সারাদেশ

নওগাঁয় একুশে পরিষদের বিনামূল্যে মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণ

নওগাঁ প্রতিনিধি: বিশ্ব এখন করোনা আতঙ্ক। করোনা ভাইরাস সংক্রমন রোধে সচেতনতার জন্য মাস্ক ও জীবানুমুক্ত স্যানিটাইজার ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে। বাংলাদেশে করোনা আতঙ্কের পর থেকে মাস্ক ও জীবানুমুক্ত স্যানিটাইজার সহ অন্যান্য উপকরণ দোকানগুলোতে কৃত্রিম সংকট তৈরী হয়েছে। কৃত্রিম সংকটের পাশাপাশি দ্বিগুন দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু তারপরও মিলছে না। ক্রান্তিলগ্নে কেউ নিজের লাভের কথা ভাবছে। আবার কেউ ভাবছেন দেশ ও দশের কথা।
আর এমন সংকটময় মুহুর্তে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই নওগাঁর স্থানীয় একটি সামাজিক সংগঠন ‘একুশে পরিষদ’ বিনামূল্যে মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতণের উদ্যোগ নিয়েছে। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মাস্ক তৈরি করে স্বল্প আয়ের বা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে বিনামূল্যে একটি করে প্রায় পাঁচশটি মাস্ক ও পাঁচশটি স্যানিটাইজার বিতরণ করেছেন। আরো বিতরণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন এ সংগঠনের নেতারা। সেই সাথে সমাজের বৃত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।

শুক্রবার (২০মার্চ) শহরের ঐতিহ্যবাহী প্যারিমোহর লাইব্রেরী চত্তরে ‘একুশে পরিষদ’ তার নিজস্ব কর্মবাহিনী দিয়ে মাস্ক তৈরি শুরু করে। বাজার থেকে কাপড় ও রাবার কিনে নিজস্ব ভাবে মাস্ক তৈরী করা হয়েছে। গত তিনদিনে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাস্ক তৈরী ও বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া উপকরণ কিনে জীবানুমুক্ত স্যানিটাইজার তৈরী করা হয়েছে। পরে শহরের কেডির মোড়, মুক্তির মোড়, গোস্তহাটির মোড়, ঢাকা বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন পয়েন্টে সাধারন মানুষের মাঝে এসব মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণ করা হয় এবং হচ্ছে। সেই সাথে সচেতনতামুলক লিফলেট প্রচার করা হচ্ছে। সংকটময় এ সময়ে খেটে খাওয়া নি¤œ আয়ের মানুষরা বিনামূল্যে মাস্ক ও স্যানিটাইজার পেয়ে খুশি। সংগঠনের এমন কর্মকান্ডে নওগাঁবাসী উৎসাহ জুগিয়েছে।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এমএম রাসেল বলেন, যারা বিদেশ ফেরত তাদের প্রতি অনুরোধ তারা অবশ্যই কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন। আমরা কোয়ারেন্টাইনের বিষয়টি মেনে চলবো। এছাড়া পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দিবো। সংকটময় এ মুহুর্তে আমরা সামাজিক কর্মকান্ডের অংশ হিসেবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরী করে বিনামূল্যে বিতরণ করেছি। অবহেলিত, বঞ্চিত ও খেটেখাওয়া মানুষদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে/হয়েছে। করোনা ভাইরাস সংক্রমন রোধে প্রয়োজনে আমরা সাধ্যের মতো আরো মাস্ক ও জীবানুমুক্ত স্যানিটাইজার বিতরণ করবো।

নওগাঁ একুশে পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট ডিএম আব্দুল বারী বলেন, করোনা নিয়ে মানুষকে সচেতন করা এবং আতঙ্কিত যেন না এ কাজটা একুশে পরিষদ অত্যান্ত সুচারে ভাবে করে যাচ্ছে। এ ভাইরাসের এখনো কোন মেডিসিন তৈরী হয়নি। সুতরাং আমাদের সাবধানতা অবল¤œ করা উচিত। নিজেরা সচেতন হবো, অন্যকে সচেতন করবো। নিজে সুস্থ থাকবো, অপরকে সুস্থ থাকতে সহযোগীতা করবো। দলমত বিনিমিশেষে সবাই সমন্বিত ভাবে এ দূর্যোগকে মোকাবেলা করতে চাই। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন স্তরের মানুষকে এবং যেসব সংগঠন রয়েছে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, করোনা সংক্রমন রোধে সচেতনাতার জন্য মাস্ক ও জীবানুমুক্ত স্যানিটাইজার বাজারে সংকট। যেটুকু রয়েছে দাম বেশি। স্বল্প আয়ের বা প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বা খেটে খাওয়া মানুষদের বেশি দাম দিয়ে মাস্ক এবং স্যানিটাইজার কেনা সম্ভব না। সমাজের প্রত্যেকাটি মানুষ যে যার অবস্থান থেকে এ দূর্যোগময় অবস্থায় আমরা আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হবো। সচেতনতায় পারে এ ভয়াবহ দূর্যোগকে মোকাবেলা করতে।

সংগঠন সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৪ সালে ভাষা দিবসকে কেন্দ্র করে ১৮ ফেব্রুয়ারী ড. জোহা দিবস পালনের মাধ্যমে সংগঠনটি যাত্রা শুরু হয়। শুরুতে সংগঠনটি ‘একুশে উদ্যাপন পরিষদ নওগাঁ’ নাম থাকলেও পরিবর্তীতে ‘একুশে পরিষদ নওগাঁ’ নামকরণ করা হয়। এ সংগঠনটি ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে মূল চেতনা ও মুক্তিযুদ্ধের আর্দশ সহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড নিরলস ভাবে করে যাচ্ছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button