রংপুর বিভাগসারাদেশ

বিএসএফের গুলিতে নিহত, গোপনে লাশ দাফন

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের রৌমারী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে হাসিনুর রহমান (২০) নামের এক যুবক নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বাংলাদেশি একদল চোরাচালানী সীমান্তের কাঁটাতার বেড়ার ওপর দিয়ে বিশেষ কায়দায় অবৈধ পথে গরু পাচার করার সময় ভারতের শিশুমারা বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা তাদেরকে লক্ষ করে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে। গুলিতে ওই যুবক ঘটনাস্থলেই মারা যায়। মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) রাতে উপজেলার ইটালুকান্দা সীমান্ত এলাকার চুলকানির খাল নামক স্থানে ওই ঘটনা ঘটে।
সীমান্তের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সঙ্গী চোরাচালানিরা লাশ কাঁধে করে নিহতের বাড়িতে পৌঁছে দেয়। পরে নিহতের স্বজনরা পরেরদিন বুধবার (১২ আগস্ট) গোপনে সকাল ৮টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে গাছবাড়ি পূর্বমাঝের চর নামক ফাঁকা জায়গায় গোপনে লাশ দাফন করে আত্মগোপনে চলে যায়। নিহত হাসিনুর দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের ইটালুকান্দা গ্রামের আবুল হোসেনের পুত্র।
বৃহষ্পতিবার সরেজমিনে বাড়িতে গিয়ে নিহতের স্বজনদের কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। জনমনে আলোচনা চলছে পুলিশ ও বিজিবি জোয়ানদের ভয়ে নিহতের স্বজনরা পালিয়ে রয়েছে। প্রতিবেশি জাহাঙ্গীর আলম ও আব্দুর রাজ্জাক জানান, বিএসএফ’র গুলিতে নিহত হওয়ার খবরটি আমরাও পেয়েছি। কিন্তু লাশ কোথায় কখন দাফন করেছে তা আমরা জানি না। যে স্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে সেখানের বাসিন্দা আম্বিয়া খাতুন নামের এক নারী বলেন, ‘১০/১২ জন আইসা এখানে লাশ দাফন করে চলে গেছে।’
দাঁতভাঙ্গা ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক জানান, ইটালুকান্দা সীমান্তের চুলকানির খালে আন্তর্জাতিক মেইন পিলার ১০৫২-১০৫৩ এর মাঝামাঝি কাঁরটাতারের বেড়ার ওপর দিয়ে বাঁশের আড়কির মাধ্যমে গরু পারাপারের সময় বিএসএফের গুলিতে হাসিনুর রহমান নামের এক চোরাকারবারি মারা যাওয়ার খবর এলাকার সবাই জানে। কিন্তু নিহতের স্বজনরা পালিয়ে থাকার কারনে বিষয়টি স্পস্ট করে কেউ বলছে না।
এদিকে বিএসএফ’র গুলিতে বাংলাদেশি মারা যাওয়ার খবরে থানা পুলিশ ও বিজিবি জোয়ানরা ছুটে আসে। নিহত স্বজনদের না পেয়ে লাশের অনসন্ধান চালানোর পর বিকাল ৩টার দিকে গাছবাড়ি মাঝের চরে লাশের কবর পাওয়া যায়। তবে আইনি জটিলতায় কবর থেকে লাশ তুলতে না পেরে কবরের পাশে পুলিশের পাহাড়া বসানো হয়। আদালতের অনুমতি পেলে লাশ উঠানো হবে এবং লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে ৩৫ বিজিবি জামালপুর ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক এসএম আজাদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, লাশের ময়না তদন্ত ছাড়া বিএসএফ’র গুলিতে নিহত কিনা তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। নিহতের পরিবারেরও কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’
রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান ইনাম জানান, থানায় ইউডি মামলা হয়েছে। কবর থেকে লাশ উত্তোলনের জন্য বিজ্ঞ আদালতের অনুমতির প্রার্থনা করা হয়েছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button