বরিশাল বিভাগসারাদেশ

কলাপাড়ার রাবনাবাদ নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলন

 

কলাপাড়া(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি॥ নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ভাঙ্গনের মুখে পরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মানচিত্র ক্রমশঃ ছোট হয়ে যাচ্ছে।  ফলে নদীর পাড় ভেঙ্গে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি, বসতভিটা। স্বকীয়তা হারিয়ে শ্রীহীন হয়ে পরছে উপজেলার রাবনাবাদ নদী। গৃহহীন হচ্ছে নদীপাড়ের বাসিন্দারা। আর নদীতে অবৈধ ভাবে ড্রেজার চালানোর কারনে এলাকার জেলেদের জীবিকা এখন হুমকির মুখে। ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে চলাচলের রাস্তা-
কালভার্টসহ সংরক্ষিত বনাঞ্চল।  রাবনাবাদ নদী থেকে প্রতিনিয়ত অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে এভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে উপকূলীয় নদী এবং নদীপাড়ের পরিবেশ ও জীবন-জীবিকা।
দীর্ঘদিন ধরে উপকূলীয় এ এলাকা এমন ক্ষতির মুখে থাকলেও প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ীদের ভয়ে প্রতিবাদ করা তো দূরের কথা, মুখ খুলতেও সাহস করছেনা ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। তাই কঠোর আইনের প্রয়োগের মাধ্যমে উপকূলীয় এ জনপদ রক্ষায় দ্রুত বালু উত্তোলন বন্ধ করে নদী পাড়ের মানুষের জীবিকা ও সম্পদ রক্ষায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ভূক্তভোগী এলাকাবাসী।
সরজমিনে দেখা যায়, পায়রা বন্দরের প্রবেশ মুখ তথা রাবনাবাদ নদী থেকে প্রতিদিন ১০/১৫ টা ড্রেজার অব্যাহতভাবে বালু উত্তোলন করছে। বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান স্থানীয় প্রভাবশালীদের সাথে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রতিদিন এ বালু উত্তোলন কাজজ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে চরম ঝুঁকির মুখে পড়েছে ভাঙ্গন কবলিত কলাপাড়ার লালুয়া এবং ধুলাসার ইউনিয়নের নদীপাড়ের বসতভিটা, ফসলি জমি। ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে পড়ছে ওই এলাকার চলাচলের রাস্তা কালভার্টসহ নদী পাড়ের ম্যানগ্রোভ প্রজাতির সংরক্ষিত বনাঞ্চল।
রাবনাবাদ নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করা লালুয়া ইউনিয়নের জেলে আনোয়ার হোসেন বলেন, নদীতে যেভাবে ড্রেজার মেশিন চালানো হয় তাতে মাছ এই নদীতে থাকতে পারেনা। মেশিনের চালানোর শব্দ ও বালু লোট-আনলোট করার নৌযান সার্বক্ষণিক চলাচলের ফলে মাছ এই নদী থেকে সাগরে চলে যায়। আমাদের ছোট ট্রলার বা নৌকা নিয়ে সাগরে গিয়ে মাছ ধরতে পারিনা। তাই পেশা পরিবর্তন করতে চাই।
ধুলাসার ইউনিয়নের তরুন সমাজসেবক সবুজ আলম জানান, নদী হতে সনাতনী পদ্ধতিতে বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙ্গন কবলিত এই এলাকায় হঠাৎ করে নদী ভাঙ্গন বেড়ে গেছে । নদীপাড়ের ফসলি জমি, রাস্তাঘাট ভেঙ্গে যাচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, চিহ্নিত বালুমহালের বাইরে বালু উত্তোলনকারীদের ধরে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জেল জরিমানাসহ নিয়মিত মামলা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও যারা অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের চেস্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা
হবে।
নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীরা সারা দেশেই সক্রিয়। এদের বিরুদ্ধে প্রশাসন সক্রিয় রয়েছে। আইনী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এখানকার বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধেও কঠোর আইনী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button