ডেজা ভ্যু র মাধ্যমে কান চলচ্চিত্র উৎসবে ইতিহাস গড়লো নাটোরের তিন কৃতি সন্তান
সম্প্রতি বিশ্ব চলচ্চিত্রের অন্যতম প্রতিযোগিতা ফ্রান্সের বিশ্ব কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘ডেজা ভ্যু’ জিতে নিয়েছে সেরা ফিলসফিক্যাল ফিল্ম এওয়ার্ড। এছাড়া জাপান-ইন্ডিয়া আয়োজিত হোয়াইট ইউনিকর্ন ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল এর স্পেশাল জুরি এওার্ড, একইভাবে স্পেশাল জুরি অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছে স্পেনের এলগ্রিত দি লস সিন ভয চলচ্চিত্র উৎসব থেকে। প্রকৃতপক্ষে পরিচালক রায়হান শশী, চলচ্চিত্রে জীবনের ভূমিকায় অভিনয় করা তামিম তপু এবং মুক্তার ভূমিকায় মেহেজাবিন মুন এই তিন জন ই নাটোরের কৃতি সন্তান। নাটোরের ইতিহাসে এই প্রথম কান চলচ্চিত্র উৎসবে ইতিহাস গড়লো নাটোরের তিন কৃতি সন্তান।যেহেতু একফোঁটা পানি থেকেই জীব সৃষ্টি সুতরাং জীবন একটা সমুদ্র। আর এই জীবন সমুদ্র তীরে বসে যদি কেউ নিজের অতীতের সমস্ত হিসেব টানে তবে ভবিষ্যতের অংক মিলে যাবে। কিন্তু সমুদ্র হয়ে যাচ্ছে আক্রান্ত। কেউ চেষ্টা করছে সমুদ্রকে বাঁচাবার জন্য।কেননা ৩ ভাগ জল আর এক ভাগ স্থলের এই পৃথিবীতে যদি সমুদ্র প্রতিশোধ নেয় আমরা কই যাবো! এরকমই একটা গুঢ় বিষয় ও প্রেক্ষাপট নিয়ে ‘ডেজা ভ্যু’ নামে মুক্ত দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। সাধারণ ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক চলচ্চিত্রটিকে দিয়েছে প্রাণ।পরিচালকের মতে ‘ডেজা ভ্যু’ চলচ্চিত্রের প্রধান প্রতিপাদ্য বিষয়গুলোর অন্যতম বিষয় হচ্ছে, ‘নারী ভোগ দখল করার জন্য নয়। নারী, পুরুষের চেয়েও বেশি একজন মানুষ। অপর বিষয়টি হচ্ছে তিন ভাগ জল এবং এক ভাগ স্থলের এই পৃথিবীতে মানুষ যেভাবে সমুদ্রকে দুষিত করছে যদি কোনদিন সমুদ্র পৃথিবীর মানুষের উপর প্রতিশোধ নেয় তাহলে মানুষ কোথায় যাবে, সেই ভাবনা। ‘ডেজা ভ্যু’ প্রযোজনা করেছেন ফারাহ নাজ আলম এবং গল্প, সংলাপ, চিত্রনাট্য,পরিচালনা ও সম্পাদনা করেছেন রায়হান শশী। চিত্র গ্রাহক সাঈদ মুস্তাকিম অনিক, অসাধারণ প্রোডাকশন ডিজাইন করেছে হাসান অয়ন এবং নির্মান করেছে উড়ুপ ট্রপ প্রোডাকশন।এই চলচ্চিত্রে জীবনের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন তামিম তপু, মুক্তার ভূমিকায় মেহজাবিন মুন আর বিবেকের ভূমিকায় ইমরান হোসেন। ‘ডেজা ভ্যু’ দাদা সাহেব ফালকে ২০২২ থেকে পেয়েছে অফিসিয়াল সিলেকশান এবং বিশেষ আমন্ত্রণে পরিচালক এবং প্রযোজক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করতে দিল্লি যাচ্ছেন এ মাসেই। ইংল্যান্ডের পাইনউড স্টুডিওর লিফট অফ গ্লোবাল নেটওয়ার্ক চলচ্চিত্র উৎসব থেকে এবং ইংল্যান্ডের ফার্স্টটাইম ফিল্ম মেকার চলচ্চিত্র উৎসব থেকে পেয়েছেন অফিসিয়াল সিলেকশন। স্বনামধন্য পরিচালক, গল্পকার, গীতিকার, অভিনেতা ও শিক্ষক প্রয়াত কায়েস চৌধুরী ছিলেন ‘ডেজা ভ্যু’ চলচ্চিত্র টিমের প্রধান অভিভাবক। নিজে হাতে সমস্ত কিছু গুছিয়ে এনে দিয়েছিলেন নিজের সন্তান তুল্য রায়হান শশীর জন্য।তপু বলেন, ‘এই সিনেমায় নিজের চরিত্রের জন্য বেশ পরিশ্রম করেছি। সময় পেলেই আড্ডা এবং গল্পে গল্পে আরো গভীরে প্রবেশ করে নিজেকে শক্ত করেছি এই চলচ্চিত্রের জন্য। অবশেষে সিনেমাটি কানের মত এত বড় একটি উৎসবে সম্মানিত হওয়ায় খুব ভালো লাগছে।’ ইতিহাস ঐতিহ্যের নাটোরে আরো একটি ইতিহাস যুক্ত হলো এই তিন কৃতি সন্তান এর অর্জনের মাধ্যমে ।