ধর্ম

অধিক সম্মানের পাত্র যে তিন শ্রেণির মানুষ

মানবিক গুণাবলির অন্যতম একটি হলো মানুষকে সম্মান করা। ইসলামে অন্যের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই যে যতটুকু সম্মানের যোগ্য তাকে অবশ্যই ততটুকু সম্মান দিতে হবে। দুনিয়ায় কিছু মানুষকে অধিক সম্মানের পাত্র বানানো হয়েছে। যারা তাঁদের সম্মান করবে, তারা আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে একধাপ এগিয়ে যাবে।

হজরত আবু মুসা আল আশআরি (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই বৃদ্ধ মুসলিমকে সম্মান করা, কোরআনের ধারক-বাহক ও ন্যায়পরায়ণ শাসকের প্রতি সম্মান দেখানো মহান আল্লাহর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের অন্তর্ভুক্ত। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৪৩)

বৃদ্ধদের সম্মান করা : ইসলাম বড়দের সম্মান করার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে। বড় ও ছোটর অনেক দিক আছে। সবচেয়ে প্রকাশ্য দিক, বয়সের দিক থেকে বড়-ছোট। আল্লাহ তাআলা পৃথিবীতে কাউকে আগে পাঠান, কাউকে পরে। তাই বয়সের দিক থেকে কেউ বড়, কেউ ছোট। সেদিক থেকে বিবেচনা করলে বৃদ্ধরাই সমাজে সবচেয়ে বড়। তাঁরাই সবচেয়ে বেশি সম্মান পাওয়ার যোগ্য। আবার বড়-ছোটর তারতম্য কখনো শক্তি-সামর্থ্যের দিক থেকেও হয়। কখনো আবার জ্ঞান-প্রজ্ঞার দিক থেকে। কখনো বা পদ ও ক্ষমতার দিক থেকে। পৃথিবীতে সুন্দরভাবে বাঁচতে হলে বড়কে সম্মান ও ছোটকে স্নেহ করতে হবে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে আমাদের ছোটদের দয়া করে না ও আমাদের বড়দের হক আদায় করে না, সে আমাদের (দলভুক্ত) নয়। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯৪৩)

কোরআনের ধারক-বাহক : হজরত মোল্লা আলী কারি (রহ.) বলেন, কোরআন ধারক-বাহক বলতে এখানে বোঝানো হয়েছে হাফেজ, কারি, মুফাসসিরদের। এককথায় বলা যায়, হক্কানি আলেমরা, যাঁরা কোরআনের খেদমতে নিজেদের জীবনকে উৎসর্গ করে দিয়েছেন।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, কোরআন কিয়ামত দিবসে হাজির হয়ে বলবে, হে আমার প্রভু! একে (কোরআনের বাহককে) অলংকার পরিয়ে দিন। তারপর তাকে সম্মান ও মর্যাদার মুকুট পরানো হবে। সে আবার বলবে, হে আমার প্রভু! তাকে আরো পোশাক দিন। সুতরাং তাকে মর্যাদার পোশাক পরানো হবে। সে আবার বলবে, হে আমার প্রভু! তার প্রতি সন্তুষ্ট হোন। কাজেই তিনি তার ওপর সন্তুষ্ট হবেন। তারপর তাকে বলা হবে, তুমি এক এক আয়াত পাঠ করতে থাক এবং ওপরের দিকে উঠতে থাক। এমনিভাবে প্রতি আয়াতের বিনিময়ে তার একটি করে সওয়াব (মর্যাদা) বাড়ানো হবে। (তিরমিজি, হাদিস : ২৯১৫)

ন্যায়পরায়ণ শাসক : মহান আল্লাহ কঠিন কিয়ামতের দিন যে সাত ধরনের লোককে তাঁর আরশের ছায়ায় আশ্রয় দেবেন তার মধ্যে একশ্রেণির লোক হবে ন্যায়পরায়ণ শাসক। (বুখারি, হাদিস : ১৪২৩) অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) আরো ইরশাদ করেছেন, তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। ১. ন্যায়পরায়ণ শাসকের দোয়া। ২. রোজাদারের ইফতারের সময়কালীন দোয়া। ৩. মজলুমের দোয়া। (তিরমিজি, হাদিস : ২৫২৬)

তাই ন্যায়পরায়ণ শাসকদের অবশ্যই সম্মান করতে হবে। তাঁদের করা আইন যদি কোরআন ও হাদিসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয়, তবে তা অবশ্যই মেনে চলতে হবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button