আন্তর্জাতিকজাতীয়

বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ভোটার নিয়েই ত্রিপুরা জয়ের ছক তৃণমূলের

পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের এবারের অন্যতম লক্ষ্য হলো বিজেপি শাসিত ত্রিপুরা রাজ্য জয় করা। এক্ষেত্রে তাদের প্রধান টার্গেট সেখানে বসবাসকারী বাংলাদেশ থেকে যাওয়া মানুষজনের মন জয় করা। ত্রিপুরা জয়ের ক্ষেত্রে তৃণমূল বেশ কয়েকটি বিষয়কে মাথায় রেখে এগিয়ে যেতে চাইছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, বাংলাদেশের আবেগ। ত্রিপুরার মানুষের একটা বড় অংশ বাংলাদেশ থেকে সেখানে গেয়েছে। ফলে তাদের মধ্যে বাংলা নিয়ে আবেগ রয়েছে। সেই আবেগকে পুরো মাত্রায় কাজে লাগাতে চাইছে তৃণমূল।
পাশাপাশি সেখানে শিক্ষার বিষয়টিকে আলাদা গুরুত্ব দিতে চাইছে তৃণমূল নেতৃত্ব। কারণ দেশের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় ত্রিপুরায় শিক্ষার হার বেশ ভালো। শিক্ষা নিয়ে এই রাজ্যের মানুষের মধ্যে একটা অহংবোধ রয়েছে। আর সে কারণেই সম্ভবত পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে ত্রিপুরা জয়ের টিমে রাখা হয়েছে।
ত্রিপুরায় বাম ভোট এখনও একটা ফ্যাক্টর বলে মনে করছে তৃণমূল। গত বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিপুরায় প্রায় ৪২ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন বামেরা। বিজেপি বামেদের থেকে মাত্র ২ শতাংশ ভোট বেশি পেয়ে সরকার গড়েছিল। ফলে ত্রিপুরা জয়ের ক্ষেত্রে বাম বিরোধিতার ওপরে জোর দিতে চাইছে না তৃণমূল শিবির। ত্রিপুরার বহু মানুষ এখনও মনে করে, সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের স্বচ্ছ ইমেজ রয়েছে। তাই বাম ভোটের একটা বড় অংশকে নিজেদের দিকে টেনে আনা তৃণমূলের জন্য যথেষ্ট জরুরি। সেক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের সাবেক সিপিএম সংসদ সদস্যা ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাজে লাগাতে চাইছে তৃণমূল শিবির।
অন্যদিকে উপজাতি অধ্যুষিত পার্বত্য ত্রিপুরায় কৃষক ও শ্রমিক শ্রেণির মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। তাদের মধ্যে সংগঠন তৈরি করার জন্য শ্রমিক সংগঠনে কাজ করার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন নেতৃত্বকেও কাজে লাগাতে চাইছে ঘাসফুল শিবির। একই সঙ্গে ত্রিপুরার ঐতিহ্যবাহী আবেগকেও পুরোমাত্রায়ই কাজে লাগাতে চাইছে তারা।
মহারাজা বীরবিক্রম মাণিক্য, রবিঠাকুরের বিসর্জন, ত্রিপুরেশ^রী মন্দির জাতীয় আবেগকেও কাজে লাগিয়ে এগোতে চাইছে তৃণমূল। যে কারণে ত্রিপুরায় পা রেখেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সোজা চলে যান ত্রিপুরেশ^রী মন্দিরে পুজো দিতে। মূলত বেশ কিছু ইস্যুকে সামনে রেখে রীতিমতো ছক সাজিয়ে পরিকল্পনামাফিক ত্রিপুরা জয়ের পথে হাঁটতে চলেছে তৃণমূল।
তৃণমূল সূত্রে খবর, আগামী ২০২৩ সালে ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অভিষেকের ওপর। মূলত একদিকে অভিষেকের তরুণ বয়স এবং হার না মানা মনোভাব, অন্যদিকে বাংলার নির্বাচনে বিজেপির তরফে তাকে টার্গেট করা হলেও ঠান্ডা মাথায় লড়ে সাফল্য আদায় করে নেওয়াÑ এই দুটো বিষয়কে সামনে রেখেই তাকে বেছে নেওয়া হয়েছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button