রংপুর বিভাগসারাদেশ

সৈয়দপুরে পাকা সড়কে জলাবদ্ধতায় চরমভোগান্তি

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি: প্রথম শ্রেণির পৌরসভা নীলফামারীর সৈয়দপুরের নাগরিকদের জলাবদ্ধতা কোন কিছুতেই যেন পিছু ছাড়ছে না। পাকা করা হলেও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ন সড়কে সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা ও ড্রেনের নোংরা কাঁদা জমে থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে যাতায়াতকারীদের। পৌর এলাকার রেলওয়ে জায়গা দখল করে পানি নিষ্কাশন পথ বন্ধ করা এবং অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার কারণেই জলাদ্ধতার সৃষ্টি বলে অভিমত সংশ্লিষ্ট এলাকার অধিকাংশ লোকজনের। এছাড়া অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন এভাবে জলাবদ্ধতাতে যদি কস্ট করতেই হয় তাহলে কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে ড্রেন নির্মাণ করার কোন মানেই ছিল না।
বিভিন্ন এলাকার লোকজনের সাথে কথা বললে তারা তাদের ভোগান্তির কথা ব্যক্ত করেন। শহরের গুরুত্বপূর্ন শহীদ ডা: জিকরুল হক সড়কটি মাত্র প্রায় দুই বছর আগেই সংস্কার করা হয় এবং একই সময়ে পানি নিস্কাশনের জন্য সড়কের উভয় পাশে ড্রেন নির্মাণ করা হয়। তারপরেও মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয়ের সামনে থেকে উত্তর দিকে প্রায় দেড়শ মিটার জুড়ে সড়কে সামান্য বৃষ্টিতেই হাটু পানি জমে থাকে। ৫নং ওয়ার্ড শহরের পুরাতন মুন্সিপাড়ার কিছুক্ষণ মোড় হতে জোড়া পুকুর পর্যন্ত সড়কটিতে রয়েছে মহিলা কলেজ, রামকৃষ্ণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মসজিদ ও একটি ঈদগাহ। সামান্য বৃষ্টিতেই গুরুত্বপূর্ন ওই সড়কটিতেও কাঁদাপানি জমে থাকে। এলাকার ইয়াকুব নামের বয়োঃজেষ্ঠ একজন বলেন, দীর্ঘদিন থেকে এ পরিস্থিতির সাথেই বসবাস করতে হচ্ছে তাদেরকে। ভেবেছিলাম ড্রেন নির্মাণ হয়েছে এবার বুঝি কষ্টটা লাঘব হবে কিন্তু তাতে গুড়ে বালি হয়েছে। তিনি আরও জানান, মহিলা কলেজের সামনে থেকে খেঁজুরবাগ মসজিদ পর্যন্ত সামান্য বৃষ্টিপাতেই হাটু পরিমান ড্রেনের নোংরা কাঁদা পানি জমে থাকে। কাঁদা পানি মাড়িয়েই এ পথে যাতায়াত করতে হয় সড়ক সংলগ্ন মসজিদের মুসল্লি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীদের। একই এলাকার জাহিদ নামের এক যুবক বলেন, খেজুরবাগ মসজিদ থেকে সোজা পুকুর ঘেষা রেলওয়ে কোয়ার্টারে প্রবেশের সড়কটি পুকুরের পানি উপচে সড়ক আর পুকুর আলাদা করা মুশকিল হয়ে পড়ে। তিনি আরও বলেন, বর্ষাকালে ভোগান্তির পরিমান বেড়ে যায় আরও কয়েকগুন বেশি। এলাকার কাউন্সিলরকে জানানোর পরও জলাবদ্ধতা নিরসনে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি আজ অবধি। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক আরেক যুবক বলেন, পানি নিষ্কাশনের যে পরিমাণ জায়গা দরকার তাও অনেকে দখল করে দোকান পাট কিংবা ঘর-বাড়ি বানিয়ে ব্যবহার করছেন। শহরের আরেক গুরুত্বপূর্ণ শেরে বাংলা সড়কের চৌধুরী টাওয়ার থেকে শিল্প সাহিত্য সংসদ শপিং কমপ্লেক্স পর্যন্ত সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার কারণে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ওই সড়কের দুই পাশের ব্যবসায়ীরা জানান প্রতি বর্ষায় এখানে জলাবদ্ধতার কারণে দূর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে অনেককেই। সড়কের কাঁদা পানি ছিটকে পড়ে দু’পাশের দোকানগুলোতে। ১৩নং ওয়ার্ড বাঁশবাড়ী এলাকার নাদিম নামের একজন জানান, ওই এলাকার সাদরা লেনের সড়কটি জলাবদ্ধতার জন্য বর্ষার প্রয়োজন পড়ে না। সেখানে ড্রেনের পানি উপচে সারা বছরই জলাবদ্ধা লেগে থাকে। জলাবদ্ধার এমন চিত্র ১৫টি ওয়ার্ডেই কম বেশি লক্ষ করা গেছে।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি সৈয়দপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহুল আলম মাষ্টার বলেন, প্রথম শ্রেনির মর্যাদা প্রাপ্ত সৈয়দপুর পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর এমন বেহাল দশার কারণে ব্যাহত হচ্ছে জনজীবন ও ব্যবসা বাণিজ্য। বর্তমানে যা অবস্থা তাতে জলাবদ্ধতা নিরসনে জরুরীভাবে পদক্ষেপ নেয়ার দাবী জানান তিনি।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button