ডাকসুর কোটি টাকা ব্যয়ে অস্বচ্ছতা
ডাকসু নির্বাচনের এক বছর পূর্ণ হয়েছে৷ এই সময়ে এক কোটি ১১ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে কোনো অনুমোদন ছাড়া৷ এমন অভিযোগ এনে ভিপি নূর বলছেন তিনি একটাকাও ব্যয়ের সুযোগ পাননি৷
২৮ বছর পর ২০১৯ সালের ১১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ-ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ মোট ২৫টি পদের মধ্যে জিএস এবং এজিএসসহ ২৩টি পদ পায় ছাত্রলীগ৷ আর ভিপি ও সমাজসেবা সম্পাদকের পদ পায় ছাত্র অধিকার পরিষদ, যারা কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিল৷ নির্বাচিতরা ২২ মার্চে দায়িত্ব নিলেও ভিপি নুরুল হক নূর গত এক বছরে কার্যত কোণঠাসা ছিলেন৷
তবে ডাকসুর ভিপি এবং এজিএসসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা মনে করেন ডাকসু সচল হওয়ার ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থানের পরিবেশ আগের চেয়ে ভালো হয়েছে৷ কথা বলার সুযোগ বেড়েছে, শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে সচেতনতাও বেড়েছে৷ কিন্তু আরো যা অর্জন সম্ভব ছিলো তা হয়নি সমন্বয়হীনতার কারণে৷ এজন্য নূরের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের অবস্থানকে দায়ী করা হচ্ছে৷
বরাদ্দের টাকা ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন
ডাকসুর জন্য বরাদ্দ এক কোটি ৮৯ লাখ টাকার মধ্যে এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে এক কোটি ১১ লাখ টাকার কিছু বেশি৷ এই টাকা বিভিন্ন সম্পাদক ও সদস্যরা নানা অনুষ্ঠান, প্রকাশনা ও উন্নয়ন খাতে ব্যয় করেছেন৷
ডাকসু ভিপি নূর অভিযোগ করেন, ‘‘এইসব অর্থ খরচে ডাকসুর কোনো অনুমোদন ছিলো না৷ ডাকসুর কোনো বৈঠকে এইসব ব্যয় বরাদ্দ অনুমোদন করা হয়নি৷ আমারও অনুমোদন নেয়া হয়নি৷ এই টাকা হয়তো ছাত্রদের জন্যই ব্যয় হয়েছে৷ কিন্তু এতে কোনো স্বচ্ছতা ছিলো না৷ কোনো নিয়ম নীতি মানা হয়নি৷ আর আমি ছাত্রদের জন্য ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ চেয়েও পাইনি৷’’
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ডাকসুর এজিএস এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন৷ তিনি বলেন, ‘‘ভিপি আসলে কোনো বরাদ্দ নিতে চাননি৷ ডাকসুর প্রধান নির্বাহী হিসেবে তারতো বরাদ্দ নেয়ার সুযোগ ছিলো৷ কিন্তু তিনি ছাত্রদের সার্বিক কল্যাণ না চেয়ে কারো সাইকেলের জন্য অথবা শিক্ষা সফরের জন্য টাকা চেয়েছেন৷ তিনি আসলে ছাত্র রাজনীতি করেননি৷ তিনি এখান থেকে জাতীয় রাজনীতির প্রতিষ্ঠা চেয়েছেন৷ দূতাবাস কেন্দ্রিক রাজনীতি করেছেন৷’’
অর্জন কী?
এই এক বছরে বড় অর্জন কী জানতে চাইলে নূর বলেন, ‘‘বিভিন্ন বিভাগে উন্নয়ন ফিসহ নানা ফির নামে অতিরিক্ত অর্থ নেয়া হতো সেগুলো আমরা কমিয়েছি৷ মেয়েদের আবাসিক হলে প্রবেশের সময় রাত ১০টা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে৷ লাইব্রেরিতে পড়ার সময়ও রাত ১০টা পর্যন্ত করা হয়েছে৷ হলে ও লাইব্রেরিতে নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ আর সার্বিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশের উন্নয়ন ঘটেছে৷ এখন সব ছাত্র সংগঠন সক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারছে৷’’