জাতীয়ধর্মরাজনীতিলিড নিউজ

নামাজি ও দাড়ি রাখা লোক আমি পছন্দ করি: প্রধানমন্ত্রী

কণিকা ডেস্ক :

যারা নিয়মিত নামাজ পড়েন এবং দাড়ি রাখেন তাদের পছন্দ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঈমানদার এসব লোককে বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পৃক্ত না করতে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী সোমবার তার কার্যালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের বিদায় উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় গতকাল। বৈঠকের শুরুতে মোহাম্মদ শফিউল আলম এবং আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হকের প্রতি বিদায়ী শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রিসভার বৈঠকে অংশগ্রহণকারী একাধিক সিনিয়র সদস্য এ তথ্য জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা নামাজ পড়েন ও দাড়ি রাখেন, তাদের আমি পছন্দ করি। অথচ এক শ্রেণির মানুষ নিজেদের স্বার্থেই এ ধরনের কর্মকর্তাদের বিএনপি-জামায়াতের লোক হিসেবে চিহ্নিত করে বসেন।

শফিউল আলমকে বিদায়ী শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী তার কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন। বলেন, শফিউল আলমের নিয়োগের সময় প্রশাসনের একদল কর্মকর্তা বিরোধিতা করেছিলেন। কেউ কেউ তাকে জামায়াতের অনুসারী কর্মকর্তা হিসেবে চিহ্নিত করে আমার কাছে অভিযোগ করেছিলেন। তিনি যে (শফিউল আলম) জামায়াত অনুসারী এর প্রমাণ চাইলে অভিযোগকারী কর্মকর্তারা জানালেন তিনি (শফিউল) নিয়মিত নামাজ পড়েন, তার দাড়ি রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, দাড়ি রাখা, নামাজ পড়া কি কোনো অপরাধ? একজন দাড়ি রেখেছেন আর নিয়মিত নামাজ পড়েন। এ কারণেই তিনি জামায়াতের অনুসারী হয়ে যাবেন? অথচ পরে তার ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা গেল শফিউল আলমের পরিবার মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী একটি পরিবার। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার আপন বড় ভাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি শহীদ হন। একজন শহীদের ভাইকে আমার সামনে জামায়াত হিসেবে উপস্থাপন করা হলো।

প্রশাসনের বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, কোনো কর্মকর্তার নিয়োগ বা পদোন্নতি ঠেকাতে প্রথমেই বলে ওই কর্মকর্তা বিএনপি। আরো পরে বলে সে তো জামায়াত। একজন কর্মকর্তার রাজনৈতিক বিশ্বাস যেকোনো দলের প্রতি থাকতেই পারে, তা দোষের নয়। সবাই একই আদর্শে বিশ্বাসী হবেন, এটা তো কাম্য হতে পারে না।

বিদায়ী মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে মোহাম্মদ শফিউল আলমের কর্মদক্ষতার বিবরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রশাসনের সবপর্যায়ের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে শফিউল আলম অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। তিনি মেধাবী, সৎ, দক্ষ এবং একজন সফল কর্মকর্তা। তিনি কখনই কাজ ফেলে রাখেননি। দিনের কাজ দিনেই তিনি শেষ করে সবার জন্য একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর (এপিএ) তারই (শফিউল আলম) উদ্ভাবন। তিনি অনেক ভালো ভালো কার্যক্রমের উদ্যোক্তা।

সোমবার ছিল শফিউল আলমের শেষ কার্যদিবস। গতকাল রাতেই তিনি নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। আগামী ১ নভেম্বর তিনি ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্ব ব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক হিসেবে যোগ দেবেন।

বিদায় নেয়ার আগে মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, আমি আমার দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীসহ সবারই সহযোগিতা পেয়েছি। তার পরও ভুলত্রুটি হয়ে থাকলে সবার কাছেই ক্ষমা চাই। আমি চেষ্টা করেছি দিনের কাজ দিনেই শেষ করতে। এটা আমি করতে পেরেছি। এটাই আমার সফলতা বলে আমি মনে করি। প্রশাসনের সব কর্মকর্তারই উচিত দিনের কাজ দিনেই শেষ করে দেওয়া। এতে জনগণ উপকৃত হবে। দ্রুত সেবা পাওয়া দেশের মানুষের অধিকার। আর আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্যই হচ্ছে এ সেবা দেয়া।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button