রাজশাহী বিভাগসারাদেশ

রাজশাহী বিভাগে করোনার হটস্পট বগুড়া

বগুড়া অফিসঃ রাজশাহী বিভাগে করোনার হটস্পট হয়ে উঠেছে বগুড়া। গত ১২ এপ্রিল বগুড়ায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর গত দু’মাসেরও কম সময়ে সেখানে রোগীর সংখ্যা গিয়ে ঠেকেছে ৮৭৮ জনে। এ সংখ্যা রাজশাহীর ৮ জেলায় যে ১ হাজার ৭৩২ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে তার অর্ধেক।

মঙ্গলবার সর্বশেষ ৮৪ জন করোনা রোগীর সন্ধান মিলেছে বগুড়ায়। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. গোপেন্দ্র নাথ আচার্য বলেছেন, বগুড়া শুধু রাজশাহী বিভাগেই নয়, গোটা দেশে করোনার হটস্পট হয়ে উঠেছে। অপ্রতিরোধ্য গতিতে বগুড়ায় করোনা ছড়াচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু বগুড়া জেলায়ই সর্বাধিক ৮৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, গোটা উত্তরাঞ্চলকে বাঁচাতে হলে বগুড়ার সঙ্গে অন্য জেলার যানবাহন চলাচল বন্ধ করা উচিত।

রাজশাহী নগরীতে মঙ্গলবার পর্যন্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ২৪ জন। রাজশাহী জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮৬ জন। এর মধ্যে সর্বাধিক ১৩ জন তানোর উপজেলায়। রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরের তথ্যানুযায়ী মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় নতুন করে ১২৯ জন শনাক্ত এবং মারা গেছেন ২ জন। রাজশাহী বিভাগে করোনায় ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সিরাজগঞ্জে নতুন ৩৩ জনসহ এই জেলায় মোট আক্রান্ত ১৪১ জন। চাঁপাইনবাবগঞ্জে আক্রান্তের গতি কিছুটা মন্থর। এই জেলায় গত তিন দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ৫৭ জনেই রয়েছে। এ ছাড়া পাবনায় ১৩১ জন ও নাটোরে ৬৮ জন শনাক্ত হয়েছে।

বিভাগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জয়পুরহাটের ২১৪ জন রোগীর মধ্যে ১৮৫ জনকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে বগুড়ায় আক্রান্তদের মধ্যে ১১৮ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে বগুড়ায় রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে। ডা. গোপেন্দ্র নাথ আচার্য জানান, রাজশাহী বিভাগে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার জন্য ১ হাজার ৬৭০টি বেড প্রস্তুত আছে।

এ ছাড়াও বিভাগে মোট ২১টি আইসিইউ প্রস্তুত রয়েছে। এই আইসিইউ সুবিধা শুধু রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বগুড়া মোহাম্মদ আলী কোভিড হাসপাতালেই রয়েছে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক বলেছেন, রাজশাহী বিভাগে করোনা প্রতিরোধে নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নাটোরের পরিস্থিতি আশাব্যঞ্জক। সুস্থতার হারও এই তিন জেলায় বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় এই তিন জেলায় নতুন কেউ শনাক্ত হয়নি। তবে বগুড়ার পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগজনক। কোনোভাবেই বগুড়ায় আক্রান্তের হার কমিয়ে আনা যাচ্ছে না। বগুড়ায় আক্রান্তদের ৯৫ ভাগই শহরের বাসিন্দা। ঘনবসতি ও জনসচেতনতার অভাবেই বগুড়ায় আক্রান্তের গতিরোধ করা যাচ্ছে না।

তবে গতিরোধে বগুড়াকে একটা সময়ের জন্য পুরোপুরি লকডাউন করার পরামর্শ এই কর্মকর্তার। উল্লেখ্য, বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় সোমবার থেকেই বিভাগের সব জেলা ও উপজেলার স্বাস্থ্য কেন্দ্রে করোনা চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। রোগীর অবস্থা খারাপ না হলে আক্রান্তদের নিজ নিজ জেলার হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কারও শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে গেলে, শুধু তাদেরকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল অথবা বগুড়া মোহাম্মদ আলী কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তর করা যাবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button