স্বাস্থ্য

পবিত্র রমজানে করোনা রোগীদের করণীয় ও স্বাস্থ্যবিধি

পবিত্র মাহে রমজানে বর্তমানে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সবাইকে ঘরে অবস্থান করতে হচ্ছে। এবার তাই রোজা পালনে বেশ কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হবে। সচেতনতার পাশাপাশি অবশ্যই সঠিক পুষ্টি চাহিদা পূরণ করার লক্ষ্যে সঠিক খাবার গ্রহণ করতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. নাসিমা সুলতানা বলেছেন, ‘“যারা রোজা থাকবেন, তাদের ইফতারের পরের খাওয়া-দাওয়া নিয়ে সচেতন থাকতে হবে। বেশি বেশি পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। লেবু, আদা দিয়ে শরবত খেতে পারেন। গরম পানি দিয়ে গার্গল করতে পারেন। পাশাপাশি অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি যেগুলো রয়েছে, সেগুলোও সবাইকে যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে।”
করোনা রোগীদের করণীয়:
আসলে করোনা আক্রান্ত রোগীদের রোজা রাখার কোনো উপায় থাকে না। যারা করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন তারা রোজা রাখতে পারবেন না। তাদের শ্বাসকষ্ট, ডিহাইড্রেশন থেকে শুরু করে নানা সমস্যার জন্য মেডিসিন নিতে হয়, তাই ইচ্ছা থাকলেও সেটা সম্ভব নয়। কিন্তু যারা বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন (শতকরা ৮০ শতাংশ), যাদের মৃদু সংক্রমণ হয়েছিল তাদের মধ্যে যারা সুস্থতা অনুভব করেন তারা রোজা রাখতে পারবেন। তবে যদি এক্ষেত্রে রোগীদের ডায়াবেটিস থাকে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
করোনায় সেরে ওঠা কিংবা টেস্টে পজিটিভ হবার পরও কোনও উপসর্গ দেখা না দিলে তারা ইফতারের সময় থেকে সেহরি পর্যন্ত প্রচুর পরিমাণে পানি পান ও পানি জাতীয় খাবার খেতে হবে। বিশেষ করে ইফতার থেকে শুরু করে সেহরি পর্যন্ত কমপক্ষে সাড়ে তিন লিটার পানি খেতে হবে।
ইফতারে থাকবে ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার:
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সবাইকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করার কথা বলা হয়। ভিটামিন সি, এ, ডি এবং জিংক ও সেলেনিয়াম যুক্ত খাবার গ্রহণ করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তাই ইফতার আয়োজনে প্রতিদিন ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার তৈরি করতে হবে।
ইফতারে অবশ্যই নরম, সহজে হজমযোগ্য, পুষ্টিকর খাবার ইফতার মেন্যুতে রাখতে হবে। তবে মনে রাখবেন, অনেক কিছু এক সঙ্গে না খাওয়াই ভালো। মেন্যু সিলেকশন সঠিকভাবে করতে হবে, যেন তা থেকে সব পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়।
যেমন: এক গ্লাস শরবত, দু’টি খেজুর, ডাল-চাল ও সবজির তৈরি খিচুড়ি এবং ফলের সালাদ। এটি একটি হেলদি (স্বাস্থ্যকর) ইফতার মেন্যু। এমনভাবে ইফতার মেন্যু তৈরি করতে হবে- যা মিল হিসেবে কাজ করে। ইফতারে অবশ্যই ভাজা-পোড়া খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এমনকি চাইলে ইফতারে এক প্রকার শরবত ও খেজুরের সঙ্গে ভাত, সবজি ও মাছ বা মাংস খাওয়া যেতে পারে। এটা সহজে হজমযোগ্য ও পুষ্টিকর মেন্যু।
সঠিক পরিমাণের সেহরি আপনাকে এনার্জিটিকভাবে রোজা পালনে সাহায্য করবে। সাধারণ সময়ে দুপুরের খাবার আসলে সেহেরিতে খেলে ভালো। এই সময় ভাত, সুসিদ্ধ সবজি ও মাছ সবচেয়ে উত্তম খাবার। তবে যারা মাছ খেতে পারেন না তারা মাছের পরিবর্তে মুরগির মাংস বা ডিম খেতে পারবেন। অনেকে আবার সেহরির সময় তরকারি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলেন, তারা চাইলে দুধ ভাত আর কলা বা খেজুর খেতে পারেন।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button