দুই পরিবারের জীবন মানবেতর, নেই সাহায্যের হাত!
রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের কিছু মানুষের জীবন নদীর সঙ্গে লড়াই। যেন জীবনটা শুধু নদীর ভাঙ্গন, বন্যা, নানা প্রাকৃতিক দূযোর্গ নিয়ে সংগ্রাম। শুধু তাই নয় নদীর ভাঙ্গনের কবলে পড়ে জীবন বাচাঁর তাগিতে এ চর থেকে ওইচর ছুঁটছে। গেল বছরের বন্যা ও চলতি বন্যায় এ উপজেলার নদীর তীরবর্তী মানুষের হাহাকার। নদীর ভাঙ্গনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করছে মগল হোসেনের পরিবার। তিনি তাঁর পরিবার সন্তানদের একটু আশ্রয়ের খোঁজে এ চর থেকে আরেক চরে। এমন চিত্র কুড়িগ্রামের রৌমারীর চরশৌলমারী ইউনিয়নের চর ইটালুকান্দা এলাকার। চলমান বন্যায় পানি কমছে আবার কখনো পানি বাড়ছে। এতে বন্যা কবলিত অঞ্চলের মানুষের জীবন দূর্বিষহ হয়ে উঠছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে পানি এই আসছে এই কমছে। এঅঞ্চলের ফসলের অনেক ক্ষতিও হয়েছে।
মগল হোসেন চর ইটালুকান্দা গ্রামের ব্রহ্মপুত্র নদের চরাঞ্চলে দিন মজুুরী হিসেবে কাজ করে জীবন ও সংসার চলে। বর্তমান করোনা ভাইরাসের কারণে গত তিন মাস থেকে কাজকর্ম নেই। এদিকে ভাঙ্গনে শেষ সম্বলওটুকু ভিটামাটি নদীতে বিলিন হয়। পরে অন্যের জমিতে একটু আশ্রয় নিলেও বন্যার পানিতে ঘরবাড়ি সব তলিয়ে গেছে। বন্যার পানি যেন তাদের স্বপ্ন ও রাতের ঘুমটুকু কেড়ে নিয়েছে। ।
ফলে পরিবার পরিজন নিয়ে দিন রাত কাটছে দুইটি চোকির উপর। মগল হোসেনের আশ্রয়টুকু যায়গা ছাড়া পৃথিবীতে সম্পদ বলতে কিছু নেই। তাই সবসময় নদীর দিকে তাকিয়ে রই।
কারো কাছে চেয়ে তাদের নৌকা করে অন্যের ভিটায় গিয়ে রান্না করা হয়। দিনে একবার রান্না করা হয়। সবসময় এদিকে নৌকা চলে না। ওই রান্না করা খাবারটুকু খেয়ে জীবন বাঁচানো হচ্ছে। নেই কোন টয়লেট। বিশুদ্ধ পানির অভাব। মগলের পরিবারের মাঝে পৌঁছেনি কারো সহযোগীতা।
ওই পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৭ জন। এমন পরিস্থিতিতে তাকিয়ে থাকে কারো সহযোগিতার আশায়। অসহায় শিশু ও পরিবার নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটছে পাঁচ বারের নদী ভাঙা এই পরিবারের। মগল হোসেন এর পরিবারে রয়েছে দুই ছেলে ও তিন মেয়ে নিয়ে এ সময় অনেক কষ্টে দিন পার করছে।
একই গ্রামের বাহর আলী দিনমুজুরও ১১ জন সদস্য নিয়ে নৌকায় বসবাস করছে তাদের পরিবার। পেশায় নৌকা চালক। নৌকা চালিয়ে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চলে। কিন্তুু ব্রহ্মপুত্র নদে হঠাৎ পানি বৃদ্ধি হওয়ায় বাড়িঘর তলিয়ে গেছে দিন রাত কাটছে নৌকায়। কৃষি জমিও নেই তাদের। এসব চিত্র সরেজমিনে গিয়ে পাওয়া যায়।
পাশ্ববর্তী গ্রামের স্থানীয় আশফার আলী, শাহজাহান মিয়া বলেন, পরিবারগুলো খুব অসহায়। দিন এনে দিন খেতো। করোনার জন্য কাজ নেই আবার পানি বাড়ায় আরো কষ্টে তারা।