রাজশাহী বিভাগসারাদেশ

সংস্কারের নামে চরম অব্যবস্থাপনা বদলগাছী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, ভোগান্তির শিকার রোগীরা

বদলগাছী(নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সংস্কারের নামে চলছে চরম অব্যবস্থাপনা। ফলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীরা। সম্প্রতি হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেন করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় নওগাঁ জেলার দায়িত্বে থাকা ভূমি সংস্কার বোর্ডের সচিব মো. ইয়াকুব আলী পাটোয়ারী।
নওগাঁ জেলা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা যায়, বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন সংস্কারের নামে ৭৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট বদলগাছী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুরো হাসপাতাল সংস্কারের নামে ময়লার ভাগার করে রেখেছে ঠিকাদারের লোকজন। প্রত্যেক ওয়ার্ড, বাড়ান্দা, টয়লেট, সিড়িসহ যত্রতত্র ময়লার স্তুপ করে রেখেছে। বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ১৪ দিন থেকে প্যাথলজি রুমে চলছে রং ও সংস্কারের কাজ। তিন মাসেরও অধিক সময় থেকে বন্ধ রয়েছে ইসিজি, এক্সরে ও আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের কয়েকজন ডাক্তার জানান, সংস্কারের নামে পুরো হাসপাতালটা ময়লার ভাগারে পরিণত হয়েছে। প্যাথলজিক্যাল টেস্টগুলো কয়েকদিন যাবৎ হাসপাতাল থেকে করানো যাচ্ছে না। দীর্ঘদিন থেকে ইসিজি, এক্সরে ও আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিন বন্ধ রয়েছে। নরমাল টেস্টগুলো বাহিরে থেকে করানো গেলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগীদের জেলা সদরে যেতে হচ্ছে।
পাহাড়পুর ইউপির আব্দুল করিম বলেন, ডাক্তার আমাকে ইউরিন টেস্ট করতে দিয়েছে। কিন্তু প্যাথলজি রুমে বৈদ্যুতিক সংযোগ না থাকায় বাহিরে থেকে টেস্ট করাতে হয়েছে।
আসাদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি বুকের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে আসেন। ডাক্তার ইসিজি করাতে বলেন। ইসিজি রুমে গিয়ে দেখেন রুম তালাবদ্ধ। দরজায় লেখা রয়েছে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ইসিজি মেশিন বন্ধ রয়েছে। বাধ্য হয়ে তিনি নওগাঁ সদরে চলে যান।
সংস্কার কাজের ঠিকাদার রওশন কামাল আরিফ বলেন, কাজ করতে গেলে একটু ময়লা তো হবেই। কাজ শেষ করার পর মেশিন মেশিনগুলো ঠিকঠাক করার কাজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। কিন্তু তারা তাদের কাজ না করলে আমার কিছু করার নেই।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর নওগাঁর প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, সংস্কার কাজ করতে গেলে সামান্য ময়লা হবেই। কিন্তু রোগীর সেবা ব্যাহত করে বা বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না করে সংস্কার করছেন কেন এমন প্রশ্নের তিনি কোনো উত্তর দেননি।
বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কানিজ ফারহানা বলেন, সংস্কার কাজের কারণে কিছুটা ময়লা হচ্ছে। আমি প্রকৌশলী এবং ঠিকাদারকে বলেছি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে খেয়াল রেখে কাজ করতে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button