দুর্যোগসারাদেশ

অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিতের পর পুকুরে ফেলায় আটক ২৫

রাজশাহী সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিতের পর পুকুরে ফেলে দেয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে।

শনিবার রাত ১০টার দিকে অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন নগরীর চন্দ্রিমা থানায় এ মামলা করেন। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ ২৫ জনকে আটক করেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার ওসি গোলাম মোস্তফা।

তিনি জানান, অধ্যক্ষ রাতে সাতজনের নাম উল্লেখসহ আরও ৫০ জন অজ্ঞাত শিক্ষার্থীর নামে মামলা করেছেন। মামলার পর রাতেই ২৫ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।

আটককৃতদের সঙ্গে ভিডিও ফুটেজ মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। যাদের বিরুদ্ধে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে না তাদের ছেড়ে দেয়া হবে। বাকিদের এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে।

এদিকে অধ্যক্ষ লাঞ্ছিত ও বলপ্রয়োগ করে পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়ার ঘটনায় নেতৃত্বদানকারী কামাল হোসেনের সাংগঠনিক পদবি পাওয়া গেছে। সৌরভ ছাত্রলীগ পলিটেকনিক শাখার যুগ্ম সম্পাদক।

তবে ঘটনার পর থেকে তিনিসহ তার সহযোগীরা পলাতক রয়েছেন। তাদের আটকের জন্য পুলিশের কয়েকটি টিম অভিযান চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওসি।

অন্যদিকে শনিবার রাতে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের এক জরুরি সভা হয়। সভায় মহানগর সভাপতি রকি কুমার ঘোষ ও সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহমেদসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সর্বসম্মতিক্রমে সভায় কামাল হোসেন সৌরভকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে এবং পলিটেকনিক শাখায় ছাত্রলীগের কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি রকি কুমার ঘোষ  বলেন, ঘটনার সঙ্গে সৌরভের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ কারণে তাকে বহিষ্কারের জন্য ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় মহানগর ছাত্রলীগের সহসভাপতি কল্যাণ কুমার জয়ের নেতৃত্বে ছয় সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। তদন্তে ছাত্রলীগের আর কারও বিরুদ্ধে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ছাড়া অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত ও পুকুরে ফেলে দেয়ার ঘটনায় পলিটেকনিকের শিক্ষক এবং কর্মচারীরা বৈঠক করেছেন।

শনিবার রাতের মধ্যে দোষীদের গ্রেফতার করা না হলে রোববার সকাল থেকে ক্লাস বর্জন ও কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

প্রসঙ্গত শনিবার দুপুরে অকৃতকার্য শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ নেতা সৌরভকে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ না দেয়ার ঘটনা কেন্দ্র করে অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিনের সঙ্গে তর্কবিতর্ক হয়।

এ সময় ছাত্রলীগ নেতা সৌরভ এবং তার সহযোগীরা অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করে। একপর্যায়ে অধ্যক্ষকে পলিটেকনিকের ভেতরেই পুকুরের মধ্যে ফেলে দেয়া হয়। পরে ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গিয়ে অধ্যক্ষকে পুকুর থেকে টেনে তোলেন।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button