রাজশাহী বিভাগসারাদেশ

নাচোলে ১৬৫ তম সিধু কানহু দিবস পালিত

নাচোল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে ১৬৫তম ঐতিহাসিক সিধু কানহু (সাঁওতাল বিদ্রোহ) দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে গতকাল র৩০ জুন (মঙ্গলবার) বেলা ১১টায় এক সংক্ষিপ্ত আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা পরিষদ চত্বরে আদিবাসী একাডেমী মিলনায়তন কক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আদিবাসী একাডেমীর সভাপতি যতীন হেমরোম। এসময় উপিস্থত ছিলেন, আদিবাসী একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মারডি, আদিবাসী মুক্তি মোর্চার জেলা সভাপতি বিশ্বনাথ মাহাতো, দিঘরী পরিষদের রাজা বাবুলাল টপ্পো, তালিথাকুমি চার্চের জেলা সুপার জোনাস সরেন ও নাচোল ইউনিয়ন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অশ্বীনী বর্মণ প্রমুখ। ব্রিটিশ সা¤্রাজ্যবাদ ও তাদের এ দেশীয় দালাল সামন্ত জমিদার, সুদখোর, তাদের লাঠিয়াল বাহিনী, দারোগা-পুলিশের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে আজ থেকে ১৬৫ বছর পূর্বে সাঁওতাল দরিদ্র জনগোষ্ঠির মাঝে দেবতারূপে আবির্ভূত হয়েছিল সিধু, কানু, ভৈরব ও চাঁদ। ১৮৫৫ খ্রিঃ এই দিনে তাদের আহ্বানে ভগনাডিহি গ্রামে দরিদ্র সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর বাঁধভাঙ্গা উপস্থিতি ঘটেছিল। ওই মহাসমাবেশে সিধু-কানু’র বক্তৃতায় সাঁওতাল জীবনে তাদের নানা দুঃখ কষ্ট ও অত্যাচারিত হওয়ার কথা উঠে এসেছিল। সাঁওতাল আদিবাসীরা ভগনাডিহি গ্্রামে সেদিনের মহাসমাবেশে প্্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিল যে তারা আর জমিদার, মহাজন, পুলিশ ও পাইক পেয়াদার অত্যাচার সহ্য করবে না। সেদিনের ওই শপথ ছিল বিদ্রোহের শপথ। সাঁওতাল বিদ্রোহ হয়ে উঠেছিল সব সম্প্রদায়ের গরিব জনসাধারণের মুক্তিযুদ্ধ। কালো মানুষ গুলোর কন্ঠে সেদিন উচ্চারিত হয়েছিল ‘দেলায়া বিরিদ পে দেলায়া তিঙ্গু প্’ে অর্থাৎ ‘জাগো ওঠো, সাঁওতাল রাজ কায়েম কর।’ মহাসভা থেকে ১৪০ মাইল দূরে তৎকালীন ভারতের রাজধানী কলকাতা অভিমুখে অগ্রসর হয়েছিল সিধু-কানুর নেতৃত্বে হাজার হাজার সাঁওতাল তাদের দাবি-দাওয়া বড় লাটের কাছে গিয়ে পেশ করবে। উইলিয়াম হান্টার’র লিখা এক গ্্রন্থে উল্লেখ রয়েছে, ‘১৮৫৫ খ্্িরষ্টাব্দে ৩০ জুন কলকাতার দিকে এই বিপুল অভিযান শুরু হয়। ওই অভিযানে কেবল নেতাদের দেহরক্ষী বাহিনীর সংখ্যাই ছিল ত্রিশ হাজার।’ আলোচনাসভায় বক্তারা আদিবাসী সংগ্রামী নেতাদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং তাদের জীবনী ও আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরেন।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button