রংপুর বিভাগসারাদেশ

ডিলারশীপ বাতিল:সৈয়দপুরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি : নীলফামারীর সৈয়দপুরে বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর আওতায় ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রিতে ওজনে কম দেয়া ও অন্যের কার্ড ব্যাবহার করে চাল উত্তোলনসহ ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ মিলেছে। এক ইউপি সদস্য ও ডিলার ওই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলে তথ্য পাওয়া গেছে। তারা দুর্নীতির মাধ্যমে যৌথভাবে ১৪ লাখ ৮২ হাজার টাকার ৪৯ দশমিক ৪ মেট্রিক টন চাল আত্মসাত করেছে। এ ঘটনায় ডিলার আবু সাঈদ চৌধুরীর ডিলারশীপ বাতিল করা হয়েছে। তবে ইউপি সদস্য মোতালেবের বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থা না নেয়ায় অভিযোগকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার দপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ওই ইউনিয়নে ১৫ হাজার ২৮৬ জনের বিপরীতে খাদ্যবান্ধব কার্ড বরাদ্ধ দেয়া হয়। এরমধ্যে বুড়ির বাজার কেন্দ্রের আওতায় ইউনিয়নের ১নং ও ২নং ওয়ার্ডের ৪৬৮ জন ভোক্তাকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর আওতায় বছরে ৫ বার ৩০ কেজি করে চাল প্রদান করা হয়েছে। যার প্রতি কেজি চালের মূল্য মাত্র ১০ টাকা। ২০১৬ সালের অক্টোবর মাস থেকে এ পর্যন্ত ৪ বছরে ওই কেন্দ্রের আওতায় ১৯ বার চাল দেয়া হয়েছে। কিন্তু ডিলার আবু সাঈদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তিনি ভোক্তাদের ৩০ কেজির পরিবর্তে ২৫ কেজি করে চাল দিচ্ছেন। এমন অনিয়মের শিকার ৬০ জন ভোক্তা সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে অভিযোগ দাখিল করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে ভোক্তাদের অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিতে উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক গত ১২ অক্টোবর নুরে রাহাদ রিমন ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে জনসম্মুখে ৩৬২ ও ৩৬৩ নং কার্ডধারী ভোক্তার চাল ওজন করে ২৫ কেজি চাল পান।
অপরদিকে একই ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য মোতালেব হোসেন তার মোবাইল নম্বর ব্যাবহার করে ১৯ জনের নামে নিজেই চাল উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন । এদের মধ্যে ৫৮, ২৯৮, ৩২৮, ৩৪৭ ও ৩৫৪ নং কার্ডধারী যথাক্রমে জাহেদুল, আব্দুল খালেক, মজিদুল, অশ্বিনী চন্দ্র শীল ও রনজিৎ চন্দ্র শীল উপজেলা নির্বাহী অফিসারে কাছে এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে। অভিযোগকারি মজিদুল ইসলাম বলেন, কার্ড পেয়ে মাত্র দুইবার চাল উত্তোলন করার পর ওই ইউপি সদস্য কৌশলে আমাদের কাছ থেকে কার্ডগুলো হাতিয়ে নেয়। কার্ড হারিয়ে যাওয়ার কথা বলে জিডি করতে বলেন। কিন্তু আমি জিডি করিনি। অথচ কৌতুহলবশত ওই কেন্দ্রে গিয়ে দেখি আমার কার্ড দিয়ে মেম্বার চাল উত্তোলন করছেন। এছাড়া অন্যান্য অভিযোগকারীরা বলেন, তাদের কাছ থেকে কার্ড নেয়া হলেও এ পর্যন্ত ফেরত দেয়া হয়নি। এ ব্যাপারে জানতে চাইল মোতালেব হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ন মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র ।
এ ব্যাপারে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা খাদ্যবান্ধব কমিটির সভাপতি নাসিম আহমেদ জানান, অনিয়মের সত্যতা পাওয়ায় ডিলারশীপ বাতিল হয়েছে। এ ছাড়া ডিলারশীপের জন্য জামানতের ২০ হাজার টাকাও বাতিল করা হয়। তার বিরুদ্ধে সরকারী চাল আত্মসাতের কারনে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া ওই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে ভোক্তাদের অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমানিত হলে তাকেও অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button