দিনে-দুপুরে বাড়িতে ঢুকে ফরিদপুরে ঝর্ণা মণ্ডল (৪২) নামে এক গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
নির্মম এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে ফরিদপুর পৌর শহর সংলগ্ন পশ্চিম গঙ্গাবর্দী গ্রামের বেড়ি বাঁধ এলাকায়। পরে খবর পেয়ে মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বিকালে সাড়ে ৩টার দিকে নিহত ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত গৃহবধূর ঝর্ণা মণ্ডল ওই গ্রামের দুলাল মণ্ডলের (৪৮) স্ত্রী ও এক ছেলে এবং এক মেয়ের জননী।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দুলাল মণ্ডল রাজমিস্ত্রির কাজ করত। তার ছেলে কৃষ্ণ মণ্ডল (১৯) পড়াশুনার পাশাপাশি বাবার সঙ্গে রাজমিস্ত্রির কাজ করে। মঙ্গলবার সকালের খাবার খেয়ে দুলাল ও তার ছেলে কৃষ্ণ কাজে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাইরে বেরিয়ে যায়। ওই সময় বাড়িতে ঝর্ণা একাই ছিলেন। এ দিকে, পূজার আগে মামাবাড়িতে বেড়াতে যাওয়ায় তার মেয়ে বণ্যা (১৭) সেখানেই ছিলেন। পরে দুপুর আড়াইটার দিকে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা।
দিনে-দুপুরে গৃহবধূকে হত্যার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার সেকেন্ড অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) বেলাল হোসেন জানান, মঙ্গলবার সকালে স্বামী ও ছেলে বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার পর দিনের কোনো এক সময়ে ধারাল অস্ত্র দিয়ে ওই গৃহবধূর মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কুপিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। এ সময় বসতবাড়ির যে ঘরে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে সেটির দরজা খোলা ছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এ দিকে, ওই এলাকার বাসিন্দা কাদের মোল্লা জানান, দুলাল ও তার পরিবারের সদস্যরা নিরীহ প্রকৃতির ছিল। ২০ বছর আগে নদী ভাঙনের শিকার হয়ে এই পরিবারের সদস্যরা পশ্চিম গঙ্গাবর্দী এলাকায় এক টুকরো জায়গা-জমি কিনে সেখানে বসবাস করে আসছেন। তাদের কোনো শত্রু আছে বলে কখনোই শোনা যায়নি।
এ ঘটনায় ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশাসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ইতোমধ্যেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা জানান, ‘এটি একটি ‘ক্লিন’ হত্যাকাণ্ড। হত্যাকারীরা হত্যা করতেই এসেছিল। তারা কোনো সহায়-সম্পত্তির ওপর হাত দেয়নি।’
তিনি বলেন, নিহত ওই গৃহবধূর মরদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা।