নিখোঁজের ২০দিন পর গারো পাহাড়ে মিললো অটোচালকের মরদেহ
খুন হলো অটো রিক্সার ব্যাটরীর জন্য
শেরপুর প্রতিনিধি: শেরপুরের শ্রীবরদী থেকে নিখোঁজের ২০দিনপর ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালক হোসেন আলী (৩৫)এর মরদেহ গারো পাহাড়ের নওকুচি এলাকার মাটির নীচ থেকে উদ্ধার করেছে র্যাব-১৪।
নিহত হোসেন আলীর ভাই কাশেম আলী জানান, গত ২৬ নভেম্বর শেরপুরের শ্রীবরদী পৌর এলাকার সেখদি গ্রামের আমাদের নিজ বাড়ী থেকে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা নিয়ে বের হয় আমার ভাই হোসেন আলী। এরপর থেকে সে নিখোঁজ হয়। পরে তার অটোরিকশা ঝিনাইগাতী উপজেলার রাংটিয়া এলাকা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। আমরা এ বিষয়ে শ্রীবরদী থানায় একটি জিডি করি। পরে ঝিনাইগাতী থানা পুলিশ রাংটিয়া এলাকা থেকে অটোরিক্সাটি উদ্ধার করে। তবে অটোরিক্সায় ব্যাটারি ছিলো না। আমরা বিষয়টি ১০ ডিসেম্বর র্যাবকে জানাই।
র্যাব-১৪ অনুসন্ধান করে ঝিনাইগাতীর গারো পাহাড়ের নওকুচি থেকে সুমেল রানা (৪০) নামে এক ছিনতাইকারীকে আটক করে। তার তথ্যমতে আরেক ছিনতাইকারী শ্রীবরদীর ভেলুয়ার সুজন (২৮) কে আটক করে। পরে তারা জানায়, অটোরিকশা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রীবেশে অটো রিকশায় ওঠে গারো পাহাড়ে নিয়ে যায় হোসেন আলীকে। সেখানে হিমেলের বাড়ীতে নিয়ে এবং হোসেন আলীকে হত্যা করে মাটির নীচে পুতে রাখে। পরে কিছু দূরে নিয়ে অটো রিক্সাটি ফেলে রাখে। এসময় অটোরিক্সার ব্যাটারী নিয়ে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করে ৫ হাজার টাকা করে ভাগ করে নিয়ে পালিয়ে যায় ছিনাতাইকারীরা।
আজ ১৪ ডিসেম্বর দুপুরে র্যাব আটক দুই ছিনাতাইকারীকে নিয়ে মরদেহ উদ্ধারের জন্য অভিযান চালায় গারো পাহাড়ে। সেখানে আটকৃতদের সনাক্তকৃত স্থান থেকে হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করে।
হোসেনের বড় ভাই কাশেম আলী আরো বলেন, আমার ভাইয়ের দুটি সন্তান রয়েছে। আমার বাবা মা নেই। এখন এ সন্তান দুটিকে কে দেখবে। আমি খুনিদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবী করছি।
এদিকে শ্রীবরদী পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাহেব আলী জানান, সামান্য ব্যাটারীর জন্য এ ভাবে মানুষ খুন করছে। তারা অনেক মানুষকেই ক্ষতি করছে। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি। এদের শাস্তি দেখে কেউ যেন এরকম কাজ আর না করতে পারে।
এব্যাপারে র্যাব-১৪ জামালপুর এর অধিনায়ক মোঃ রুকনুজ্জামান বলেন, আমরা ১০ ডিসেম্বর ঘটনাটি জানার পর থেকে আমাদের তদন্ত শুরু হয়। আমাদের গোয়েন্দাদের কার্যক্রমে বেড়িয়ে আসে ঘটনার সাথে জড়িতদের নাম। পরে প্রযুক্তির সাহায্যে আমারা ছিনতাইকারীদের আটক করতে সক্ষম হই। পরে তাদের তথ্যে আমরা আজ হোসেন আলীর মরদেহ উদ্ধার করি। তারা জানায় অটো ছিনতাই করে নিয়ে এসে হোসেন আলীকে খুন করে পুতে রাখে। পরে তারা অটোটি আর বিক্রি করতে পারে নাই। ব্যাটারি খুলে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দুই জনে ৫ হাজার টাকা করে ভাগ করে নেয়। আমাদের তদন্ত অব্যহত আছে। এ ঘটনার সাথে আরো অন্য কেউ জড়িত থাকলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।