বিলম্বে হার্নিয়া অপারেশনে জটিলতা বাড়ে
হার্নিয়া নিজে নিজে ভালো হয় না। একমাত্র অপারেশনই হার্নিয়ার সঠিক চিকিৎসা, যার মাধ্যমে বিচ্যুত অঙ্গ বা অঙ্গের কোনো অংশকে আবার যথাস্থানে এনে দুর্বল পারিপার্শ্বিক মাংসপেশি ও কোষকলাগুলোকে শক্ত ও টানটান করে দেওয়া হয়। তবে অনেকে অপারেশনে রাজি হতে চান না। অনেকে নানা অজুহাতে অপারেশন বিলম্বিত করেন। ফলে রোগীর নানা জটিলতা বাড়ে, সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে দেরি হয়।
ব্যথাই প্রধান উপসর্গ:
হার্নিয়া থাকলেই যে সবার ক্ষেত্রে উপসর্গ থাকবে তা নয়, বিশেষ করে ছোট হার্নিয়ার ক্ষেত্রে। উপসর্গগুলোর মধ্যে সচরাচর ব্যথাই প্রধান উপসর্গ হিসেবে দেখা দেয়। এ ছাড়া পেটে বা কুঁচকিতে ভারী ভাব অনুভূত হতে পারে। তবে কোনো নির্দিষ্ট উপসর্গ থাকুক বা না থাকুক, হার্নিয়া যেকোনো সময় জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। তাই একজন শল্যচিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া শ্রেয়।
জটিলতা:
সঠিক সময়ে হার্নিয়া অপারেশন না করালে বেশ কিছু স্বাস্থ্যগত জটিলতা তৈরি হতে পারে। যেমন—
আটকে যেতে পারে : অপারেশনের মাধ্যমে হার্নিয়া ঠিক না করালে এটি পেটের দেয়ালের বাইরে আটকে গিয়ে ঘায়ের সৃষ্টি করতে পারে, যাকে বলে ‘ইনকার্সেরেটেড হার্নিয়া’। ফলে হার্নিয়ায় রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেতে পারে ও অন্ত্রের মধ্যে খাদ্য চলাচলে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। যাকে প্যাঁচালো বা স্ট্র্যাংগুলেটেড হার্নিয়া বলা হয়। তখন অপারেশন অতি জরুরি হয়ে পড়ে এবং বিলম্ব করা উচিত নয়।
বড় হতে থাকে : বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, হার্নিয়া বড় হতে থাকে এবং পারিপার্শিক কোষকলাগুলোকে দুর্বল করতে থাকে। ফলে উপসর্গের তীব্রতার ঝুঁকি, বিশেষ করে ব্যথা বাড়তে থাকে। একটা ছোট আকারের হার্নিয়া অপারেশন করে ঠিক করা একটি বড় আকারের হার্নিয়া অপারেশনের চেয়ে সহজতর ও কম জটিল।
ফিটনেস থাকে না : হার্নিয়া অপারেশন কয়েক মাস বা কয়েক বছরের জন্য বিলম্বিত করলে পরবর্তী সময় ভালো স্বাস্থ্য, সামর্থ্য বা ফিটনেস না-ও থাকতে পারে। তখন এই ভগ্ন স্বাস্থ্য অপারেশনকে আরো জটিলতর করে তুলতে পারে এবং সুস্থ হয়ে ওঠাকে বিলম্বিত করতে পারে। কাজেই বয়স যত কম হবে, হার্নিয়া অপারেশনের সফলতা তত বেশি।
অপারেশন লাগবেই : কারো হার্নিয়ার তেমন কোন উপসর্গ না থাকলেও পরীক্ষায় সনাক্ত হলে দেরি না করে অপারেশন করে ফেলাই ভালো। তবে আশার কথা হলো, হার্নিয়া অপারেশনে এখন পেট কাটতে হয় না। বরং অত্যাধুনিক ল্যাপারোস্কপির মাধ্যমে করা যায়। এতে হাসপাতালে বেশিদিন থাকার দরকার হয় না এবং রোগীও দ্রুত সুস্থ জীবনে ফিরে আসে।