প্রেমের ফাঁদে পরে দুই বিকাশ প্রতারক আটক
মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিকাশে প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন রাজশাহী নগরের এক কলেজছাত্রী। প্রতারকেরা ওই শিক্ষার্থীর বিকাশ হিসাব থেকে হাতিয়ে নিয়েছিলেন ৫১ হাজার টাকা। প্রতারণার শিকার হয়েছেন বুঝতে পেরে ওই ছাত্রী পুলিশের পরামর্শে ওই প্রতারকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। একপর্যায়ে ওই প্রতারক কলেজছাত্রীর সঙ্গে দেখা করতে আসেন রাজশাহীতে। গত রোববার বিকেলে এক সহযোগীসহ ওই প্রতারককে আটক করেছে রাজশাহী মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
আটক ব্যক্তিরা হলেন ফরিদপুরের ভাঙা উপজেলার জঙ্গলপাশা গ্রামের আবদুল খানের ছেলে হাসান খান (১৯) এবং নূর মোহাম্মদ শেখের ছেলে মাহমুদ হাসান ওরফে বায়েজিদ (১৯)। রাতেই ওই কলেজছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে এই দুজনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন।
সোমবার বিকেল তিনটার দিকে গ্রেপ্তার দুজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার বাকি চার আসামি হলেন ভাঙা উপজেলার জঙ্গলপাশা গ্রামের শওকত হোসেনের ছেলে মো. সোহাগ খান (২৫), একই গ্রামের শহিদ ফরাজির দুই ছেলে মো. সুরুজ ফরাজি (৩০) ও মো. সবুজ ফরাজি (২২) এবং সিরাজ ফরাজির ছেলে মো. সাদ্দাম হোসেন (২৬)।
নগর ডিবি পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা পেশাদার প্রতারক চক্রের সদস্য। মুঠোফোনে কল দিয়ে তারা কৌশলে বিকাশের পিন নম্বর হাতিয়ে নেন। এরপর সরিয়ে ফেলেন বিকাশের টাকা। এ রকম একজন ভুক্তভোগী তাদের কাছে গেলে তারা ওই কলেজছাত্রীকে পরামর্শ দেন ওই প্রতারকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ার জন্য। পরে প্রেমের ফাদে ফেলা কলেজছাত্রীর সঙ্গে দেখা করতে এলে রোববার বিকেলে রাজশাহী মহানগরীর লক্ষ্মীপুর মোড় থেকে তাদের দুজনকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে ৭৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনা করছেন। ১৬ নভেম্বর তার মুঠোফোনে অচেনা একটি নম্বর থেকে কল আসে। ওই ব্যক্তি নিজেকে কলেজের শিক্ষক পরিচয় দিয়ে বলেন, করোনাকালে বিকাশের মাধ্যমে সরকার শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিচ্ছে। কিন্তু যে নম্বরে বৃত্তি পাঠানো হবে সেই বিকাশে অন্তত ৫০ হাজার টাকা থাকতে হবে। তাহলেই এই নম্বরে সরকার টাকা পাঠাবে। কোনো যাচাই-বাছাই না করে ওই শিক্ষার্থীর পরিবার বিকাশে ৫০ হাজার টাকা রাখেন। ওই ছাত্রীর বিকাশে আগেই আরও এক হাজার টাকার মতো ছিল।
নগর ডিবি পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার আবু আহাম্মদ আল মামুন এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন। অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
