অর্থনীতি

তথ্য গোপন করে মিলবে না ব্যাংক ঋণ

বন্ড ও ডিবেঞ্চার খেলাপিরা আগামীতে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিতে পারবে না। এ জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মাধ্যমে বন্ড এবং ডিবেঞ্চার খেলাপিদের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হবে। এই তালিকাটি একটি ডেটাবেজ হিসেবে সংরক্ষণ করা হবে। এই ডেটাবেজে বিভিন্ন ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাংলাদেশ ব্যাংক প্রবেশ করতে পারবে। কোনো বন্ড ও ডিবেঞ্চারধারী যদি তাদের খেলাপির বিষয়টি গোপন করে ব্যাংক ও বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নেয়ার চেষ্টা করে তবে এই ডেটাবেজে সহজে প্রবেশ করে তা নিরূপণ করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এই ডেটাবেজ বিএসইসি করার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে প্রস্তাব করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

দেশে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন ও মূলধন বাজার উন্নয়নে গঠিত একটি কমিটি থেকে ১৮টি সুপারিশ করা হয়েছিল। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মপরিধি সংশ্লিষ্ট সুপারিশ ছিল সাতটি। এই সুপারিশ বাস্তবায়নের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এখন মতামত দেয়া হচ্ছে।

সূত্র জানায়, ৮ নম্বর সুপারিশে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি (ক্রেডিট ব্যুরো অব ইনফরমেশন-যেখানে ঋণখেলাপিদের তালিকা সংরক্ষণ করা হয়) ডেটাবেজে বন্ড খেলাপিদেরকেও খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত/শ্রেণিবদ্ধ করা যেতে পারে। যাতে তারা নতুন করে ব্যাংক হতে ঋণ নিতে না পারে। বর্তমানে বন্ড এবং ডিবেঞ্চার খেলাপিগণ কোনো বাধা ছাড়াই ব্যাংক ঋণ সুবিধা গ্রহণ করছে।

এই সুপারিশের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক আইন, ১৯৭২ এর অধ্যায় ৪ এর ধারা ৪২(সি) মোতাবেক ক্রেডিট ইনফরমেশনের সংজ্ঞানুযায়ী করপোরেট বন্ড এবং ডিবেঞ্চার বা অন্য কোনো বিনিয়োগের তথ্য সিআইবি ডেটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ নেই। বিএসইসি যেহেতু করপোরেট বন্ড এবং ডিবেঞ্চার ইস্যু করার অনুমোদন দিয়ে থাকে, সেহেতু বিএসইসি তত্ত্বাবধানেই বন্ড ও ডিবেঞ্চারের তথ্যসংবলিত ডেটাবেজ তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে। ডেটাবেজটি তৈরি সাপেক্ষে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিএসইসির ডেটাবেজ এক্সেস প্রদান করা হলে বন্ড এবং ডিবেঞ্চার খেলাপিরা নতুন করে যাতে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করতে না পারে সে বিষয়টি নিশ্চিত করা সম্ভবপর হবে।’

তবে বন্ড ইস্যুকারীর বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত ক্রেডিট রেকর্ড এবং ক্রেডিট পরিশোধের ইতিহাস সহজে যাচাই করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি ডেটাবেজে বিএসইসির দ্রুত প্রবেশের একটি সুপারিশ নাকচ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭২ এর ধারা ৪৬(২)(৩) অনুযায়ী জাতীয় সংসদ ব্যতীত অন্যকোনো সংস্থা/প্রতিষ্ঠানের নিকট সিআইবি-সংক্রান্ত তথ্য প্রদান করার সুযোগ নেই। তাই বিএসইসি’কে সিআইবি ডেটাবেজে এক্সেস প্রদান সম্ভব নয়। প্রসঙ্গত, সময়ে সময়ে বিএসইসির চাহিদা মোতাবেক পত্রের মাধ্যমে বন্ড ইস্যুকারী প্রতিষ্ঠানের ক্রেডিট রেকর্ড বর্তমানে নিয়মিতভাবে প্রেরণ করা হচ্ছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button