খুলনা বিভাগসারাদেশ

মণিরামপুর শিক্ষকের গ্রামীণ ষাঁড় দাম হাকিয়েছেন ১০ লাখ টাকা

যশোর ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি: যশোর মণিরামপুর উপজেলার কাশিপুর গ্রামের শিক্ষক আকরাম হােসেনের নিজ বাড়িতে পারিবারিক খামারে পালিত ষাঁড় ‘ টি আসন্ন কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে বিক্রির জন্য দাম হাকিয়েছেন ১০ লাখ টাকা।

প্রায় ১ টন ওজনের এ গরুটি তার খামারের গাভীর দেওয়া বাচুর বলে দাবি করে বলেন , মাত্র তিন বছর ধরে তিনি তার নিজ খামারে এটি লালন পালন করছেন । ঢাকার এক ক্রেতা ৭ লাখ টাকা দাম হাকালেও তিনি এটি ১০ লাখ টাকায় বিক্রি করার আশা করছেন।

তিনি এবং স্থানীয়রা দাবি করেন , তাদের গ্রাম ও আশপাশে এতাে বড় গরু এর আগে কখনও দেখেননি । খামারি আকরাম হােসেন উপজেলার কাশিপুর গ্রামের সরদার পাড়ার এরশাদ আলীর পুত্র । তিনি স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক । শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি নিজ বাড়ীতে নিজস্ব অর্থায়নে নাজিবুল দুগ্ধ খামার নামে একটি ডেইরি খামার গড়ে তুলেছেন । এই খামারে বর্তমানে গ্রামীণ ষাঁড় নামের একটি ফ্রিজিয়ান জাতের এঁড়ে গরু , তিনটি দুধের গাভী ও দুইটি বাচুর রয়েছে।

দুইটি ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী থেকে প্রতিদিন ৩০ কেজি দুধ আহরন করে ৩০ টাকা হারে প্রতি লিটার দুধ বিক্রি করে বেশ লাভের মুখ দেখছেন । পাশাপাশি গ্রামীণ ষাঁড় ‘ নামের এঁড়ে গরুটি তিনি পালন করে মােটা অংকের টাকা বিক্রির স্বপ্ন দেখছেন। খামারের গরুর খাবার জোগান দিতে তিনি দেড় বিঘা জমিতে ঘাস ও লাগিয়েছেন।

নিন্মবিত্ত পরিবারে জন্ম নেওয়া আকরাম হােসেন স্বল্প বেতনে একটি মাদরাসায় চাকুরি করেন । তাই সংসারের স্বচ্ছলতার মুখ দেখতে তিনি তিল তিল করে অর্থ জোগাড় করে গড়ে তুলেছেন নিজ বাড়ীর আঙিনায় ডেইরি ফার্ম । প্রতিনিয়িত তার ধ্যান জ্ঞান এই ফার্মকে ঘিরে । আনুমানিক ১০ ফুট প্রস্থ ও ১৫ ফুট দৈর্ঘ্যরে একটি পৃথক ঘরের খামারে রাখা হয়েছে বিশাল আকৃতির ষাঁড়টিকে । বিশাল দেহের এই গরুটির দৈর্ঘ্য ও উচ্চতায় ঘরটি প্রায় পূর্ণ হতে চলেছে।সরেজমিন অনুমান সাপেক্ষে গরুটি ১২ ফুট দৈর্ঘ্য ও সাড়ে ৬ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট হবে।কি কি খাবার খাওয়ানাে জানতে চাইলে তিনি জানান , প্রতিদিন খৈল , গম ও ছাৈর ভুসি , কুড়া সবমিলে ৩০ কেজি মত , কাঁচা ঘাস ও খড় – বিচালী ৪০ কেজিসহ প্রতিদিন প্রায় ৫’শ টাকার খাবার এখন ষাঁড়টিকে খাওয়ানাে হচ্ছে।
ষাঁড়টির ওজন কত হবে জানতে চাইলে ,
খামারী আকরাম জানান , উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা সরেজমিন এসে মেজারমেন্ট করে এটি একটনের বেশী ওজন হবে বলে জানিয়েছেন।কত দামে এটি বিক্রি করা হবে জানতে চাইলে তিনি জানান , মহামারী করােনার কারণে এবার দামটা একটু কম । ঢাকার এক ক্রেতা
৭ লাখ টাকা দাম দিতে চেয়েছেন।

তিনি ১০ লাখ টাকা হলে বিক্রি করবেন বলে জানান। এবারের কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে আকরামের গ্রামীণ ষাঁড়টি স্থানীয়ভাবে বেশ সাড়া ফেলেছেন বলে স্থানীয়দের মন্তব্য থেকে জানা গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা রওশন আলী,লুতফর রহমান , আব্দুল গফুর বলেন , এতাে বড় গরু এর আগে তাদের এলকায় দ্বিতীয়টি তারা দেখেন নাই। মাত্র তিন বছর বয়সে এতাে বড় হয়েছে , আরও বছর খানেক রাখতে পারলে গরুটির ওজন ৫০ মন ছাড়িয়ে যাবে বলে তারা মন্তব্য করেন।

প্রতিদিন শত শত উৎসুক দর্শক গরুটি দেখতে আসছেন বলে এলাকাবাসী জানান এ বিষয়ে মুঠোফোনে কথা হয় উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ড . আবুজার সিদ্দিকীর সাথে জানতে চাইলে তিনি বলেন , শিক্ষক আকরামের বাড়ীর ডেইরি খামারে অতিসম্প্রতি তিনি পরিদর্শনে এসেছিলেন। বাড়ীর গাভীর বাচুর তিন বছর প্রতিপালন করে শিক্ষক আকরাম হােসেন যে গরুটি তার খামারে মােটাতাজা করেছেন তা সত্যিই কল্পনাতীত।

এটির ওজন প্রায় এক টনের বেশী হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি আরও বলেন , উপজেলার হুরেরগাতী গ্রামের আসমত আলীর খামারের বড় গরুটি তিনি দেখেছেন। সেটির ওজন ৩২ মন হবে বলে তিনি মন্তব্য করে বলেন ,সেই হিসেবে শিক্ষক আকরামের গরুটি উপজেলার মধ্যে দ্বিতীয় বড় গরু হবে তাতে সন্দেহ নাই।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button