আশানুরূপ দামেও নীলফামারীতে মরিচ নিয়ে চাষীদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ
নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি: স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শে চাষযোগ্য জমিতে ফসলের বৈচিত্র্য আনার লক্ষ্যে ধান চাষের পাশাপাশি নীলফামারীতে দিন দিন মরিচ চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কম খরচে স্বল্প সময়ে ভাল ফলনের আশায় এ ফসল চাষে অগ্রসর তারা। কিন্তু এ বছর লাগাতার ভারী বৃষ্টিপাতের কারনে ফলন বিপর্যয় হওয়ায় বিপাকে পড়েছে চাষীরা।
গত মৌসুমে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন অঞ্চলে বাজারজাত করা হয়েছিল। কিন্তু এ বছর দাম বেশি পেলেও গাছগুলো মরে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে কৃষকরা। কোরবানির ঈদের আগেই কাঁচা মরিচ ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। ঈদের পর বাজার দর কিছুটা কমের দিকে। বাজার দর ভাল থাকলেও আশানুরূপ ফলন না হওয়ায় ক্ষতির আশংকায় চাষীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর রবি ও খরিপ-২ মৌসুমে ২ হাজার ১ শ ৮৬ হেক্টোর জমিতে মরিচ চাষ করা হয়েছিল। নীলফামারীর সদর, ডোমার, ডিমলা, সৈয়দপুর, জলঢাকা ও কিশোরগঞ্জ উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নে কৃষকরা ধানের পাশাপাশি পরীক্ষামূলকভাবে মরিচের চাষ শুরু করেছে। স্থানীয় জাতের পাশাপাশি মল্লিকা, বিন্দু, হট, মাস্টার, সুরক্ষাসহ উচ্চ ফলনশীল জাতের মরিচের আবাদ করা হয়েছে। উচু শ্রেণির দোঁয়াশ মাটিতে ভালো ফলন, দাম ও চাহিদা বেশী থাকায় চাষিরা দিন দিন মরিচ চাষে মনোযোগ দিচ্ছে। পারিবারিক প্রয়োজনের বাড়ির পাশে পাশে চাষ যোগ্য জমিতে মরিচ চাষ শুরু হলেও ধীরে ধীরে বাণ্যিজিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য মরিচ চাষ করছে চাষিরা। অল্প জমিতে বেশী ফলন ও অধিক মুনাফা পাওয়া কৃষকদের মধ্যে মরিচ উৎপাদনের নতুন উদ্দীপনা বাধসাজে দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া। চলতি মৌসুমে লাগাতার বৃষ্টিপাতের কারণে জলঢাকা উপজেলার শৈলমারী ইউনিয়নের আক্কাস আহমেদ এর ছেলে মনির আহমেদ জানান আমি নিয়মিতভাবে ধানের পাশাপাশি মরিচ চাষ করে আসছি। কিন্তু এ বছর অতি বৃষ্টির কারণে মরিচ গাছ গুলো লাল বর্ণ হয়ে মরে গেছে। ফলন বিপর্যয়ের কারণে চরম ক্ষতির সম্মুখিন হতে হয়েছে। নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ওবায়দুর রহমান মন্ডল বলেন, মাটির বৈচিত্র্য ও উর্বরতা রক্ষায় চাষিদের লাভজনক ও পরিবর্তনশীল ফসল চাষে পরামর্শ দিচ্ছি। তবে এ বছর লাগাতার বৃষ্টিপাতের কারণে চাষিদের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ক্ষতিগ্রস্থ চাষিদের বিনামূলে চারা বিতরণ এবং অধিক উৎপাদনের লক্ষ্যে যাবতীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।