জাতীয়

পি কে হালদারের দুই নারী সহযোগী গ্রেপ্তার : র‌্যাব

দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারকারী পি কে (প্রশান্ত কুমার) হালদারের দুই নারী সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। দেশ ত্যাগের সময় এই দুই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছে র‌্যাব। অবশ্য প্রাথমিকভাবে তাদের নাম প্রকাশ না করা হয়নি।

আজ বুধবার (২৪ আগস্ট) সকালে গ্রেপ্তারের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন র‍্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক এএসপি আল আমিন।

তিনি বলেন, পিএলএফএসএল কম্পানির প্রায় দুই শ কোটি টাকা আত্মসাতকারী পিকে হালদার ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার আছেন। তার দুই নারী সহযোগী বাংলাদেশ ছাড়তে চেয়েছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে তাদের ওপর র‍্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি চলছিল। এরই ভিত্তিতে তাদের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে আজ বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান র‍্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

এর আগে গত ১৪ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার অশোকনগরের একটি বাড়ি থেকে পি কে হালদারকে পাঁচ সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বাংলাদেশের এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং অর্থপাচার মামলার পলাতক আসামি পি কে হালদার। তাঁর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা লুটপাট ও পাচারের অভিযোগে অন্তত ৩৫টি মামলা রয়েছে।

এদিকে পি কে হালদারের গ্রেপ্তারের খবরের পর থেকে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ সরকার। এরই অংশ হিসেবে জুন মাসের শুরুর দিকে মামলার নথি সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে সংগ্রহ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি পাঠানো হয়।

এর আগে গত বছরের ১৩ জানুয়ারি ধানমন্ডি এলাকা থেকে পি কে হালদারের বান্ধবী অবন্তিকা বড়ালকে গ্রেপ্তার করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একই বছরের ১৬ মার্চ বিকেলে মতিঝিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন পি কে হালদারের আরেক বান্ধবী ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট নাহিদা রুনাই। দুদকের তথ্য মতে, পি কের টাকা পাচারের অন্যতম সহযোগী ছিলেন নাহিদা রুনাই।

পি কে হালদারের জন্মস্থান পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার দীঘিরজান এলাকায়। নিজ এলাকায় দরিদ্র পরিবারের মেধাবী সন্তান হিসেবে পরিচিতি ছিল তার। বাবা মৃত প্রণবেন্দু হালদার পেশায় ছিলেন দীঘিরজান বাজারের একজন দরজি। মা লীলাবতি হালদার ছিলেন স্কুলশিক্ষক।  দীঘিরজান মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও বাগেরহাটের সরকারি পিসি কলেজ থেকে এইচএসসি পাসের পর বুয়েটের মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি নেন তিনি। এরপর বেক্সিমকো গ্রুপের জুট ফ্যাক্টরিতে চাকরি শুরু করেন।  দুদকের মামলার আগ পর্যন্ত একজন বড় ব্যবসায়ী ও দানশীল মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি।  পরে মানুষ তাঁর প্রতারণার বিষয় জানতে পারে।

সরেজমিনে ও গ্রামবাসীর তথ্যে জানা যায়, পি কের মা লীলাবতি হালদারের নামে কলেজ প্রতিষ্ঠার পর ২০০২ সালে এলাকায় এসেছিলেন। সে সময় স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছে লাঞ্ছিত হওয়ার পর আর আসেননি নিজ গ্রাম দীঘিরজানে। অর্থপাচারের কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পর শিক্ষিকা মা আরেক ছেলে প্রীতিশ হালদারের বাড়ি ভারতের অশোকনগরে চলে যান। পি কে হালদারের আরেক ভাই প্রাণেশ হালদারও কানাডায় অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button