রংপুর বিভাগসারাদেশ

কুড়িগ্রামে কেটে ফেলা ধান গাছের গোড়া থেকে পুনরায় ধান উৎপাদন :কৃষক উচ্ছ্বসিত

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি।।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট ও ভূরুঙ্গামারীসহ ৯ উপজেলায় বোরো ধান কাটার পর পর জমিতে ফেলে রাখা ধানের কাটা গোড়া থেকে পরিচর্যায় ফের ধান উৎপাদন করা হয়েছে। এতে কৃষকরা অত্যন্ত আনন্দে উল্লসিত। এবার পরীক্ষামূলকভাবে এভাবে  বিঘায় অনেকেই প্রায় ৬ থেকে ৮ মন ধান পেয়েছেন। স্বল্প খরচে ফেলে রাখা মাঠে শুধু ধান নয়, খড়ও পেয়ে গবাদি পশুর খাদ্য মেটাতে পারছেন তারা। জেলার রাজারহাটেই কৃষি বিভাগের পরামর্শে ২ শতাধিক কৃষক ৭৫ একর জমিতে ফেলে রাখা ধানের রেটুন বা মুড়ির গোছা থেকে আবার ধান পেয়েছেন।অপরদিকে,ভূরুঙ্গামারীসহ নাগেশ্বরী,উলিপুর,চিলমারী ও অন্য সকল উপজেলায় এ চাষ সাফল্য দেখিয়েছে। জেলা কৃষি বিভাগ জানায়,বোরো ধান কেটে ফেলার পর প্রায় দুই মাস জমি ফাঁকা পড়ে থাকে। এসময় কাটা ধানের মুড়ি কিংবা নাড়া খেয়ে ফেলে গরু ছাগলসহ গবাদি পশু। এই মুড়ির গোছা যত্ন করলে সেখান থেকে আবার ধান পাওয়া যায়। পরীক্ষামূলকভাবে সফল হয়েছেন কুড়িগ্রামের এসব কৃষক। একদিকে অনেক কৃষক আমন ধানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন সেখানে এসব কৃষক পরিত্যক্ত কাটা বোরো খেতের মুড়ি বা নাড়া বা ধানের রেটুন পরিচর্চা করে দ্বিতীয় দফা আবার ধান উৎপাদন করে চমক সৃষ্টি করেছেন।এসব কৃষক নতুনভাবে এ ফসল পেয়ে খুবই খুশি। সরেজমিনে জানা যায়,রাজারহাটের ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের মুসফৎ নাকেন্দা গ্রামে কৃষক অশ্বিন কুমার ও কৃষক সুব্রত কুমারের জমিতে রেটুন বা মুড়ি ধান থেকে পূণরায় প্রাপ্ত ধান ক্রপ কাটিং করা হয়। এতে বিঘায় ৬মন এবং একরে গড়ে ১৭মন ধান পান। অশ্বিন কুমার জানান, আমার প্রায় ১০ একর জমিতে মুড়ি থেকে আবার ধান উৎপাদন করেছি। এতে দেখা যাচ্ছে ব্রিধান-২৮ এর মুড়ি থেকে সবচেয়ে বেশি ধান পাওয়া গেছে। এছাড়াও এখানকার কৃষক ব্রিধান-৭৪, ব্রিধান-৮৮ ও ব্রিধান ৮৯ এর মুড়ি থেকে পূণরায় ধান উৎপাদনে সফলতা পেয়েছেন।অপরদিকে,ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বিভিন্ন এলকায় বেশ কয়েকজন কৃষক এভাবে বোরো ধান গাছের মুড়ি থেকে ফের ধান উৎপাদন করেছেন।ওই এলাকার কৃষক আজিজার রহমান বলেন,এক বিঘা জমিতে ৪মণ ফলন পেয়েছি। আমি এবং আমাদের এলাকার বেশ কয়েকজন কৃষক এতে খুশি। এ ব্যাপারে রাজারহাট উপজেলা কৃষি অফিসার সম্পা আকতার জানান,এ উপজেলাতেই ২৫ একর জমিতে রেটুন থেকে পূণরায় ধান উৎপাদন করা হয়েছে যা জেলায় সবোর্চ্চ।মুড়ি বা রেটুনে ৭ থেকে ১০দিনের মধ্যে বিঘা প্রতি ৭ কেজি ইউরিয়া, ৫ কেজি ডিএপি ও ৫ কেজি এমওপি প্রয়োগ করে ফলন পাওয়া যায়। এদিকে, কৃষি বিভাগের পরামর্শে পরীক্ষামূলকভাবে পূণরায় ধান উৎপাদন করতে পেরে খুশি জেলার বেশ কিছু কৃষক।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হক জানান,বোরো ধান কাটার পর ৬০ থেকে ৭০ দিন জমি পড়ে থাকে।এবার পরীক্ষামূলকভাবে জেলার ৯ উপজেলায় ৭৫একর জমিতে ব্রি-২৮,ব্রি-৮৯ ও হাইব্রিড জাতের ধান আবাদ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ফলন হয়েছে ব্রি-৮৯। ধানের মুড়ি থেকে পূনরায় কুশি বের হয়ে এ ধান গবেষণার জন্য গবেষকদেরও অনুরোধ করা হয়েছে।জেলার বেশ কিছু কৃষক সফলতা পেয়েছেন। আমরা কৃষিবিভাগ থেকে ভবিষ্যতে আরো কৃষককে সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নেব ।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button