রংপুর বিভাগসারাদেশ

উলিপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন প্রকল্পের কমিটি গঠন নিয়ে একাংশের সংবাদ সম্মেলন

উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের উলিপুরে অস্বচ্ছল ও গৃহহীন মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দকৃত আবাসন প্রকল্পের কমিটি গঠন নিয়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের দুই গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। আজ বুধবার সকাল ১১টায় উপজেলা অডিটরিয়াম হলে সাবেক কমান্ডার গোলাম মোস্তফা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টুর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একাংশের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, সাবেক কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা।
তিনি বলেন, সাবেক কমান্ডার এম,ডি ফয়জার রহমান তার অনিয়ম ও দূর্নীতি ধামাচাপা দিতে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের ভূল বুঝিয়ে গত ১৭ জুন আমার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টুর বিরুদ্ধে মনগড়া ও ভিত্তিহীন অভিযোগের অবতারনা করেন। এম,ডি ফয়জার রহমান তার ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করতে এমন মিথ্যা অভিযোগ আনেন, যাহা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, সাবেক কমান্ডার এম,ডি ফয়জার রহমান ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিপুল অর্থের বিনিময়ে ডাঃ মোকছেদ আলী, নূর মোহাম্মদ প্রধান, আয়নাল হক সহ ৭৫ জনের নাম জামুকায় প্রদান করেন, যাদের অধিকাংশই অমুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী।
সাবেক কমান্ডার গোলাম মোস্তফা আরো বলেন, আমি ২৭ বছর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের দায়িত্ব পালন কালে অত্যন্ত সুনামের সহিত মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে কাজ করেছি। এমডি ফয়জার রহমান সেই সময় আমার অধিনে ডেপুটি কমান্ডারের দায়িত্বে ছিলেন। আমাকে বিএনপি সমর্থিত ও অমুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দাবী প্রসংঙ্গে তিনি বলেন, এমন কোন তত্ত্ব, উপাত্ত বা প্রমাণাদি নেই যে বিগত প্যানেলটি বিএনপি সমর্থিত ছিল। এমডি ফয়জার রহমান তার ব্যক্তি স্বার্থ ও রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য এমন মিথ্যা অভিযোগ আনেন। যাহা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীণ ও বানোয়াট। আমি একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা। স্থানীয় সংসদ সদস্য আমাকে ব্যক্তিগত ভাবে চেনেন এবং জানেন। তিনি একজন উচ্চ শিক্ষিত ও বিজ্ঞ সৎজন ব্যক্তি। তিনি সব কিছু বিবেচনা করে আমাকে ওনার প্রতিনিধি হিসেবে ওই আবাসন প্রকল্পের কমিটিতে অর্ন্তভূক্তির জন্য সুপারিশ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টু বলেন, সাবেক কমান্ডার এম,ডি ফয়জার রহমান আমাকে জড়িয়ে পানি ঘোলা করে তার দূর্নীতি ও অপকর্ম চালিয়ে যাওয়ার নীল নকশা চালাচ্ছেন। আমি অত্যন্ত সুনামের সাথে দীর্ঘদিন থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছি। সেইসাথে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডারের দায়িত্বও পালন করেছি। বাস্তবচিত্র হচ্ছে এই সাবেক কমান্ডার এমডি ফয়জার রহমান, ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের ভুলিয়ে ভালিয়ে নানাভাবে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। এমন অনেক প্রমাণ তার কাছে আছে বলেও দাবী করেন তিনি। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অধিনে কোন কমিটিতে উপজেলা চেয়ারম্যান সদস্য থাকতে পারবেন কি না, এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এ কমিটিতে প্রতিনিধিত্ব করছি মাত্র। সাবেক কমান্ডার গোলাম মোস্তফাকে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ২০০৯ সালে অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর প্রদান প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার মনে পড়ছে না। অভিযোগ পত্রে সেই সময়ে কেউ আমার জাল স্বাক্ষর দিয়ে থাকতে পারেন।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুন সাবেক কমান্ডার এমডি ফয়জার রহমান আবাসন প্রকল্পে স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রতিনিধি গোলাম মোন্তফাকে ভূয়া ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রতিনিধি হিসেবে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন মন্টুর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং মানববন্ধন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট স্বারকলিপি প্রদান করেন। এরই প্রতিবাদে আজ বুধবার মুক্তিযোদ্ধাদের একাংশের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button