স্বাস্থ্য

করোনা আরো বিপজ্জনক হচ্ছে

জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে করোনা কি আরো ভয়ংকর হতে পারে?

জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে করোনাভাইরাস আরো ভয়ংকর হয়ে উঠছে। প্রধানত দুটি প্রজাতিতে নিজের বিবর্তন ঘটাচ্ছে করোনা। গবেষকরা এদের নাম দিয়েছেন এস আর এল।

এই ‘এল’ প্রজাতির ভাইরাস আরো মারাত্মক আকার নিচ্ছে; এর সংক্রমণের হারও অনেক বেশি। ২০০২ সালের সার্সের সঙ্গে এর ৭০-৮০ ভাগ জিনগত মিল রয়েছে। মাত্র চারটি অ্যামাইনো এসিডের পার্থক্য রয়েছে। এর ভেতরে যে জিন দায়ী তার ভেতরে হয়েছে এই পরিবর্তন, যাকে বলে মিউটেশন। ফলে আরো বিপজ্জনক হয়ে উঠছে করোনা।

চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা এ জন্য বেশ চিন্তিত। তাঁদের বক্তব্য, করোনা আর কী কী পরিবর্তন করবে তা বোঝা যাচ্ছে না। জিনগত এই পরিবর্তনের ফলে ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো এই ভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরিতেও বেগ পেতে হচ্ছে।

হাঁচি-কাশির ড্রপলেট এত ভয়ংকর কেন?
আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির সময় তার নাক ও মুখ দিয়ে যে জলীয় কণা বের হয়ে আসে, তাকে ড্রপলেট বলা হয়। এটা বাতাসে মিশে এর মাধ্যমে কোভিড-১৯-এর জীবাণু ছড়াতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মাত্র একবারের কাশি থেকেই বের হতে পারে এ রকম তিন হাজার ড্রপলেট। কিছু ক্ষুদ্র কণা বাতাসেও থেকে যেতে পারে। ভাইরাসটি লেগে আছে—এ রকম কোনো বস্তু স্পর্শ করার পর হাত দিয়ে যদি মুখ স্পর্শ করলে ভাইরাসটি ছড়াতে পারে।

করোনা ভাইরাসের জীবাণু মাটিতে কতক্ষণ বাঁচতে পারে? পৃষ্ঠ বা তল, শুষ্ক দ্রব্য বা জামায় তা কতক্ষণ স্থায়ী হয়?
করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তি যদি কোনো নির্জীব জিনিস স্পর্শ করে এবং ওই জিনিসের সংস্পর্শে যদি কোনো সুস্থ ব্যক্তি আসে, তবে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, এই ভাইরাস তামার ওপর চার ঘণ্টা, কাঠের বোর্ডে ২৪ ঘণ্টা এবং প্লাস্টিক ও স্টেইনলেস স্টিলে দুই-তিন দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। অন্যদিকে জার্নাল অব হসপিটাল ইনফেকশনে প্রকাশিত আরেকটি গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, এই ভাইরাস গ্লাস, প্লাস্টিক বা ধাতুর মতো নির্জীব পৃষ্ঠে বাঁচতে পারে প্রায় ৯ দিন পর্যন্ত। এসবই সত্য হতে পারে যদি তার চারদিকে একটা জলীয় আবরণ থাকে এবং ভাইরাসটি সংক্রমণক্ষম থাকে। তবে এসব গবেষণাই এখনো প্রমাণিত হয়নি।

বাতাসের মাধ্যমে কি করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে?
অন্যান্য ভাইরাস থেকে এটি প্রায় ৫০ গুণ বেশি ভারী। এর আয়তন ১২০-১৬০ ন্যানোমিটার। হাঁচি বা কাশি দিলে এটি তিন থেকে ছয় ফুট দূরত্বে যেতে পারে। তবে সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, বাতাসে এই ভাইরাসটি তিন ঘণ্টার মতো থাকতে পারে। ওই সময় প্রশ্বাসের মাধ্যমে কেউ করোনায় আক্রান্ত হতে পারে, তবে এর আশঙ্কা খুব কম।

পোষা প্রাণীর কাছ থেকে কি কভিড-১৯ আসতে পারে?
গৃহপালিত বিড়াল, কুকুর বা এজাতীয় পোষা প্রাণীরা জঙ্গলে যায়নি—এ ধরনের নিশ্চয়তা থাকলে ঝুঁকি কম।

মাস্ক কি কভিড-১৯ প্রতিরোধ করে?
মাস্ক করোনা প্রতিরোধ করে এমন কোনো তথ্য এখনো প্রমাণিত সত্য নয়। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী যাঁরা সংক্রমিত রোগীর চিকিৎসায় যুক্ত আছেন তাঁদের জন্য মাস্ক খুব বেশি প্রয়োজন। বাসার বাইরে গেলে অধিক সতর্কতার জন্য ধুলাবালি, অন্য কারণে কেউ মাস্ক পরতেই পারেন।

তবে এন-৯৫ নামক রেসপিরেটরি মাস্ক হলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্দেশিত মাস্ক, যা চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত ডাক্তার, নার্স ও সংশ্লিষ্টদের জন্য। এটা ব্যবহারেরও কিছু জটিলতা রয়েছে তাই সাধারণ মানুষের না ব্যবহার করাই ভালো।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button