রংপুর বিভাগসারাদেশ

সৈয়দপুরে স্থায়ীভাবে বাজার স্থানান্তরের প্রতিবাদে কাফনের কাপড়ে পৌরসভা ঘেরাও আড়তদারদের একাংশের

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভা কতৃক পাইকারী সবজি বাজার স্থায়ীভাবে স্থানান্তরের নোটিশ জারির প্রতিবাদে কাফনের কাপড় জড়িয়ে পৌরসভা কার্যালয় ঘেড়াও কর্মসূচি পালন করেছে আড়তদারদের একটি অংশ।
গতকাল সকাল ১০ টায় তারা মিছিল নিয়ে শহর প্রদক্ষিন শেষে ওই কর্মসূচি পালন করে। প্রায় এক ঘন্টা অবস্থান শেষে পৌর মেয়র আমজাদ হোসেন সরকারের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে ব্যবসায়ীরা কর্মসূচি স্থগিত করে সেখান থেকে চলে যায়। এদিকে অন্য একটি অংশ স্থানান্তরিত মিস্ত্রিপাড়ার বাইপাসেই ব্যবসা করার কথা বলছেন। ফলে পাইকারী বাজারকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীরা এখন প্রকাশ্যে দুটি গ্রুপে বিভক্ত। তবে দুই জায়গাতেই বাজার পরিচালনার দাবি সাধারন মানুষের।
জানা যায়, করোনা পরিস্থিতে লকডাউন চলাকালীন সময়ে সংক্রমন রোধে প্রশাসনের উদ্যোগে নয়াবাজারের পাইকারী সবজি বাজার বাইপাসের পাশে মিস্ত্রিপাড়ায় , আধুনিক খুচরা পৌর সবজি বাজার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে, শহীদ ডা: জহুরুল হক রোডের মাংস এবং মাছ বাজার বিমানবন্দর সড়কের ফাইভ স্টার মাঠে স্থানান্তরিত হয়। শর্ত দেয়া হয় যে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই আবার পূর্বের জায়গায় বাজারগুলো ফিরিয়ে নেওয়া হবে। পরে লকডাউন শিথিল করা হলে অন্য দুটি বাজার পূর্বের জায়গায় ফিরিয়ে নেওয়া হলেও পাইকারী বাজার ফিরিয়ে নেওয়া হয়নি। পাইকারী বাজার পূর্বের জায়গায় ফিরিয়ে না নিয়ে স্থায়ীভাবে সেখানে ব্যবসায়ীদের বেচাবিক্রির কথা বলা হয়েছে প্রশাসনের পক্ষে। কিন্তু ব্যবসায়ীদের একটি অংশ বাইপাসে ব্যবসা করার কথা বললেও সিংহভাগ ব্যবসায়ী শহর থেকে বেশি দুরুত্বসহ নানা অসুনিধার কথা জানিয়ে স্থানীয় নারী সাংসদ রাবেয়া আলিম সহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন জানান। কিন্তু এরই মধ্যে গতকাল পৌরমেয়র স্বাক্ষরিত একটি নোটিশে জানানো হয় মিস্ত্রিপাড়ার বাইপাসের পাশে গড়ে ওঠা পাইকারী বাজারেই স্থায়ীভাবে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করতে হবে। এর ফলেব্যবসায়ীদের ওই অংশটি কাফনের কাপড় পরিহিত কর্মসূচী পালন করে। পাইকারী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারন সম্পাদক আড়তদার গোল্ডেন বলেন, অন্যান্য বাজার পূর্বের জায়গায় ফিরিয়ে আনা হলেও আমাদেরকে বাইপাসের পাশে গড়ে ওঠা ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গায় ব্যবসা করতে বাধ্য করা হচ্ছে। ওই ব্যবসায়ী সংগঠনের সভাপতি আবু তালেব বলেন,শহর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দুরে অবস্থিত ওই বাজারে কৃষকরা নিরাপত্তাহীনতায় তাদের মালামাল নিয়ে যেতে চায় না। কেননা কৃষকদের গভীর রাতেই তাদের সবজি নিয়ে বাজারে আসতে হয়। সেখানে হোটেলসহ নেই অন্য কোন ব্যবস্থাপনা। খুচরা বিক্রতাদেরও পরিবহন খরচ দিতে হচ্ছে আগের চেয়ে দ্বিগুন।
এদিকে অন্য অংশের আড়তদারদের মধ্যে তোফায়েল,সুজন, সনু, নুরুসহ অনেকেই বলেন, শহরের যানযট ও কোলাহল থেকে সামান্য দুরে বাইপাসে ব্যবসা করার মত সকল ধরনের সুযোগ সুবিধাই রয়েছে। আগের চেয়ে এই জায়গায় ক্রেতার সংখ্যাও বেড়েছে। তবে সাধারন ক্রেতাদের অধিকাংশ প্রশাসনকে ব্যবসায়ীদের দুই জায়গাতেই যার যেখানে সুবিধা সেখানে তাদের ব্যবসা করার সুযোগ দেয়ার অভিমত ব্যক্ত করেন। সাবেক শিক্ষক হানিফ উদ্দীন বলেন, যেহেতু জনসংখ্যা আগের চেয়ে অনেকগুন বেড়েছে তাই প্রশাসনকে দুই জায়গাতেই ব্যবসা করার অনুমতি দেয়া উচিত। পৌর মেয়র আমজাদ হোসেন সরকার বলেন, জনস্বার্থবিরোধী কোন সিদ্ধান্ত পৌর কতৃপক্ষ নিবে না। আড়তদারদের দেয়া লিখিত স্বারকলিপি গ্রহণ করে তাদের দাবিগুলো বিবেচনার আশ্বাস দিলে ব্যবসায়ীরা তাদের কর্মসূচী গুটিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button