আন্তর্জাতিক

হংকং বিক্ষোভ: পুলিশের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ নিয়ে রাস্তায় নারীরা

হংকংয়ের বিক্ষোভে পুলিশদের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। চীনের অধীনে থাকা হংকংয়ে টানা ১২ সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ চলছে। এতে পুলিশের হাতে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন বিক্ষোভকারীদের অনেকে।

বিবিসি জানায়, পুলিশের বিরুদ্ধে মিটু আন্দোলনে নেমেছেন বিক্ষোভকারীরা। বুধবারের বিক্ষোভে এদিন উপস্থিত ছিলেন প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। যদিও পুলিশ বলছে, এতে জড়ো হয়েছিলেন সাড়ে এগারো হাজার বিক্ষোভকারী।

এ দিন সমাবেশে উপস্থিত অনেকেই অভিযোগ করেন,  প্রত্যর্পণ আইন বিরোধী আন্দোলনে পুলিশের যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন তারা। তাদের ওপর অসদাচরণ করা হয়েছে।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট সূত্রে জানা যায়, পুলিশের হাতে অহেতুক দেহ তল্লাশির শিকার হয়েছেন এক নারী। তিনি তার অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে এদিন কান্নায় ভেঙে পড়েন।

আরেক ভুক্তভোগী জানান, পুলিশ তাকে টেনে নিয়ে যাওয়ার সময় তার অন্তর্বাস বের হয়ে পড়েছিল। এমনকি পুলিশ কর্মকর্তা তাকে অপদস্থও করে এবং ‘বেশ্যা’ বলে সম্বোধন করে।

তবে হংকং পুলিশ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কর্তৃপক্ষ জানায়, আটকাবস্থায় তারা মানুষের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তবে এখন পর্যন্ত যৌন নিপীড়নের আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ তারা পাননি।

প্রসঙ্গত, গত বছর তাইওয়ানে এক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নতুন প্রত্যর্পণ আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় হংকং। প্রস্তাবিত আইনটি পাস হলে চীন, তাইওয়ান ও ম্যাকাওয়ে কোনো মামলায় অভিযুক্ত কাউকে প্রত্যর্পণ করতে হবে হংকং কর্তৃপক্ষকে। এর বিরুদ্ধে হংকংয়ের জনগণ ব্যাপক প্রতিক্রিয়া জানায়। সেখান থেকেই বিক্ষোভের সূচনা। এতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ ও গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটে।

বিক্ষোভকারীদের মতে, এ আইনের মাধ্যমে হংকংয়ের বিচারব্যবস্থাই হুমকির মুখে পড়বে। বিশেষ করে হংকংয়ের ওপর চীনের প্রভাব বাড়বে। দেশটির যেকোনো ব্যক্তিকে শায়েস্তা করতে এ আইন ব্যবহার করবে চীন। তবে হংকং কর্তৃপক্ষ একপর্যায়ে প্রস্তাবিত আইনটি পাশ করা থেকে পিছিয়ে আসলেও এই বিক্ষোভ চলমান থাকে।

একাধিক দাবি যুক্ত করে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন হংকংয়ের জনগণ। দাবিগুলো হচ্ছে, প্রত্যর্পণ বিল পুরোপুরি প্রত্যাহার করতে হবে, বিক্ষোভ চলাকালীন গ্রেপ্তারকৃতদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করতে হবে, বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশি হামলার নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে, সেই সঙ্গে সর্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ও লেজিসলেটিভ কাউন্সিল নির্বাচন দিতে হবে। বিক্ষোভকারীদের একাংশ এও দাবি জানায়, হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লামের পদত্যাগ দাবি করছেন।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button