সারাদেশ

সরকারী বরাদ্দের ১০ লাখ টাকা এখনও বিতরণ শুরু হয়নি

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : সরকারী নির্দেশনায় কুড়িগ্রামে করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ৩য় দিনের মত শহর ও গ্রামাঞ্চলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শুধু মাত্র কাঁচাবাজার, ঔষধের দোকান ও নিত্যপন্যের দোকান খোলা থাকলেও সন্ধা ৭টার মধ্যে কাঁচাবাজার ও নিত্য ভোগ্য পন্যের দোকান খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। ফলে সন্ধা ৭টার পর ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে হাট-বাজার।
কাঁচাবাজার গুলোতে আসা পন্যের গাড়ি ও অন্যান্য যানবাহনে জীবানু নাশক স্প্রে করছে রেড ক্রিসেন্ট।

গণ পরিবহন বন্ধ থাকায় ফাঁকা হয়ে পড়েছে রাস্তা-ঘাট। শহর ও গ্রামের রাস্তায় দু’একটি করে রিকসা, অটোরিকসা দেখা গেলেও ভাড়া পাচ্ছেন না চালকরা। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবি মানুষজন।

জেলা ও উপজেলায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও মাইকিং করে দোকানপাট, যান চলাচল বন্ধ রাখাসহ সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা অব্যাহত রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন। আর এ নির্দেশনা কার্যকর করতে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি কাজ করছে পুলিশ প্রশাসন।

কুড়িগ্রাম শহরের রিকসা চালক আলম মিয়া জানান, একদিন রিকসা নিয়ে বের না হলে খাবার জোটে না। তাই রিকসা নিয়ে সকাল থেকে শহরে ঘুরছি। শহরে বা রাস্তায় লোকজন নাই তাই ভাড়াও নাই। আয় রোজগার করতে না পারলে খাবার জুটবে না।

শহরের আরেক অটো রিকসা চালক শফিকুল জানান, আমরা গরীব মানুষ প্রতিদিন অটো চালিয়ে চাল-ডাল কিনে খাই। গাড়ি চালানো নিষেধ থাকলেও উপায় নাই। অটো নিয়ে এসেছি কিন্তু কোন প্যাসেঞ্জার নাই। সব ফাকা। এ অবস্থা চলতে থাকলে বউ বাচ্চা নিয়ে অনাহারে থাকতে হবে।

এদিকে করোনা সতর্কতায় যান বাহনসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় জেলায় কর্মহীন হয়ে পড়া রিকসা চালক, ভ্যান চালক, ড্রাইভারসহ বিপুল সংখ্যক শ্রমজীবি মানুষের সহায়তার জন্য ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। এই টাকা দিয়ে প্রতি উপজেলায় দুই শতাধিক কর্মহীন হয়ে পড়া শ্রমজীবি মানুষের তালিকা করে প্রতি জনকে ১০ কেজি করে চাল, ৫ কেজি আলু, ২ কেজি ডাল, লবন ও সাবান কিনে দেয়ার নির্দেশনা দিয়ে বরাদ্দের টাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নিকট পাঠিয়েছে জেলা প্রশাসক। শনিবারের মধ্যে তা বিতরণ করা হবে।

এব্যাপারে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, বরাদ্দের টাকা জেলার ৯ উপজেলায় নির্দেশনা দিয়ে পাঠানো হয়েছে। কর্মহীন হয়ে পড়া শ্রমজীবি মানুষের তালিকা করে বিতরণ করতে বলা হয়েছে। যারা রিকসা চালক, অটো রিকসা বা ভ্যান চালক, ড্রাইভার এসব শ্রমজীবিদের কথা বলা হয়েছে। আমাদের কাছে ত্রাণের যে চাল মজুদ আছে সেখান থেকে ১০ কেজি করে চাল এবং বরাদ্দ পাওয়া টাকায় আলু, ডাল, লবন ও সাবান কিনতে বলা হয়েছে। শনিবারের মধ্যে তালিকা করে এসব পন্য প্যাকেট করে বিতরণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে। হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণের ক্ষেত্রে দিনমুজুর ব্যক্তি, অটোভ্যান চালক, ট্রাক্টর চালক ও পথচারীদের বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। এতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণের মাধ্যমে তাদের নিরাপদ ও সচেতন করার চেষ্টা করছি।

উপজেলা যুবলীগ নেতা মারুফ আহমেদ শিক্ত মন্ডল বলেন, ‘আজ পৃথিবী একটি সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশ অর্থনৈতিক ভাবে উন্নত দেশের মতো এত স্বাবলম্বী নয় তাই এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য নিজেদের সচেতন হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নাই। তাই করোনা প্রতিরোধ করার জন্য আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।’
বিশেষ ভাবে সহযোগিতা করেন উপজেলা যুবলীগ নেতা সাজেদুল আলম সেতু, ছাত্রলীগ নেতা জুয়েল আহমেদ, শৌলমারী ইউনিয়ন শাখার আহবায়ক (ছাত্রলীগ) হুমায়ুন রশিদ সুজনসহ প্রমুখ।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button