রংপুর বিভাগসারাদেশ

উলিপুরে গৃহবধুকে হত্যার চেষ্টা মামলায় প্রেমিক স্বামী গ্রেফতার

উলিপুর (কুড়িগ্রাম) সংবাদদাতাঃ  কুড়িগ্রামের উলিপুরে বিমাতা শ্বাশুরির আশ্রয়ে থেকে শারীরিক চিকিৎসা নেয়ার অপরাধে প্রেমিক স্বামী ও শ্বশুর-শ্বাশুরীর অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে ব্লেডের খোঁচায় রক্তাক্ত আহত হয়ে হালিমা (২৪) নামের এক গৃহবধু উলিপুর স্বান্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী শরিফুল ইসলামকে পুলিশ গ্রেফতার করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (০৫-জুন) দিবাগত রাতে উপজেলার উত্তর দলদলিয়া ফুলবাহার কুটি নামক গ্রামে।
জানাযায়, উপজেলার উত্তর দলদলিয়া চতলারপাড় গ্রামের রিক্সা চালক হাসিদুল ইসলামের মেয়ে উক্ত হালিমা ও পার্শ্ববর্তি ফুলবাহার কুটি গ্রামের আঃ ছাত্তারের পুত্র শরিফুল (২৮) এর বিগত দুই বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে বিয়ে হয়। তাদের এ বিয়ে প্রথমত: শরিফুলের পিতা-মাতা মেনে না নিলেও পরে মেনে নিলে তখন থেকে ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যদিয়ে হালিমা স্বামীর সংসার করে আসে। এমতাবস্থায়, ঘটনার দু’মাস আগে হালিমা এ্যলার্জিক জনিত রোগে (আগ্নি গারাস) অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তার স্বামী, শ্বশুর-শ্বাশুরীকে চিকিৎসা করার কথা বললে প্রয়োজনীয় কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থা না নেয়ায় রোগের জ্বালায় বিমাতা শ্বাশুরী (শ্বশুরের ২য় স্ত্রী) সুফিয়া বেগমের পরামর্শে পার্শ্ববর্তি সুইজগেট (গণক পাড়া) নামক গ্রামে জনৈক এক কবিরাজের চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়। এরই জের ধরে অসুস্থ্য হালিমার উপর শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন। ঘটনার দিন রাত আনুমানিক সাড়ে ৯ টায় বাড়ীর অন্যান্যরা আত্নীয়ের বাড়ীতে দাওয়াত খেতে যাওয়ার সুবাদে একা বাড়ীতে হালিমার শোয়ার ঘরের দরজা ও তার হাত-পা-মুখ বেঁধে স্বামী শরিফুল, শ্বাশুরী ফরিদা খাতুন এবং শ্বশুর আঃ ছাত্তর পালাক্রমে মার-ধর করার এক পর্যায় হালিমাকে মারার উদ্দেশ্যে আঃ ছাত্তর ধারালো ব্লেড দিয়ে হাতে-পায়ে- পিঠে ও বুকের স্তনে এলোপাতারি খুঁচিয়ে গা ফালা ফালা করে দেয়। এ সময় হাত-মুখ বাঁধা অসহায় হালিমা গুংড়িয়ে গুংড়িয়ে জীবন ভিক্ষা চাইলে, তার নির্মম শ্বাশুরী ফরিদা খাতুন পাশে থাকা একটি বড় কাঁচের বোতল দিয়ে পুত্রবধুর মাথায় জোরে মারলে হালিমা তখনি মারাত্নক ভাবে আহত হয়ে পরে। এ সময় হালিমার ভাসুর বাবু মিয়ার বাড়ীতে আসার সারা পেয়ে তাৎক্ষনিক অভিযুক্তরা সড়িয়ে পড়লে, এরই ফাঁকে হালিমা গা ছেচড়িয়ে কোনো মতে পাশের বাড়ির উঠোনে এসে গোংড়াতে থাকলে, প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে বাবা হাসিদুলকে খবর দেয়। হাসিদুল সেখান থেকে মেয়েকে উদ্ধার করে উলিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এব্যাপারে ঐ গৃহবধুর বাবা হাসিদুল ইসলাম বাদী হয়ে উলিপুর থানায় একটি হত্যার চেষ্টা মামলা দায়ের করেছে। এঘটনায় পুলিশ ঐ দিনেই রাতে হালিমার স্বামী শরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরন করেছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button