খুলনা বিভাগসারাদেশ

ঋষিপল্লীর ধর্ষণের ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও মামলা হয়নি বাসিন্দাদের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ

যশোর প্রতিনিধি: যশোর মণিরামপুর পৌর এলাকার মহাদেবপুর ঋষি পল্লীর ৮ সন্তানের মা হতদরিদ্র বৃদ্ধা নারীকে গলায় ছুরি ঠেকিয়ে হত্যার হুমকী দিয়ে ধর্ষণের ঘটনা ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও অজ্ঞাত কারণে এখনও মামলা হয়নি।

এমনকি লোমহর্ষক এমন ঘটনা ঘটিয়ে একাধিক বিয়ের নায়ক ধর্ষক বাবু বিহারী প্রকাশ্যে থাকায় ঋষি পল্লীর বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর বললেন, বিষয়টি গ্রাম্য মিমাংসার অযোগ্য অপরাধ হওয়ায় স্থানীয়ভাবে শালিসী সভা করা হয়নি।
অভিযোগ রয়েছে চলতি মাসের ৩ জুলাই দুপুরে মহাদেবপুর ঋষি পল্লীর হতদরিদ্র ওই বৃদ্ধা নারী পাশ্ববর্তী মাঠে শাক তুলতে যায়। এসময় মাঠের মধ্যে একটি আম বাগানে তাকে ধরে নিয়ে গলায় ছুরি ঠেকিয়ে ধর্ষণ করে একই এলাকার বাবু বিহারী ওরফে বাবু বাবুর্চি নামের এক নরপশু। ঘটনার পর ওই নারী বাড়ি ফিরলেও বয়ষ্ক সন্তানদের কথা চিন্তা করে এবং লোকলজ্জায় প্রথমে বিষয়টি কাউকে বলেননি। এক পর্যায় ঘটনার ৫/৬ দিন পর তিনি বিষয়টি ঋষি পল্লীর বাসিন্দাদের কাছে খুলে বলেন। জানাযায়, ওই ঋষি পল্লীর বাসিন্দাদের মধ্যে মতবিরোধ দু’টি পক্ষ থাকলেও ওই বৃদ্ধা নারীর উপর নির্যাতনের ঘটনা শুনে অধিকাংশ নারী-পুরুষ ক্ষোভে ফেঁটে পড়েন। বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা সরেজমিনে ওই ঋষি পল্লীতে যান। এসময় ওই পল্লীর ৩০/৪০ জন বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে আসেন লোমহর্ষক নির্যাতনের শিকার ওই বৃদ্ধা নারী। তিনি সাংবাদিকদের সামনে তাকে হত্যার ভয় দেখিয়ে তার উপর পাষবিক নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন স্বামীহারা ওই নারী। এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত থানায় মামলা করা হয়নি কেন জানতে চাইলে নির্যাতনের শিকার ওই নারীসহ অনেকেই বলেন ভয়ে ও লোকলজ্জায় বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়নি।

এ বিষয়ে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর গোপাল মল্লিক জানান, যে ঘটনা ঘটেছে তা গ্রাম্য মিমাংসার অযোগ্য অপরাধ। বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করতে পৌর মেয়র মহোদয়কে জানানো হয়েছে। এদিকে, বৃদ্ধা নারী ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে সপ্তাহ খানেক আগে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বিষয়টি প্রকাশ পায়। অভিযোগ উঠেছে ঘটনার পর বিষয়টি জানাজানি হতে থাকলে ধর্ষক বাবু বিহারী প্রশাসনসহ অন্যান্য স্থান ম্যানেজ করতে স্থানীয় একটি চক্রের সাথে মোটা অংকের অর্থ লেনদেন করেন। এদিকে বয়ষ্ক নারী ধর্ষণের ঘটনা পুলিশ অবগত হলেও ধর্ষককে আটক অথবা অসহায় ভিকটিমকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করতে পুলিশ এখনও পর্যন্ত ওই ঋষি পল্লীতে যায়নি। থানার ওসি (তদন্ত) শিকদার মতিয়ার রহমান জানান, বিষয়টি তিনি লোকমুখে শুনেছেন। জানতে চাইলে মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সার্বিক রফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি তিনি অবগত হয়েছেন। তবে সম্প্রতি বড় একটি মার্ডারের ঘটনায় বিভিন্ন স্থানে অভিযানে থাকার কারণে উক্ত বিষয়ে আইনী প্রক্রিয়ায় যাওয়া সম্ভব হয়নি।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button