জাতীয়

হাসপাতালে ভর্তির পর এএসপিকে পিটিয়ে হত্যা

মানসিক সমস্যা নিয়ে রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে ভর্তি হওয়া সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুল করিমকে পিটিয়ে হত্যা করেছে হাসপাতালের কর্মচারীরা। এ ঘটনায় হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারীকে আটক করেছে ‍পুলিশ। পরিবারের পক্ষ থেকে আদাবর থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এএসপি আনিসুল করিমকে ভর্তি করা হয় ওই হাসপাতালে। এর কিছুক্ষণ পরই নিথর অবস্থায় তাকে ওই হাসপাতাল থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয় জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পরিবারের অভিযোগের পর পুলিশ ওই হাসপাতাল থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। ফুটেজে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন কর্মচারী আনিসকে মারধর করছিলেন। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

আনিসুল করিমের ভাই রেজাউল করিম বলেন, “পারিবারিক ঝামেলার কারণে তার ভাই মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তাকে মাইন্ড এইড হাসপাতালে নিয়ে যাই। কাউন্টারে ভর্তির ফরম পূরণের সময় কয়েকজন কর্মচারী তাকে দোতলায় নিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পর আমাদের জানানো হয়, আনিসুল সংজ্ঞা হারিয়েছে। সেখান থেকে তাকে দ্রুত জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাই। সেখানে চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন।

তবে হাসপাতালের সহকারী ম্যানেজার আল আমিনের দাবি, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করায় হাসপাতালের কর্মচারীরা পুলিশ কর্মকর্তাকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। তিনি বলেন, “এরই মধ্যেই কী থেকে কী হয়ে গেল, বুঝা মুশকিল।”

পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, “সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিমকে কয়েকজন কর্মচারী টেনেহেঁচড়ে একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে সবাই তাকে মেঝেতে চেপে ধরেন। কেউ কিল-ঘুষি মারেন, কেউ হাত-পা চেপে ধরেন। কাপড় দিয়ে কেউ মুখ বাঁধার চেষ্টা করেন। এরপর তিনি নিস্তেজ হয়ে পড়েন। তখন পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ অ্যাপ্রন পরিহিত একজন নারীকে নিয়ে এসে পরীক্ষা করান। এরপর দরজা লাগিয়ে দিয়ে বুকে পাম্প করেন ওই নারী।”

জানতে চাইলে শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানে আলম মুন্সি সোমবার রাতে বলেন, “হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের খাতায় লেখা রয়েছে ‘ব্রট ডেড’, অর্থাৎ হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই আনিসুলের মৃত্যু হয়েছিল।”

আনিসুল করিম ৩১তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পুলিশ ক্যাডারে যোগ দেন। সবশেষ তিনি বরিশাল মহানগর পুলিশে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায়। তিনি এক সন্তানের জনক। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button