১০ হাজার মানুষের জন্য জোড়াতালির সেতু
নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি: সেতুর পাঁচটি পিলারের মধ্যে তিনটি দেবে গেছে। মাঝ-বরাবর হয়ে গেছে আঁকাবাঁকা। সংযোগ সড়ক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে বাঁশের চাটাই। এমন অবস্থাতেই সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ চারটি ওয়ার্ডের ১৯টি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ।
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের খগারচর এলাকায় তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত এই সেতুর ওপর দিয়ে চলছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইকসহ অটোভ্যান। অনেক সময় ঘটছে দুর্ঘটনাও। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এমন অপেক্ষার পরও দৃষ্টি কাড়েনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।স্থানীয়রা জানান, ২০১৬ সালে পল্লীশ্রীর অর্থায়নে ১০ লাখ ৭ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় সেতুটি। নির্মাণ ত্রুটির কারণে বছর যেতে না যেতেই হেলে পড়ে সেতুটি। ভারী বর্ষণ ও তিস্তা নদীর বন্যার স্রোতে সেতুর মাঝখানের পিলারগুলো বসে যায়। কিন্তু তখন থেকে কখনোই সেতুটি সংস্কার করা হয়নি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ৬০ ফুট দীর্ঘ, ৫ ফুট চওড়া সেতুর মাঝ-বরাবর ভেঙে গেছে। ভাঙা সেতু দিয়ে চলছে ভ্যান গাড়ি, মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা তবে ঝুঁকি থাকায় বেশির ভাগ লোকজন হেঁটেই পার হচ্ছে।
ইউনিয়নের ঝড়সিংহেশ্বর গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইউনিয়নের ৪ ওয়ার্ডের প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম এই সেতু। বর্তমানে সেতুটির অবস্থা খুবই খারাপ হওয়ার পরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরা চলাচল করছি। দ্রুত সেতুটি সংস্কার করলে আমাদের জন্য ভালো হয়।ভ্যানচালক নাসির মিয়া বলেন, ভাঙ্গা পুলত খুবেই সমস্যা হামার ভ্যান পার করাইতে, আর তো কোনো রাস্তা নাই। এ জন্যেই হামাক এদি (এই দিক দিয়ে) কষ্ট করি যাবার লাগে। কলোনি বাজার এলাকার কাশেম শেখ বলেন, যেলা এই পুলখান বানাইল ভাবিনো হামার সুবিধা হইল, কিন্তু বছর না হইতে না হইতে পুল ভাঙ্গি সারা। পুলটা তারাতারি ঠিক করিলে হামার চলাচলের সুবিধা হয়।পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এর আগে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকালে উপজেলা মাসিক সমন্বয় মিটিংয়ে সেতুটি সংস্কারের জন্য অনেকবার বলেছি। পুনরায় চেয়ারম্যান র্নিবাচিত হওয়ায় এবার সেতুটি সংস্কার নিয়ে যা করা প্রয়োজন তা-ই করব।
উপজেলা প্রকৌশলী শফিউর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, খগারচর এলাকায় যাতায়াতের প্রধান সেতুটি নির্মাণের জন্য দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ে তালিকা পাঠিয়েছি। আশা করি শিগগিরই সেতুটি নির্মাণের ব্যবস্থা হবে।