সারাদেশ

করোনা: টাঙ্গাইলে ‘খাবার না পেয়ে’ সড়ক অবরোধ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে হটলাইন নাম্বার চালুর মাঝেই খাবার না পেয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে লকডাউনে থাকা গ্রামবাসী।

১৩ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে লকডাউনে থাকা গ্রামবাসী গত বুধবার বিকেল ৪টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ভূঞাপুর-বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব সড়কের উপজেলার জিগাতলা এলাকায় সড়ক অবরোধ করে। পরে খাবারের দাবিতে দেড়ঘন্টা ব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি চালান তারা। পরে প্রশাসন খাবারের ব্যবস্থার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয় তারা।

এরআগে ১৩ এপ্রিল রাতে ওই গ্রামের ৩জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। পরে প্রশাসন গ্রামটিকে লকডাউনের ঘোষণা করে।

বিক্ষোভকারীরা জানান, গত রবিবার গ্রামের দুইজনের মধ্যে করোনাভাইরাস সনাক্ত হওয়ায় গ্রাম লকডাউনের ঘোষণা করে উপজেলা প্রশাসন। এতে কাউকে এলাকা থেকে বের ও বাইরে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু ঘরে খাবার ফুরিয়ে গেছে। বিশেষ করে শিশুদের খাদ্য সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। চারদিন অতিবাহিত হলেও ত্রাণ তো দূরের কথা কেউ তাদের সামান্যতম মানবিক সহানুভূতি পর্যন্ত দেখায়নি। কোন ত্রাণ সহায়তা পায়নি।

জিগাতলা গ্রামের সোহেল, আলআমিন ও শাহআলম জানান, পুরো গ্রামটা লকডাউনের কারণে অবরুদ্ধ। কেউ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। ঘরে যে খাবার ছিল তা শেষ হয়েছে। বাইরে গিয়ে বাজার আনতে না পারলে না খেয়ে মরতে হবে। সরকারি-বেসকারিভাবে লকডাউনের পরে কোন খাবার বা ত্রাণ সহায়তা পাইনি। ঘরে শিশু সন্তান রয়েছে তাদের খাবার ফুরিয়ে গেছে। এ যে কতবড় মানবিক বিপর্যয়! স্থানীয় চেয়ারম্যান, জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন ও ফেসবুকে আকুল আবেদন জানিয়েও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। উল্টো চেয়ারম্যান গ্রামবাসীর সাথে খারাপ আচরণ করেছে।

গোবিন্দাসীর ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, করোনায় আক্রান্তের পর জিগাতলা গ্রাম লকডাউনের আগে ১৩টি ত্রাণের প্যাকেট পেয়েছিলাম সেগুলো চা-স্টলে কাজ করা ব্যক্তিদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত জিগাতলা গ্রামের কোন মানুষ ত্রাণ সহায়তা পায়নি। তাদের ঘরে খাবার নাই তাই তারা সড়ক অবরোধ করেছে।

গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বাবলু অভিযোগ অস্বীকার করে গণমাধ্যমকে বলেন, জিগাতলা গ্রামের মানুষ বাইরে গিয়ে বাজার সদাই করতে পারছে না। মানুষের কাছে টাকা থাকলেও এই লকডাউনের কারণে তারা অসহায়। বাইরে বের না হতে পেরে তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. নাসরীন পারভীন গণমাধ্যমকে জানান, জিগাতলা গ্রাম থেকে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে ৬জনকে দায়িত্বে হয়েছে যাদের বাজার প্রয়োজন তারা স্বেচ্ছাসেবীদের কাছে টাকা দিবেন তারা বাজার করে বাড়িতে পৌঁছে দিবে। এছাড়া ওই গ্রামের ২৫০জন অসহায় দরিদ্রকে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button