জাতীয়

আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ সব দলকে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ

প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে নাম প্রস্তাবের জন্য ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে চিঠি পাঠিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এ ছাড়া অনুসন্ধান কমিটির সঙ্গে বৈঠকে যোগদানের বিষয়ে ৬০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে চিঠি দেওয়া শুরু করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

গতকাল মঙ্গলবার অনুসন্ধান কমিটির দ্বিতীয় বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় দেশের নিবন্ধিত ৩৯টি দলকে চিঠি দিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে নাম প্রস্তাব করার জন্য।

এ ছাড়া একই বৈঠকে ৬০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে অনুসন্ধান কমিটি বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৬০ জনের মধ্যে শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, আইনজীবী, সমাজকর্মী, সাবেক উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষজন রয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বুধবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ সব দলকে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। তাদের কাছে সিইসি ও ইসির জন্য ১০ জনের নাম চাওয়া হয়েছে। তবে বিএনপির তরফ থেকে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চিঠি পায়নি বলে গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘প্রথমে আওয়ামী লীগকে পাঠানো হয়েছে দ্বিতীয় চিঠি বিএনপিকে পাঠানো হয়েছে। বুধবার দুপুর দেড়টার মধ্যে তাদের দলীয় কার্যালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বুধবার রাত পৌনে ৮টার দিকে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা এখনো চিঠি পাইনি। তবে পেয়ে যাবো বলে আশা করছি। ’

অন্যদিকে কোন ৬০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে চিঠি পাঠানো হচ্ছে সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘প্রথমে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলকে চিঠি দেয়া শেষ করেছি। এখন বিশিষ্ট জনদের চিঠি দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে অনেককে হোয়াটসঅ্যাপে চিঠি পাঠানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। তিনি করোনায় আক্রান্ত বলে জানিয়েছেন। শনিবার সুস্থ বোধ করলে তিনি বৈঠকে যোগ দেবেন। তার হোয়াটসঅ্যাপে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবারের মধ্যে আশা করছি সবার কাছে চিঠি পাঠানো সম্ভব হবে।

তিনি আরো বলেন,  রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সময় কম থাকায় আগে তাদের চিঠিগুলো পাঠানো হয়েছে। বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরীসহ অনেককে চিঠি পাঠানো হচ্ছে।

অন্যদিকে বুধবারও ইমেইল ও হাতে হাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনার হওয়ার জন্য আবেদন এসেছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সোমবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর বুধবার বিকাল পর্যন্ত আড়াই শর মতো আবেদন জমা পড়েছে বলে জানা গেছে। যাদের মধ্যে সাবেক বিচারক, সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা, সচিব, যুগ্ম সচিবরা রয়েছেন। এ ছাড়া কিছু তরুণও ইলেশন কমিশনার হওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। যাদের বয়স ৫০ বছর হয়নি। অথচ সরকারের আইনে বলা হয়েছে ৫০ বছরের বেশি হওয়া লাগবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার হওয়ার জন্য।

বুধবার দুপুর ২টার দিকে একজন আইনজীবী ইলেকশন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার জন্য হাতে হাতে আবেদন করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা রিসিভ করেন।

সূত্র জানায়, আগামী শনিবার দুপুর পৌনে ১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত তিনটি ভাগে ২০ জন করে বিশিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলবে অনুসন্ধান কমিটি। এর মধ্যে একটি ভাগে থাকবে সাংবাদিকদের জন্য। দেশের কয়েকজন সম্পাদকসহ বিশিষ্ট সাংবাদিকদের ডাকা হবে বৈঠকে অংশ নেওয়ার জন্য। এতে সাংবাদিকরা তাদের মতামত ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নাম প্রস্তাব করতে পারবেন।

স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদ বুধবার রাতে কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন, বুধবার দুপুরে প্রথমে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ফোনে যোগাযোগ করা হয়। পরে হোয়াটসঅ্যাপে চিঠি পাঠানো হয়। নাগরিক সংগঠন সুজন এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারও চিঠি পেয়েছেন কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন।

আবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে জানান, গত রবিবার রাতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর সোমবার প্রথম দিন ১০০ মতো আবেদন এসেছিল। মঙ্গলবার আরো এক শর মতো আবেদন জমা পড়েছে। বুধবার ৫০টির মতো আবেদন জমা পড়ে। সব মিলিয়ে বুধবার পর্যন্ত আগাই শর মতো ব্যক্তির আবেদন জমা পরে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button