খেলা

বাংলাদেশ সর্বোচ্চ কত রান তাড়া করে ম্যাচ জিতেছিল?

জিততে হলে শেষ দিন বাংলাদেশকে করতে হবে ২৬২ রান। হাতে আছে ৪ উইকেট। ১২৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে রীতিমতো হারের শঙ্কায় বাংলাদেশ। জিততে হলে রেকর্ড গড়ে জিততে হবে বাংলাদেশকে। তবে খেলা অনেকটা বাংলাদেশের হাতছাড়া হয়ে গেছে। এছাড়া বৃষ্টি বাঁচাতে পারে বাংলাদেশকে। শেষদিন যদি বৃষ্টি নামে অনবরত তবে ম্যাচ ড্র করার সুযোগ থাকছে বাংলাদেশের। আবহাওয়া অফিস বলছে সোমবারও বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে চট্টগ্রামে।

৩৯৮ রানের বিশাল লক্ষ্য। এতো বড় লক্ষ্য তাড়া করে কখনোই জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ১৪২ বছরের টেস্ট ইতিহাসে এর চেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার ঘটনা আছে আর মাত্র ৪টি।

আর বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড লিডের ধারেকাছেও নেই। ২০০৯ সালে গ্রানাডায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২১৭ রান তাড়া করে জিতেছিল বাংলাদেশ।

যদি পরিসংখ্যানটা মেলাতে হয় চট্টগ্রামের মাঠ নিয়ে, তাহলে আরও হতাশার খবর আছে সাকিবদের জন্য। চট্টগ্রামে কখনোই রান তাড়া করে টেস্ট জিততে পারেনি বাংলাদেশ। এমনকি চতুর্থ ইনিংসে ৩৩১ রানের বেশি করতেও পারেনি। অর্থাৎ আফগানিস্তানকে হারাতে হলে রেকর্ড বই রীতিমতো ওলটপালট করতে হবে সাকিবদের।

প্রথমে লিটন দাস, এরপর ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পেয়ে তিনে নামা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, বিপদে দলের দেয়াল নামে পরিচিত মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হক, সাদমান ইসলাম ও সর্বশেষ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। অল্প সময়ের ব্যাবধানে এই ছয় ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে স্বাগতিক বাংলাদেশ। মোসাদ্দেকের পর উইকেটে এসে বেশ স্বাচ্ছন্দেই খেলতে থাকা মুশফিকুর রহিম এলবিডাব্লিউ-এর ফাঁদে পড়েন আফগান অধিনায়ক রশিদ খানের বলে। রিভিউ নিলেও আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারেননি তিনি। ২৫ বলে ২৩ রানে ফেরেন তিনি।

এরপর ৮ বলে ৩ রান করে একইভাবে রশিদ খানের বলে এলবিডাব্লিউ হন মুমিনুল হক। তিনি অবশ্য রিভিউ নেননি।

বৃষ্টির কারণে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু হলো প্রায় দুই ঘণ্টা পর। যদিওবা সেটা লাঞ্চ পর্যন্ত গেল, মধ্যাহ্নবিরতি শেষে আবারো বৃষ্টির কারণে দ্বিতীয় দফায় খেলা বন্ধ। অবশেষে ১টা ৪০-এর বদলে লাঞ্চের পর দ্বিতীয় সেশনের খেলা শুরু হলো সোয়া ২টায়। কিন্তু খেলা শুরু হতে না হতেই আউট হলেন লিটন দাস। দ্বিতীয় উইকেটে বড় জুটি গড়ার লক্ষ্যে তিন নম্বরে নেমে থিতু হতে পারলেন না মোসাদ্দেক হোনে সৈকত। দ্রুত প্রথম উইকেট হারানোর পর উচ্চাভিলাষী অপ্রয়োজনীয় শট খেলতে গিয়ে আউট হন তিনি।

আফগান বাহাতি স্পিনার জহির খানের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আসগর আফগানের হাতে তালুবন্দী হন মোসাদ্দেক। ১৭ বলে ১২ রান করে প্যাভিলয়নে ফেরেন তিনি। এর আগে একই বোলারের বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে সাজ ঘরে ফেনের ওপেনার লিটন দাস। ৩০ বল খেলে মাত্র ৯ রান করেন তিনি। দলীয় ১০৬ রানের মাথায় দেখে শুনে খেলতে থাকা সাদমান ইসলাম ব্যক্তিগত ৪১ রানে মোহাম্মদ নবীর এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়লে আরো চাপে পড়ে বাংলাদেশ। ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসের মতোই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে ৭ রান করে ফেরেন মাহমুদুল্লাহ। ১২৫ রানে মূল সারির ৬ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ম্যাচ থেকে অনেকটাই ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ।

৪৪.২ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৩৬ রানে চতুর্থ দিন শেষ করে বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসান (৩৯) ও সৌম্য সরকার (০) রানে অপরাজিত রয়েছেন।

শেষদিন বাংলাদেশকে জিততে হলে করতে হবে ২৬২ রান। হাতে আছে মাত্র ৪ উইকেট।

এর আগে চট্টগ্রাম টেস্ট জিততে বাংলাদেশকে পাহাড়সম লক্ষ্য ছুড়ে দেয় আফগানিস্তান। দ্বিতীয় ইনিংসে আফগানরা ২৬০ রানে গুটিয়ে যাওয়ায় দলটি লিড পায় ৩৯৭ রানের। একমাত্র এই টেস্ট জিততে বাংলাদেশকে করতে হবে ৩৯৮ রান।

বৃষ্টির বাধায় রোববার চতুর্থ দিনের খেলা শুরু হয়েছে নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই ঘণ্টা পর। খেলতে নেমে তড়িঘড়ি করে রান তোলার অ্যাপ্রোচ দেখা যায় আফগানদের মধ্যে। তেমন তাড়ায় একটি রান আউট মিস করেছিলেন মুশফিক। পরের বার আর সুযোগ হাতছাড়া করেননি তিনি। রান আউট করেন ইয়ামিন আহমাদজাইকে। অবশ্য ততক্ষণে আফগানদের লিড চলে গেছে ৩৯৭ রানে। পরে নতুন ব্যাটসম্যান জহির খানও টিকতে পারেননি আর। মেহেদী মিরাজ তাকে শর্ট লেগে তালুবন্দী করান মুমিনুল হকের। দ্বিতীয় ইনিংসে আফগানিস্তান গুটিয়ে যায় ২৬০ রানেই। ৪৮ রানে অপরাজিত থাকেন আফসার জাজাই।

দ্বিতীয় ইনিংসে সাকিব ৫৮ রানে তিনটি উইকেট নিয়েছেন। দুটি করে নিয়েছেন মেহেদী মিরাজ, তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসান।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button