আন্তর্জাতিক

ইতালির উত্তরাঞ্চলে দেড় কোটি মানুষ কোয়ারেনটাইনে

ইতালিতে করোনাভাইরাস মহামারী আকারে যাতে ছড়িয়ে না পড়ে এ জন্য দেশটির প্রধানমন্ত্রী কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন।

দেশটিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে এর উত্তরের শিল্পাঞ্চল- মিলানের আশপাশের এলাকা, লম্বার্ডি এবং ভেনিসের কাছে ভেনেটো শহরে প্রাণঘাতী এ ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে।

এ কারণে ইতালির প্রধানমন্ত্রী লম্বার্ডি অঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলীয় আরও ১৪টি প্রদেশকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন।

এতে ওই এলাকার এক কোটি ৬০ লাখ মানুষকে কার্যত কোয়ারেন্টাইনের মতো বন্দিদশায় কাটাতে হবে।

এ নির্দেশ কার্যকরের জন্য ইতিমধ্যে দেশটির সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রশাসনকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এপ্রিল পর্যন্ত ওই অঞ্চলগুলোতে এ অচলাবস্থা থাকবে। এ সময় সেখান থেকে কাউকে বাইরে আসতে দেয়া হবে না, এমনকি সেখানে কাউকে প্রবেশও করতে দেয়া হবে না।

চীনের হুবেইপ্রদেশকে যেভাবে দেশটি থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে- অনেকটা সে ব্যবস্থাই নেয়া হচ্ছে ইতালির উত্তরাঞ্চলে।

করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়ানোর পর ইতালি এ পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। গর ২৪ ঘণ্টায় ইউরোপের এ দেশটিতে মারা গেছেন ৩৯ জন।

ইতালির সরকারি কর্মকর্তারা জনসাধারণকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছেন এবং রোগের বিস্তার রোধে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন।

দেশটির স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় ও সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে এবং বেশ কয়েকটি পাবলিক ইভেন্ট বাতিল করা হয়েছে।

এ ভাইরাস বিস্তারের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা ১৪ প্রদেশ ও একটি অঞ্চলের দেড় কোটিরও বেশি বাসিন্দাকে আলাদা করে রাখা হচ্ছে।

ফলে ইতালি অর্থনৈতিক মন্দার মুখে পড়তে পারে। মিলানে ক্যাফেগুলো জনশূন্য থাকায় এবং অনেক হোটেলের বুকিং বাতিল হয়ে যাওয়ার কারণে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির শিকার হয়েছেন।

এর আগে ইইউর স্বাস্থ্য কমিশনার স্টেলা কিরিয়াকাইডস রোমে ইতালির স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বলেছেন, এটি উদ্বেগজনক একটি পরিস্থিতি, তবে আমাদের অবশ্যই আতঙ্কিত হয়ে হাল ছেড়ে দেয়া ঠিক হবে না।

এই ভাইরাসটি সম্পর্কে এখনও অনেক বিষয় অজানা রয়ে গেছে। বিশেষত এর উৎস এবং এটি কীভাবে ছড়িয়েছে সে বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি।

২০১৯ সালের শেষের দিকে এ ভাইরাসটি চীনের হুবেইপ্রদেশের রাজধানী উহানের একটি বুনোপশুর বাজার থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ৩ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে মারা গেছে। সব চেয়ে বেশি মারা গেছে চীনের হুবেই প্রদেশেই।

চীনের বাইরে ইতালির পর সব চেয়ে বেশি মারা গেছে ইরানে। সেখানে দেড়শরও বেশি মানুষ এরই মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন করোনাভাইরাসে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button