সাপ না ভূত, আতঙ্কে গ্রাম ছাড়ছে সবাই
আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন গ্রামের বাসিন্দারা। এরই মধ্যেই মৃত্যুও হয়েছে একজনের। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বেশ কয়েকজন। চিকিৎসকরা জানান কোনো বিষের প্রভাবে এই ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু হাসপাতালে আসা রোগীদের কারো শরীরেই সাপের কামড়ের কোনো চিহ্ন নেই। দ্বন্দ্বে পড়েছেন জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
এমন আতঙ্ক বিরাজ করছে ভারতের হাসনাবাদ পঞ্চায়েতের মনোহরপুর গ্রামে। সেই আতঙ্কে কয়েক হাজার বাসিন্দা ওই গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।
গ্রামবাসীদের বক্তব্য হলো, এসব অপদেবতা বা জিনের কারবার। গ্রামবাসী শেখ নুরুল ইসলামের দাবি, এদের চোখে দেখা যায় না। কিন্তু যেকোনো উপায়ে তারা মানুষের ক্ষতি করতে পারে। এমনকী মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে এদের কারণে। আর এই অন্ধবিশ্বাসের কারণে গ্রাম ছেড়েও চলে যাচ্ছেন বাসিন্দারা।
পরিস্থিতি সামাল দিতে মাঠে নেমেছে পুলিশও। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছেন টাকি ইছামতী বিজ্ঞান কেন্দ্রের কর্মীরা। কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হয়নি। গ্রামবাসীদের একটাই দাবি, এসব জিন-অপদেবতার কর্ম। সে জন্যেই গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছেন তারা।
পুলিশ জানিয়েছে, গত সোমবার গভীর রাতে শ্বাসকষ্ট হওয়ায় গ্রামের বিড়ি ব্যবসায়ী রাজু গাজীকে (২৪) বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার তাকে কলকাতায় নিয়ে আসার সময় রাস্তাতেই মৃত্যু হয় ওই যুবকের। এরপর মনোহরপুর গ্রামের আরো অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। মালেক গাজী এবং আইয়ুব গাজী নামের আরো দু’জনকে ভর্তি করা হয় বসিরহাট জেলা হাসপাতালে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বিষক্রিয়ার কারণেই এই দু’জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কিন্তু কী থেকে এই বিষক্রিয়া হয়েছে সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত ভাবে কিছু জানা যায়নি।
তবে টাকি ইছামতী বিজ্ঞান মঞ্চের সভাপতি পার্থ মুখার্জী জানিয়েছেন, ওই গ্রামে মাটির নিচে একটি সাপের বাসা ছিল। সেটা ভেঙে দেয়ার ফলেই সম্ভবত গ্রামে ঘুরছে সাপ। অনুমান, তাদের কামড়েই গ্রামবাসীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।