওসি মারুফ আহম্মেদ জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যদের খুঁজে বের করতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button