ময়মনসিংহ বিভাগসারাদেশ

শেরপুরের শ্রীবরদীর নির্যাতিত গৃহকর্মী শিশু সাদিয়ার অবশেষে মৃত্যু

শেরপুর জেলা প্রতিনিধি: শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলা সদরের চাঞ্চল্যকর নির্যাতিত গৃহকর্মী শিশু সাদিয়া আকতার ফেলি (১০) অবশেষে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ২৩ অক্টোবর বিকেলে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে বলে জানাগেছে। এ ব্যাপারে শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বন্দে আলী মুঠো ফোনে জানান, আমরা এখনও মৃত্যুর কোন কাগজ পায়নি তবে শুনেছি সে মারা গেছে।
শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন খোকার ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব শাকিলের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতো মুন্সিপাড়া মহল্লার কৃষক সাইফুল ইসলামের মেয়ে ১০ বছরের শিশু সাদিয়া উরফে ফেলি। তাকে শাকিলের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার ঝুমুরসহ অন্যরা নির্মম নির্যাতন করে আসছিল। তার শরীরের এমন জায়গা নেই যেখানে ক্ষত চিহ্ন ছিলনা। মেয়েটি ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়লেও প্রভাবশালী ওই পরিবারের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস কারোর না থাকায় কোথাও অভিযোগ করা হয়নি। কিন্তু এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে গোপনে ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে ৯৯৯ নাম্বারে পুলিশকে জানালে পুলিশ শ্রীবরদীর শহরের খামারিয়াপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে ওইদিন রাতেই অসুস্থ মেয়েটিকে উদ্ধার করে। পরে তাকে প্রথমে শ্রীবরদী হাসপাতাল ও পরে শেরপুর জেলা হাসপাতাল এবং সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। গ্রেফতার করা হয় শাকিলের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার ঝুমুরকে। বর্তমানে সে শেরপুর জেলা কারাগারে আছে।
ওই সময়ই শেরপুর জেলা হাসপাতালের আরএমও ডা: খায়রুল কবীর সুমন মেয়েটিকে নিয়ে সঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, মেয়েটির যৌনাঙ্গসহ সব স্থানেই আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এবং তার পেট ফুলে গেছে। তাই তাকে ২৬ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৭দিন পর সাদিয়ার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় পুলিশ গৃহিনী ঝুমুর গ্রেফতার করলেও গৃহকর্তা আহসান হাবিব শাকিল রয়েছে ধরাছোয়ার বাইরে। ইমিধ্যেই তাকে গ্রেফতারের জন্য মানবাধিকার সংগঠন আমাদের আইন মানবন্ধনসহ বিভিন্ন মহলের পক্ষ থেকে দাবী জানানো হয়েছে।
শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহুল আমীন তালুকদার জানান, সাদিয়ার মৃত্যু হয়েছে। তার মরদেহ ময়মনসিংহ কুতুয়ালি থানার পুলিশ সুরতহাল রিপোর্ট করবে এবং ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্ত করা হবে। তিনি আরো বলেন এ রিপোর্ট পাওয়ার পর শিুশ নির্যাতনের সাথে হত্যা মামলার ধারা যোগ হবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button