আন্তর্জাতিক

কলকাতায় সমালোচনার মুখে বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস

ভারতে করোনা সতর্কতায় দেশজুড়ে সভা-সমাবেশ ও অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার আচরণবিধি বলবৎ থাকার মধ্যেই নিজেদের দফতরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ পালনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে সমালোচনার মুখে পড়েছে বাংলাদেশের উপ-দূতাবাস। মঙ্গলবারের সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বক্তৃতা দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের দুই প্রবীণ মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনের পরোয়া না-করেই সেখানে গান গেয়েছেন অঞ্জন দত্ত। প্রশ্ন উঠেছে, অঞ্জন দত্তের মতো জনপ্রিয় গায়ক এমন ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ আচরণ করলে, সাধারণ মানুষের মধ্যেও কি তার প্রভাব পড়বে না?

অঞ্জন দত্তের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে প্রথমে তিনি বিষয়টিকে গুরুত্বই দিতে চাননি। স্বীকার করেন, সে দিন অস্ট্রেলিয়া থেকে এসেই বাংলাদেশ উপদূতাবাসের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন তিনি। তবে পাল্টা প্রশ্ন করেন, “কী হয়েছে?”

এর আধ ঘণ্টা পরে ফের ফোন করে অঞ্জন দাবি করেন— মঙ্গলবার নয়, সপ্তাহ খানেক আগে তিনি অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরেছেন। বিমানবন্দরে নিয়মমাফিক স্বাস্থ্য পরীক্ষাও হয়েছে। তার পরে ছোটখাটো অনুষ্ঠানেও যাওয়া যাবে না, এটা তিনি জানতেন  না।

অঞ্জন বলেন, “আমি সাড়ে ৮টা নাগাদ যখন যাই, জনা দশেক লোক ছিলেন সেখানে। আমি গাইনি, মিনিট দশেকের মধ্যেই বেরিয়ে আসি।”

তবে অনুষ্ঠানের পরে বাংলাদেশ উপদূতাবাসের প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বিশিষ্ট শিল্পী অঞ্জন দত্ত চমৎকার সঙ্গীত পরিবেশন করে দর্শকদের মুগ্ধ করেন’।

করোনা-সতর্কতায় ঢাকায় মুজিব বর্ষের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে জন সমাবেশ এড়িয়ে চলা হলেও কলকাতায় কেন তা করা হলো না, সে প্রশ্নের উত্তরে ডেপুটি হাই কমিশনার তৌফিক হাসান বলেন, “আমরাও অনুষ্ঠান কাটছাঁট করেছি। যতটুকু না-করলে নয়, ততটুকুই করেছি। জাতির পিতার জন্মশতবর্ষে আমাদের অনেক প্রস্তুতি ছিল। ঠিক ছিল রবীন্দ্রসদনে আড়ম্বরে হবে এই অনুষ্ঠান। শেষ মুহূর্তে তা নিজেদের দফতরে সরিয়ে এনে একান্ত ঘরোয়াভাবে পালন করা হয়েছে। তার পরেও এ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে, সেটাও সঙ্গত। সব দেশ এক হয়ে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছে। আমি বলব, এই লড়াইয়ে কোথাও এতটুকু খামতি থাকা উচিত নয়।”

হাসান জানান, শেখ মুজিবের রাজনৈতিক জীবনে কলকাতার ভূমিকা বিরাট। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা তোলা হয় কলকাতার এই উপ-দূতাবাসে। তাই আবেগের একটা বিষয় ছিল। এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রত্যেককে স্যানিটাইজ়ারে হাত ধুয়ে ঢুকতে হয়েছে। করমর্দনও সচেতনভাবে এড়িয়ে চলা হয়েছে।

ডেপুটি হাই কমিশনার বলেন, “শেখ মুজিবকে নিয়ে অঞ্জন দত্তের লেখা ও সুর করা নতুন একটি গান প্রকাশ হয় এ দিনের অনুষ্ঠানে। তিনি যে বিদেশ থেকে এসেই অনুষ্ঠান করছেন, তা আমাদের জানা ছিল না। এ জন্য দুঃখপ্রকাশ করছি।” -আনন্দবাজার।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button