জাতীয়লিড নিউজ

রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় ১৩ ঘণ্টা থ্রি জি ফোর জি বন্ধ

রোহিঙ্গাদের মোবাইল ফোন ব্যবহার বন্ধের লক্ষ্যে এবার শরণার্থী শিবির এলাকায় টেলিযোগাযোগ সেবা সীমিত করার পদক্ষেপ নিল সরকার। শরণার্থী শিবির এলাকায় বিকাল ৫টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত ১৩ ঘণ্টা থ্রি জি, ফোর জি সেবা বন্ধ করার জন্য মোবাইল ফোন অপারেটরদের নির্দেশনা দিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।

এই নির্দেশনার ফলে ওই সময়ে ওই এলাকায় টু জি সেবা চালু থাকায় ভয়েস কল করা গেলেও ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাবে না। তবে ভোর ৬টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সব ধরনের মোবাইল সেবা পাবেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। শরণার্থী শিবিরগুলো টেকনাফ ও উখিয়ায় হওয়ায় কক্সবাজারের এই দুই উপজেলার বাসিন্দাদের জন্যও টেলিযোগাযোগ সেবা সীমিত হল। সেখানে শরণার্থী শিবিরগুলোতে এখন ১১ লাখের বেশি মিয়ানমারের নাগরিক শরণার্থী হিসেবে রয়েছে। যা সেখানে বসবাসরত বাংলাদেশির সংখ্যা তার এক-তৃতীয়াংশ বলে সরকারি কর্মকর্তারা বলে আসছেন।

রোহিঙ্গারা যাতে মোবাইল ফোনের সুবিধা না পায়, তা সাত দিনের মধ্যে নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের সব মোবাইল অপারেটরকে জরুরি নির্দেশনা দেওয়ার একদিন পরই টেলিযোগাযোগ সেবা সীমিত করার নির্দেশনা দেওয়া হল। বিটিআরসি চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, আজ (মঙ্গলবার) এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা অপারেটরদের পাঠানো হয়েছে এবং তারা তা কার্যকর করছে।

এই সিদ্ধান্তের ফলে ওই এলাকার বাসিন্দাদের সমস্যার বিষয়টি তুলে ধরা হলে তা এড়িয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওই এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্কের বিষয়ে এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে। আগের দিন পাঠানো নির্দেশনায় রোহিঙ্গারা যাতে মোবাইল ফোনের সুবিধা না পায়, তা সাত দিনের মধ্যে নিশ্চিত করতে সব মোবাইল অপারেটরকে বলা হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে মোবাইল ফোন অপারেটরদের কর্মকর্তারা বলেন, তারা জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভাণ্ডারের সঙ্গে বায়োমেট্রিক নিশ্চিতকরণের পরেই কেবল মোবাইল সিম সক্রিয় করে থাকেন। জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভাণ্ডারে কোনো রোহিঙ্গা নিবন্ধিত হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে তাদের করার কিছু নেই।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, দেশের মানুষের কাছে থেকে সিম নিয়েই রোহিঙ্গারা মোবাইল ব্যবহার করছে। কীভাবে এ সিমগুলো তাদের হাতে গেল, এ বিষয়টি অপারেটররা দেখছে।

বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের অনিবন্ধিত সিম বিক্রি বেআইনি। আর মোবাইল সিম নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজন হয় জাতীয় পরিচয়পত্র। নির্বাচন কমিশনে সংরক্ষিত জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভাণ্ডারের সঙ্গে আঙ্গুলের ছাপ মেলানোর পর বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের কাজ শেষ হয়।

এ নিয়ম অনুসরণ করা হলে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের বৈধভাবে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুযোগ পাওয়ার কথা নয়। কিন্তু কঙবাজারের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকা সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গার একটি বড় অংশের হাতে মোবাইল ফোন রয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে বিভিন্ন সময়ে।

এসব অবৈধ মোবাইল সিম চাঁদাবাজি, মাদক চোরাচালানসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা। শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয়পত্র এমনকি পাসপোর্টও করিয়েছেন বলে ইতোমধ্যে বেরিয়ে এসেছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button