খেলা

ব্যাড বয় থেকে হিরো, যার ছোঁয়ায় পাল্টে গেলেন স্টোকস

একের পর এক বিতর্কীত ঘটনার জন্ম দিয়ে ক্রমেই ক্রিকেটের ব্যাড বয় হয়ে উঠছিলেন বেন স্টোকস। কিন্তু এরপর সেসব পিছনে ফেলে আবার গা ঝাড়া দিয়ে ওঠেন এই ইংলিশ অলরাউন্ডার। ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ের পেছনে তার অবদান অনেক। বিশ্বকাপ ফাইনালের হিরো তিনি।

এবারের অ্যাশেজেও ইতিহাস সৃষ্টি করা এক ইনিংস খেলে দলকে বাঁচিয়েছেন খাদের কিনার থেকে। কিন্তু কিভাবে বদলালেন স্টোকস? তার আগে জেনে নিন তার কিছু কাণ্ড সম্পর্কে।

প্রথম ঘটনাটি ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরের। ব্রিস্টলে নাইটক্লাবের বাইরে এক ব্যক্তির সাথে প্রথমে কথা কাটাকাটি। তারপর হাতাহাতি। নেশার ঘোরে আর গায়ের জোরে চালান ঘুসি। একজনের চোখ ফেটে রক্তারক্তি। সিসিটিভিতে ঘটনা ধরা পড়ার পর ব্যাপক হইচই। সেবার অ্যাশেজ সিরিজ থেকেই বাদ পড়েন। ৬ ম্যাচের জন্য নির্বাসিত হন ক্রিকেট থেকে।

ঘটনা দুই: বিখ্যাত ব্রিটিশ তারকা‌ কেটি প্রাইসের প্রতিবন্ধী ছেলে হার্ভেকে স্ন্যাপচ্যাটে বিদ্রুপ করেন স্টোকস। পরিণতিতে‌ নির্বাসিত আরও দুই ম্যাচ। জরিমানা করা হয় ৩০ হাজার পাউন্ড ।

ঘটনা তিন:‌ সাংবাদিকদের কাছে বেফাঁস মন্তব্য করে আবারো সমালোচনায়। ‘‌টেস্ট ম্যাচ চলাকালীন মদ খান?‌’‌ এক সাংবাদিক জানতে চাওয়ায় বুক ফুলিয়ে জবাব দেন, ‘‌খাই। কেন?‌ যথেষ্ট বড় হয়েছি। এখন বয়স ২৬ বছর, ১৪ নয়‌। ডিনারের পর ডায়েট কোক খেতে পারব না।’‌

এক রাতে কত পেগ মদ খেতে পারেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‌২০ পেগের পর মনে থাকে না।’‌

গভীর রাতে রাস্তায় বেরিয়ে পুলিশের সাথে ঝামেলা। রাত কাটে জেলে। সেই অভিজ্ঞতা সম্পর্কে পরে বলেছিলেন, ‘রাতটা কোনওরকমে কাটানোর পর ভোরবেলা ‌দরজার মধ্যে একফালি একটা জায়গা দিয়ে আমাকে ব্রেকফাস্ট দেওয়া হল। মনে হচ্ছিল সিনেমায় দেখানো জেলের কোনও দৃশ্য। উফ্‌, কী ভয়াবহ!’‌

২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি। মদ্যপান করে রাস্তায় ঘুরে বেড়ানোর অপরাধে অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।

এমনি করে একের পর এক ঘটনা বখাটে থেকে আরও বখাটে হয়ে ওঠা বেন স্টোকসের; কিন্তু সেই পাঠশালা থেকে নাম কাটিয়ে কীভাবে তিনি বিশ্বকাপ ফাইনালে লর্ডসে হিরো আর লিডসে ১৩৫ রানের দাপুটে ইনিংস খেলে অ্যাশেজে সমতা ফেরানোর কারিগর হলেন?‌

যাবতীয় কৃতিত্ব স্ত্রী ক্লেয়ারকে দিচ্ছেন স্টোকস। ২০১০ সালে ওল্ড ট্রাফোর্ডে এক ক্রিকেট ম্যাচেরে সময় দু’‌জনের প্রথম দেখা। একে–অন্যের দিকে তাকানোর কয়েক সেকেন্ড বাদেই স্টোকসের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট এসেছিল ক্লেয়ারের। স্টোকসের জার্সিতে নাম দেখে সার্চ করেছিলেন। তবে দু’‌জনের প্রেম গভীর হয়েছে দুঃসময়ে। স্টোকসের কথায়, ‘‌ক্লেয়ার আমার প্রিয় বন্ধু। জীবনের সব চড়াই–উতরাইয়ের মুহূর্তে ও–ই আমার পাশে থেকেছে। বুঝিয়েছে। সঙ্গে পরিবারের অন্যরাও ছিলেন। তবে ক্লেয়ার আমার পাশে যতক্ষণ থাকবে, ততক্ষণই আমি ভাল থাকব। আমার কাছে এর থেকে বড় কিছু নেই। ক্লেয়ার আর সন্তানদের খুব মিস করি বিদেশ সফরে। ক্রিকেট আর ক্লেয়ার আমার জীবন। যে শিক্ষা পেয়েছি, কোনওদিন ভুলব না।’‌

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button