জাতীয়

জমে উঠেছে নারায়ণগঞ্জে নির্বাচন

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের তৃতীয়বারের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। রোববার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ কার্যক্রম বিরতিহীনভাবে চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এবার প্রতিটি কেন্দ্রেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে। সকালে নগরীর বিভিন্ন ঘুরে দেখা যায়, নির্ধারিত সময়ে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। শীতের কুয়াশা উপেক্ষা করে ভোটাররা নিজ নিজ কেন্দ্রে গিয়ে উপস্থিত হন৷ কোনো ঝামেলা ছাড়াই ভোট দিতে পেরেছেন বলে জানান বেশ কয়েকজন ভোটার।

ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের উপচেপড়া ভিড়। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে স্বতস্ফূর্তভাবে একে একে ভোট দিচ্ছেন বিভিন্ন বয়সের নারী পুরুষ ভোটাররা।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, সিটিতে এবার মোট ভোটার রয়েছেন ৫ লাখ ১৭ হাজার ৩৬১ জন। ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন গঠিত হওয়ার পর এটি তৃতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনে সাতজন মেয়র প্রার্থীসহ সাধারণ ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৮৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কোনো ধরনের সহিংসতা ছাড়াই এখন পর্যন্ত প্রচারণাসহ সব কার্যক্রম চালিয়েছেন প্রার্থীরা। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেকটাই সফল নির্বাচন কমিশন ও স্থানীয় প্রশাসন। তবে ভোটের দিন বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা থাকলেও সাধারণ ভোটারদের প্রত্যাশা শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু পরিবেশের। নির্বিঘ্নে ভোট দিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে চান তারা।

এই নির্বাচনে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী ও তৈমূর আলম খন্দকার। গত দুইবারের নির্বাচিত সিটি মেয়র আইভী এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। আর হাতি প্রতীকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি পাওয়া তৈমূর আলম খন্দকার স্বতন্ত্র হিসেবে লড়ছেন। ২০১১ সালে নাসিকের প্রথম নির্বাচনে ভোটগ্রহণের মাত্র ৫ ঘণ্টা আগে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন তৈমূর আলম খন্দকার।

নাসিকের তৃতীয় দফার নির্বাচনে ভোটারদের মধ্যে নারী ও পুরুষের সংখ্যা প্রায় সমান। পুরুষ ভোটার রয়েছেন দুই লাখ ৫৯ হাজার ৮৪৬ জন এবং নারী ভোটার দুই লাখ ৫৭ হাজার ৫১১ জন। এ ছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের চারজন ভোটার রয়েছেন।

২০১৬ সালে নাসিকে মোট ভোটার ছিল চার লাখ ৭৪ হাজার ৯৩১ জন। সে অনুযায়ী নতুন ভোটার ৪২ হাজার ৯৩০ জন। নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের ১৯২টি কেন্দ্রের এক হাজার ৩৩৩ ভোটকক্ষে চলবে ভোটগ্রহণ। এ জন্য নারায়ণগঞ্জে দুই হাজার ৯১২টি ইভিএম মেশিন আনা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে প্রয়োজনের তুলনায় দেড়গুণ ইভিএম রাখা হবে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার। গতকাল শনিবার দুপুর থেকে কেন্দ্রগুলোতে নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানো হয়।

স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ১৯২টি কেন্দ্রের ৩০টি কেন্দ্র অতিমাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ ছাড়া ২৭টি ওয়ার্ডের আটটি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে সার্বিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, সবগুলো কেন্দ্রকেই গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় রেখে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে‘ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন পরিচালনা করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button