রংপুর বিভাগসারাদেশ

কুড়িগ্রামের উলিপুরে মুক্তিযোদ্ধার আবাসন প্রকল্পের কমিটি থেকে বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধাকে অপসারণের দাবিতে মানবন্ধন

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের উলিপুরে অস্বচ্ছল ও গৃহহীন মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন প্রকল্পের কমিটিতে বিতর্কিত ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদে মানবন্ধন করেছে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধারা।
বুধবার (১৭ জুন) দুপুরে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ের সামনে প্রায় তিন শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা মানবন্ধনে অংশ নেন।
মানবন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী সরকার উপজেলায় ৫৩ জন অস্বচ্ছল ও গৃহহীন মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের জন্য আবাসন প্রকল্পের ঘর নির্মানের বরাদ্দ প্রদান করেন। নীতিমালা অনুযায়ী ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে উপজেলা নিবার্হী অফিসার সভাপতি ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সদস্য সচিব এবং উপজেলা প্রকৌশলীকে সদস্য করা হয়। কমিটিতে সভাপতির প্রতিনিধি হিসেবে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টু ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রতিনিধি হিসেবে বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফাকে মনোনয়ন দেয়া হয়। বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা উপজেলা পরিষদ চেয়াররম্যান গোলাম হোসেন মন্টুর আপন ফুফাতো ভাই হন। এ কমিটি প্রকৃত অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা প্রস্তুত করবেন। তালিকা প্রনয়নে এ প্রতিনিধিরা ব্যাপক দুর্নীতির আশ্রয় নিবেন বলেও তারা আশঙ্কা ব্যক্ত করেন।
কমিটিতে বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফার নাম জানাজানি হলে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় বিতর্কিত দুই মুক্তিযোদ্ধাকে কমিটি থেকে অপসারণ করে নতুন ভাবে গ্রহণযোগ্য মুক্তিযোদ্ধাদের অন্তর্ভুক্ত করে কমিটি গঠনের দাবী জানান বক্তরা। স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক এম এ মতিন বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফাকে তার প্রতিনিধি মনোনয়ন দেয়ায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শ ভুলন্ঠিত করা হয়েছে বলেও বক্তরা অভিযোগ তোলেন। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন প্রকল্পে সুবিধাভোগী বাছাইয়ে বিএনপি পন্থি মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্নবাসনের হীন চক্রান্তের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বলেও অভিযোগ কারী মুক্তিযোদ্ধারা উল্লেখ করেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন. সাবেক কমান্ডার আলহাজ্ব এমডি ফয়জার রহমান, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার রবিউস সামাদ, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম, মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন প্রমূখ।
পরে মুক্তিযোদ্ধাগণ মিছিল সহকারে একটি স্বারকলিপি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট দাখিল করেন। স্বারকলিপি সূত্রে জানা গেছে, সংসদ সদস্য কর্তৃক মনোনীত বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে (জামুকা) দাখিলকৃত অভিযোগ বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে। এছাড়া তিনি বিগত সময়ে দুই দফায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্যানেলে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেলের কাছে শোচনীয় ভাবে পরাজিত হন । ওই নির্বাচনকালীন সময়ে গোলাম হোসেন মন্টুসহ ইউনিয়ন, পৌরসভা ও উপজেলা কমান্ডের বেশির ভাগ সদস্য গোলাম মোস্তফা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নন মর্মে স্বাক্ষর করে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন। স্বারকলিপি গ্রহন করে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের সামনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল কাদের কমিটি নিয়ে দ্বন্দের অবসান না হওয়া পর্যন্ত এ কমিটির কার্যক্রম বন্ধ রাখার আশ্বাস দেন।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button