বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

পুকুরে মিলল গাড়ি, ২২ বছরের রহস্য সমাধান করল গুগল আর্থ

বাইশ বছর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক ব্যক্তি হারিয়ে যান। বহু চেষ্টা করেও তাঁর খোঁজ মেলেনি। কোথায় গেলেন, কী হল তাঁর সঙ্গে, কিছুই জানা যায়নি। যেন হঠাত্ই উধাও হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সেই ব্যক্তির খোঁজ পাওয়া গেল ২২ বছর পর। খোঁজ এনে দিল গুগল আর্থ।

বন্ধকী ব্যবসায় দালালির কাজ করতেন উইলিয়াম আর্ল মোল্ডট। ১৯৯৭ সালে তাঁর বয়স ছিল ৪০ বছর। নভেম্বরের এক সন্ধ্যায় তিনি ফ্লোরিডায় ল্যান্টানার এক নাইট ক্লাবে গিয়েছিলেন। সচরাচর তিনি মদ্যপান করতেন না। কিন্তু সেই রাতে তিনি মদ্যপান করবেন বলেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে ওই নাইট ক্লাবে যান। বাড়ির কাছের এই ক্লাবে তিনি প্রায়শই সময় কাটাতেন।

নাইট ক্লাব থেকে রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ তিনি বান্ধবীকে ফোন করেন। উইলিয়াম বলেন, একটু পরেই বাড়ি ফিরছেন। তারপর রাত ১১টা নাগাদ তাঁর ১৯৯৪-এর সাদা শ্যাটার্ন এসএল মডেলের গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যান। এই সব তথ্য জানা গিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল মিসিং অ্যান্ড আনআইডেন্টিফাডেট পার্সনস সিস্টেম থেকে। সেখান থেকেই জানা গিয়েছে, তিনি নাকি ওই রাত্রে মদ্যপানই করেননি!

সাড়ে ৯টা নাগাদ ফোন করার পরে ১১টায় নাইট ক্লাব থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরেও রাত্রে আর বাড়ি ফেরেননি। শুধু সেই রাতে নয়, ২২ বছর তিনি আর বাড়ি পৌঁছননি। তাঁর কোনও খোঁজও মেলেনি এতদিন। কিন্তু হঠাত্ তাঁর খোঁজ মিলল গুগল আর্থের ছবিতে।

ফ্লোরিডার ওয়েলিংটনে সার্ভের কাজ হচ্ছিল। সেই সময় গ্র্যান্ড আইসেলস নামে আবাসন এলাকার পুকুরের মধ্যে একটি গাড়ি দেখা যায়। আসলে ২০০৭ সাল থেকেই গুগল আর্থের ছবিতে ওই গাড়িটি দেখা যাচ্ছিল কিন্তু ২০১৯ পর্যন্ত কেউ সেটি খুঁটিয়ে দেখননি। সম্প্রতি এই আবাসনের এক বাসিন্দা ড্রোন ওড়াচ্ছিলেন। ২৮ অগস্ট ড্রোনের ক্যামেরায় গাড়ির ছবিটি ধরা পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি প্রশাসনে খবর দেয়। ১৯৯৭ সালে ওই আবাসন এলাকায় তখন নির্মাণ কাজ চলছিল।

পাম বিচ কাউন্টি শেরিফের অফিস এবার ওই গাড়ির ছবি ও পুরনো তথ্য মিলিয়ে দেখতে শুরু করে। সেখানে খোঁজ মেলে উইলিয়াম আর্ল মোল্ডটের নিখোঁজ হওয়ার রিপোর্টের। গাড়িটি পুকুর থেকে তোলা হয়। গাড়ির ভিতর দেহাবশেষ পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে শেরিফের অফিস। সেই সঙ্গে সমাধান হয় ২২ বছরের পুরনো একটি নিখোঁজ রহস্যের।

তবে একটা রহস্য এখনও রহস্যই রয়ে গিয়েছে, ল্যান্টানা থেকে ওয়েলিংটনের দূরত্ব প্রায় ৩২ কিলোমিটার। ল্যান্টানার ওই নাইট ক্লাব থেকে ওয়েলিংটনের আবাসন এলাকায় কেন গেলেন উইলিয়াম, তা এখনও রহস্যই রয়ে গিয়েছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button